বাংলা চলচ্চিত্রের ইতিহাসে অন্যতম জনপ্রিয় একটি নাম প্রয়াত অভিনেতা সালমান শাহ। অভিনয় আর নিজস্ব স্টাইলে বাংলা ছবির জগতে নিজের স্বকীয়তা সৃষ্টি করেছিলেন তিনি। নব্বইয়ের দশক তাই বাংলা ছবির ইতিহাসে স্বর্ণযুগ হিসেবে ইতিহাসের খাতায় লেখা থাকবে। ১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর রহস্যজনকভাবে মৃত্যু হয় তার। তার না থাকার ২২ বছর কেটে গেলেও এদেশের হাজারও দর্শক ভোলেনি তাকে।
সালমান শাহ পৃথিবীতে না থাকলেও তার লাখও ভক্ত তাকে নানা ভাবে মনে গেঁথে রেখেছেন। এমনকি সালমান শাহকে তারা বাঁচিয়ে রেখেছেন সোশ্যাল নেটওয়ার্কেও!
তার নামে রয়েছে ফেসবুক পেজ, টুইটার, ইনস্টাগ্রাম, ইউটিউব চ্যানেল, গুগল প্লাস অ্যাকাউন্ট। সালমান শাহ বেঁচে না থাকলেও তার কিছু পাগলাটে ভক্ত এগুলো দেখাশুনা করেন! তাদেরই একজন চাঁদপুরের মাসুদ রানা নকীব। তিনি শৈশব থেকে সালমান শাহকে নিজের মধ্যে লালন করছেন। সোশ্যাল মিডিয়াতে সালমান শাহ’র নামে এসব অ্যাকাউন্ট দেখাশোনা করছেন তিনি।
৩৪ হাজারের বেশি ফলোয়ার্স সমৃদ্ধ সালমান শাহ’র নামে যে ফেসবুক পেজ রয়েছে সেটির অ্যাডমিন নকীব। চ্যানেল আই অনলাইনকে তিনি জানান, চার বছর আগেই এই পেজটি খুলেছিলেন। মাসুদ রানা নকীব বলেন, সাড়ে তিন বছর আগে টুইটার ওপেন করেছিলেন। এছাড়া ইনস্টাগ্রাম, গুগল প্লাস অ্যাকাউন্ট খুলেছেন মাস খানেক আগে।
তিনি বলেন, নিঃস্বার্থভাবে আমি এবং আরো ক’জন মিলে এগুলো দেখভাল করছি। সালমান শাহ’র মা নীলা চৌধুরী এবং ভাই শাহরান চৌধুরী সোশ্যাল মিডিয়াতে সালমান শাহের নামে এসব অ্যাকাউন্ট সম্পর্কে অবগত। শুধু তাই নয়, মহানায়ক সালমান নামে একটি ফেসবুক গ্রুপ আছে। সেখানে সদস্য আছেন ৪৬৮০০-এর বেশি।
এ গ্রুপে সালমান শাহের বিভিন্ন ছবি ও কর্মজীবন নিয়ে পোস্ট দেয়া হয়। ‘সালমান শাহ স্মৃতি সংসদ’ নামে একটি সংগঠন আছে। যেটি ১৯৯৬ সালে সালমান মারা যাওয়ার তিনদিন পরে তৈরি করেন মাসুদ রানা নকীব। আজও এ প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে কাজ করে যাচ্ছে সালমান স্মৃতি সংসদ।
তিনি বলেন, সালমান শাহকে নিয়ে তরুণ প্রজন্মের আগ্রহ ব্যাপক। ফেসবুক প্রোফাইলে সালমান শাহের ছবি দেখা যায়। অথচ এদের কেউই সিনেমাহলে গিয়ে সালমান শাহ্ অভিনীত সিনেমা দেখার সুযোগ পায়নি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার স্টাইলিশ ছবি, ভিউকার্ড ও ইউটিউবে তার অভিনীত সিনেমা দেখেই তারা সালমানের ভক্ত হয়েছেন। তাকে ঘিরে কৌতূহলীরাও তাহলে জানতে পারবে অনেক কিছু, দেখতেও পারবে। সেজন্য সোশ্যাল মিডিয়াতে তার নামে অ্যাকাউন্ট চালাই।
মাসুদ রানা নকীব বলেন, সারাদেশে সালমান শাহ’র অজস্ত্র ভক্ত আছেন, সবাইকে এক প্লাটফর্মে আনতে চাই। সবাই যেন সালমান শাহকে একসঙ্গে স্মরণ করতে পারে সেই লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি। তার মৃত্যুদিন, জন্মদিন এমনকি মৃত্যু রহস্য উন্মোচনের জন্য কাঁধ মিলিয়ে কাজ করতে চাই। তরুণ প্রজন্মের কাছে সালমানের সিনেমা, ভিউকার্ড, দুর্লভ ছবি ও নানা তথ্য তুলে ধরা এবং তার রেখে যাওয়া স্মৃতি অনলাইনে সংরক্ষণ করাই মূল উদ্দেশ্য।
নব্বই দশকে উল্কাপিণ্ডের মতো বাংলা সিনেমায় এসেছিলেন সালমাহ শাহ। মাত্র ৩ বছর ৫ মাসের ক্যারিয়ারে তিনি ২৭ টি সিনেমায় অভিনয় করে ‘সুপারস্টার’ বনে গিয়েছিলেন। এরপর তার অকাল মৃত্যু ঘটে।