ছকে বাঁধা দৈনন্দিন জীবন থেকে একটু স্বস্তি পেতে বঙ্গবন্ধু সেতু এলাকা ঘুরতে এসেছিলেন টাঙ্গাইল মেডিক্যাল অ্যাসিস্ট্যান্ট ট্রেনিং স্কুলের (ম্যাটস) শিক্ষার্থী মায়েন উদ্দিন হামেম আর সাদিয়া ইসলাম নদী। মানুষের জীবন বাাঁচানোই ছিল যে জীবনের লক্ষ্য, সেই জীবন কেড়ে নিলো বেপরোয়া গতির একটি বাস।
রোববার বিকালে বঙ্গবন্ধু সেতুপূর্ব গোলচত্বর পার হতে গিয়ে হয়ে ঘটনাস্থলেই নিহত হন এই দুই শিক্ষার্থী। তারা দু’জনই টাঙ্গাইল জেনারেল হাসাপাতালে ইন্টার্ন চিকিৎসক হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
নিহত মায়েন উদ্দিন হামেম নোয়াখালীর লক্ষ্মীপুরের মনোহরপুর গ্রামের মৃত মোসলেম উদ্দিনের ছেলে এবং সাদিয়া ইসলাম নদী গাজীপুরের কাপাসিয়ার তরগাঁও গ্রামের সাইদুর রহমানের মেয়ে।
বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে গোবিন্দগঞ্জ ট্রাভেলস নামের একটি বাস চাপায় ঘটনাস্থালেই নিহত হন তারা। পুলিশ বাসটি আটক করলেও চালক ও হেলপার পালিয়ে গেছে।
ওই ঘটনার একজন প্রত্যক্ষদর্শী হামিদুর সেই বাসেরই যাত্রী। তিনি বলেন, গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ থেকে ছেড়ে আসা গাড়িটি বঙ্গবন্ধু সেতু পার হওয়ার আগেই ব্রেকের সমস্যা দেখা দেয়। পথে একটি ওয়ার্কশপে তা ঠিক করে আবারও ঢাকার দিকে রওনা দেয়।
‘‘কিন্তু সেতু পার হওয়ার পরই হঠাৎ চালক অতিরিক্ত গতিতে চালাতে থাকে। সে সময় সেতুর পূর্ব গোলচত্বরে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে। নিহত হন দুই শিক্ষার্থী। ঘটনার পর চালক গাড়ি নিয়ে পালাতে থাকে। কিন্তু যাত্রীদের প্রতিবাদের মুখে কালিহাতীর কামাক্ষামোড় এলাকায় গাড়ি রেখে পালিয়ে যায়।’’
ঘটনার পর রাস্তায় ছড়িয়ে ছিল তাদের বই-খাতা-ব্যাগ। রক্তাক্ত প্রাণহীন শরীর দেখে শিউরে উঠে উপস্থিত মানুষ।
বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) জায়েদ আব্দুল্লাহ বিন সরোয়ার বলেন, উত্তরবঙ্গ থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী গোবিন্দগঞ্জ ট্রাভেলস (ঢাকা মেট্রো-ব-১১-৯৯৭৫) গাড়িটি দুই শিক্ষার্থীকে চাপা দেয়। এতে ঘটনা স্থলেই তারা নিহত হন।