প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম বলেছেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের শুধুমাত্র মহান স্থপতি নন, একই সঙ্গে তিনি বাংলাদেশ নির্মাণের প্রকৌশলীও। তিনি বাংলাদেশকে গড়ে তোলার চেষ্টা করেছেন শৈল্পিক এবং বিজ্ঞানমনস্ক চিন্তা-ভাবনা দিয়ে।
বুধবার বিকালে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘বঙ্গবন্ধু স্মারক বক্তৃতামালা: বিজ্ঞান ও সমাজ ভাবনা’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। ইনস্টিটিউট অব রিমোট সেনসিং (আইআরএস-জেইউ)-এর আয়োজনে বিশ্ববিদ্যালয়ের জহির রায়হান মিলনায়তনের সেমিনার কক্ষে বঙ্গবন্ধু স্মারক বক্তৃতামালা অনুষ্ঠিত হয়।
প্রকৌশলী হিসেবে বঙ্গবন্ধুর বর্ণনা দিয়ে এইচ টি ইমাম বলেন, দালান নির্মাণ করতে গেলে শুধু ইট বালু দিয়ে হয়না, পরিকল্পনাও করতে হয়। বঙ্গবন্ধু তেমনই একজন ব্যক্তি ছিলেন যিনি নতুন দেশ গঠনের পাশাপাশি সেটিকে দ্রুত শক্ত অবস্থানে নিয়ে যেতে পেরেছেন। বঙ্গবন্ধু সম্মোহনী শক্তির মাধ্যমে দেশের সব শ্রেণীর মানুষকে সহজে আপন করে নিয়েছিলেন। তিনি সকল কাজ দ্রুত করতে পারতেন। স্বাধীনতার পর প্রয়োজন অনুযায়ী মন্ত্রণালয়, অধিদপ্তর, প্রতিষ্ঠান নির্মাণ করেছিলেন। পাশাপাশি সকল ষড়যন্ত্র প্রতিহত করতে পেরেছিলেন। সকলকে অভিভূত করে তাদের দিয়ে কাজ করিয়ে নিতে পেরেছিলেন।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ এক এবং অভিন্ন। বঙ্গবন্ধুর সবচেয়ে বড় অর্জন তিনি বাঙালি জাতির চেতনা এবং সত্তা জাগিয়ে তুলেছেন। জাতির পিতা হিসেবে বঙ্গবন্ধুর সকল আদর্শ আমাদের ধারণ করতে হবে। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে সকলকে একযোগে কাজ করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, বর্তমানে দেশে প্রবৃদ্ধির হার ৮.৫ শতাংশ। অন্যান্য দেশের সাথে পাল্লা দিয়ে আমাদেরও দ্রুত এগিয়ে যেতে হবে। সারাদেশ ১০০টি অর্থনৈতিক জোন তৈরি করা হবে এর বাইরে কোন শিল্প-কলকারখানা হবে না। ফলে কৃষি জমিও নষ্ট হবে না। বিজ্ঞানী ও গবেষকদের জন্য আলাদা অর্থ বরাদ্দ দেয়ার ফলে তারা কাজে আগ্রহী হচ্ছেন। বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার জন্য নিজস্ব ফান্ড তৈরি করেছি।
অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন এশিয়ান ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির (এআইটি, থাইল্যান্ড) বঙ্গবন্ধু চেয়ার প্রফেসর ড. জয়শ্রী রায়।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. ফারজানা ইসলাম সভাপতিত্বে বক্তৃতামালায় ড. জয়শ্রী রায় বলেন, বঙ্গবন্ধু কখনোই নিজেকে নিয়ে ভাবেননি, মানুষ, দেশ ও বিশ্বকে নিয়ে ভেবেছেন।
তিনি বিশ্ব আবহাওয়া ও জলবায়ূ পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলায় আঞ্চলিক সহযোগিতার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। ভবিষ্যতের সম্ভাবনাসমূহ নিয়ে ছাত্র-শিক্ষকদের গবেষণা করার আহ্বান জানান।
ইনস্টিটিউট অব রিমোট সেনসিং এর পরিচালক অধ্যাপক ড. শেখ তৌহিদুল ইসলামের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. নূরুল আলম, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক শেখ মো. মনজুরুল হক, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার রহিমা কানিজ প্রমুখ।