সম্প্রতি বিশ্বজিৎ দাস হত্যার রায়ের পরে সারাদেশে দেখা দিয়েছে তীব্র ক্ষোভ। রাজধানীর পুরান ঢাকায় নিহত দর্জি দোকানি বিশ্বজিৎ দাস হত্যা মামলায় বিচারিক আদালত ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন ছাত্রলীগের যে ৮ জন নেতাকর্মীকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিলেন তার মধ্যে ৬ জনকে রেহাই দিয়ে অন্য সাজা দিয়েছেন হাইকোর্ট। তবে দুই জনের মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখা হয়েছে।
এ বিষয়সহ ১৫ আগস্টের নৃশংস হত্যাকাণ্ড নিয়ে ফেসবুকে একটি পোস্ট দিয়েছেন শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্রনেতা ও তথ্যপ্রযুক্তিবিদ প্রশান্ত রায়।
যেখানে তিনি বলেছেন, বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার মাধ্যমে বিচারহীনতার কুখ্যাত ব্র্যান্ডিং এ বাংলাদেশে নাম লিখিয়েছে। আর এই ব্র্যান্ডের সর্বশেষ সংযোজন হিসেবে বিশ্বজিৎ হত্যার ঘটনাকে উল্লেখ করেছেন তিনি।
তিনি ফেসবুকে লিখেছেন, মানুষের মনে কোন কিছুর ইউনিক বা অনন্য নাম এবং পরিচিতি তৈরি করাকে ব্র্যান্ডিং বলা হয়। অর্থাৎ, মানুষের মনে যা চিরস্থায়ীভাবে গেঁথে যায়, তাই ব্রান্ডিং। আমরা সাধারনত প্রডাক্টের ক্ষেত্রেই ব্র্যান্ডিং শব্দটা ব্যবহার করে থাকি।
ব্র্যান্ডিং যে কোন কিছুর ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। অতি সুপরিচিত সবকিছুই ব্র্যান্ডিং। শেক্সপিয়র, তলস্তয়, জর্জ ওয়াশিংটন, লেলিন, সাদ্দাম এক একটা ব্র্যান্ড নাম। হালের ট্রাম্প ও একটা ব্র্যান্ড নাম। কারন তারা নিজ নিজ মতে ও কর্মে মহিমান্বিত।
এই যে ইয়ং জেনেরেশনের টি-শার্ট, ক্যাপ, পিঠে ঝুলানো ব্যাগে চে গুয়েভারার মুখখানা দেখছেন, সেটা কি শুধুই। না, এগুলো চে গুয়েভারার ব্র্যান্ডিং এর কল্যানেই বুকে-পিঠে ঝুলছে।
কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, ইউওসএ যে মানুষ জন যাওয়ার জন্য মুখিয়ে থাকে তা ওই দেশের নিজস্ব ব্র্যান্ডিং এর জন্যই।
জাপান তার ইলেকট্রনিক প্রডাক্টের জন্য ব্র্যান্ডিং খ্যাতি পায় আর চায়না খ্যাতি পায় স্বল্প মূল্যে প্রডাক্ট তৈরিতে। আবার ব্রাজিল, আর্জেন্টিনার ব্র্যান্ডিং ফুটবলে।
লেখকরা তাঁর নিজ নিজ লেখার মাধ্যমে নিজেই ব্রান্ডিং খ্যাতি অর্জন করেন আবার কখনো কখনো তাদের লেখার নির্দিষ্ট চরিত্রও পাঠক জনপ্রিয়তায় ব্র্যান্ডিং খ্যাতি লাভ করে।
ব্র্যান্ডিং পরিচিতি দু ক্ষেত্রেই হতে পারে। সুখ্যাত ও কুখ্যাত। প্রথম ব্র্যান্ডিংটা মানুষের মনে আস্থা যোগায়, আর দ্বিতীয়টা ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে।
বাংলাদেশ নামক সুখ্যাত ব্র্যান্ডিং অর্জন করে জন্মের শুরুতেই। বিশ্বময় এই সুখ্যাতির কারিগর ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধারা।
পরবর্তিতে বাংলাদেশ দ্বিতীয়বারের মতন বিশ্বময় কাঁপিয়ে তোলে ৭৫ এর ১৫ই আগস্টে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার মাধ্যমে। সেই থেকে শুরু হয় হত্যা, খুন ও বিচারহীনতার কুখ্যাত ব্র্যান্ডিং।
সেই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ নামক ব্র্যান্ডের সর্বশেষ প্রডাক্ট বিশ্বজিত।