চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

ফোরাত নদীর তীরের সেই শোকাবহ ঘটনা

কারবালার শোকাবহ ঘটনাবহুল পবিত্র আশুরা শুক্রবার। ত্যাগ ও শোকের প্রতীকের পাশাপাশি বিশেষ পবিত্র দিবস হিসেবে দিনটি পালন করা হয় মুসলিম বিশ্বে।

হিজরি ৬১ সনের ১০ মহররম এই দিনে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর দৌহিত্র হযরত ইমাম হোসেইন (রা.) এবং তার পরিবার ও অনুসারীরা সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে যুদ্ধ করতে গিয়ে ফোরাত নদীর তীরে কারবালা প্রান্তরে ইয়াজিদ বাহিনীর হাতে শহীদ হন। এ ঘটনা স্মরণ করে বিশ্ব মুসলিম যথাযোগ্য মর্যাদায় দিনটি পালন করে থাকে।

বাংলাদেশেও শুক্রবার যথাযোগ্য মর্যাদায় ও কর্মসূচিতে পবিত্র আশুরা পালিত হবে। পবিত্র আশুরা উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন। দিবসটি উপলক্ষে বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক শুক্রবার বিশেষ প্রবন্ধ, নিবন্ধ প্রকাশ করবে। বাংলাদেশ বেতার ও বাংলাদেশ টেলিভিশনসহ বিভিন্ন বেসরকারি রেডিও-টিভি চ্যানেলও এই দিনের তাৎপর্য নিয়ে বিশেষ অনুষ্ঠানমালা সম্প্রচার করবে।

পবিত্র এই দিন উপলক্ষে রাজধানীসহ সারাদেশে নানা ধরণের আয়োজন ও ইবাদতের মাধ্যমে দিনটি কাটাবেন ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা। তবে একটি বিষয় না বললেই নয়, এই দিনকে কেন্দ্র করে যেন কোনো ধরণের অতিরঞ্জিত কার্যকলাপ না হয়।

এর আগে এই দিবসে দেশে সন্ত্রাসী হামলায় প্রাণহানির ঘটনাও ঘটেছে, তারপর থেকে নানা ধরণের আশঙ্কাও বিরাজ করে প্রতিবছর। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সেজন্য প্রতিবছর সতর্ক পদক্ষেপ ও নানা ব্যবস্থা গ্রহণ করে থাকে, এবছরও তার ব্যতিক্রম হবে না।

ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া পবিত্র আশুরা উপলক্ষে তাজিয়া শোক মিছিলে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানিয়েছেন। রাজধানীর বড় কাটারা ইমামবাড়া, খোজা শিয়া ইসনুসারী ইমামবাড়া এবং বিবিকা রওজায় পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। প্রতিটি ইমামবাড়া সিসি ক্যামেরার আওতায় আনা হয়েছে। আর্চওয়ে ও মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে প্রত্যেক দর্শনার্থীর দেহ তল্লাশি করে অনুষ্ঠানস্থলে প্রবেশ করানো হবে। মিছিলে ব্যাগ, পোঁটলা, টিফিন ক্যারিয়ার বহন করা যাবে না। মাঝপথে কেউ মিছিলে অংশ নিতে পারবেন না। তাজিয়া মিছিলে ঢোল বাজিয়ে দা, ছুরি, তলোয়ার ও লাঠিখেলা নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যতই পদক্ষেপ নিক না কেনো, জনবহুল এই দেশে শঙ্কা রয়েই যায়। এক্ষেত্রে আশুরার বিভিন্ন পর্বে অংশ নেয়া প্রতিটি নাগরিক যদি আশেপাশে খেয়াল করে সতর্ক থাকেন, তাহলে যেকোনো পরিস্থিতি সামাল দেয়া সহজ হবে বলে আমাদের ধারণা।

ফোরাত নদীর তীরের সেই শোকাবহ ঘটনা সর্বোচ্চ ত্যাগের শিক্ষা আমাদের জীবনকে আলোকিত করুক, এই আমাদের প্রত্যাশা।