সিরিয়া ও ইরাক থেকে লুটকরা পুরাকীর্তি বিক্রিতে ফেসবুক নেটওয়ার্কের সহায়তা নেয়া হয়েছে। তবে ফেসবুক এ ধরনের বেশকিছু গ্রুপ বন্ধ করে দেয়ার দাবি করলেও এখনও পাচারকারীরা ফেসবুকে সক্রিয় বলে জানিয়েছেন গবেষকরা।
বিবিসির অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে, আইএস এর পিছু হটা এবং পুলিশের তৎপরতার পরও সিরিয়া এবং ইরাক থেকে পুরাকীর্তি পাচার হচ্ছে তুরস্কে। এর প্রমানও পেয়েছে বিবিসি।
এছাড়া প্রাচীন সমাধিগুলো কিভাবে খনন করা যায়, সে বিষয়েও আলোচনা করেছে এ ধরনের গোপন গোষ্ঠীগুলো।
রোম সম্রাজ্যের মোজাইক শিল্প এখনও সিরিয়ার মাটিতে বিদ্যমান। প্রত্নতত্ত্ববিদ অধ্যাপক আমর আল-আজম বিবিসিকে এমন কিছু ফেসবুক পেজ দেখিয়েছেন যেখানে সিরিয়ার এসব শিল্পকর্ম বিক্রির প্রস্তাব করা হয়েছে।
ফেসবুকের একটি ছবি নির্দেশ করে আমর দেখিয়েছেন, নিজেকে সিরিয়ার নাগরিক দাবি করা এক ব্যক্তি তুরস্কের বসফরাস প্রণালীর পাশে অবস্থিত একটি রেস্তোরার ছাদে থাকা একটি ভাস্কর্যর ছবি দিয়েছেন। ছবির বর্ণনায় তিনি লিখেছেন, এটি সিরিয়ার প্রাচীন নগরী পালমিরা থেকে লুট করা এবং আইএস কর্তৃক ধ্বংসপ্রাপ্ত।
আমর জানান, এভাবে ফেসবুকে প্রচারণা চালিয়ে সিরিয়া এবং ইরাকের পুরাকীর্তি বিক্রিতে সক্রিয় এসব চক্র। আমর দুই বছর ধরে ফেসবুকে সক্রিয় থেকে এসব পেজ এবং ব্যবহারকারী সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করেছেন।
তিনি বলেন, ফেসবুকে কিভাবে এসব হচ্ছে আমরা তা দেখতে পাচ্ছি এবং ফেসবুক তা করার সুযোগ দিচ্ছে। তবে ফেসুবক জানিয়েছে, ফেসবুকে অবৈধ কার্যক্রমের কোনো অনুমতি নেই।
বিবিসির অনসুন্ধানের পর এ ধরনের ৪৯টি গ্রুপ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে বলেও দাবি ফেসবুকের। কিন্তু আমরের দাবি, এ ধরনের গ্রুপগুলো ফেসবুকে এখনও সক্রিয় এবং তিনি তা দেখতে পেয়েছেন। তবে শুধু যে ইন্টারনেটে এসব প্রাচীন কীর্তি পাচার হচ্ছে তা নয়। শত বছর ধরে চোরাকারবারীরা তুরস্কের চোরাইপথ ব্যবহার করে আসছে। যদিও তুরস্ক সরকার সীমান্তে চোরাকারবারী রোধে তাদের ভূমিকা জোরদার করেছে। এরপরও সম্প্রতি সিরিয়া এবং ইরাক থেকে মিলিয়ন মিলিয়ন পাউন্ড মূল্যের এসব পুরাকীর্তি এই পথে পাচার হয়েছে।
কঠোর নিরাপত্তার কারণে সীমান্তে পাচার কমেছে কিছুটা কিন্তু তা বন্ধ হয়নি। সামরিক বাহিনীর কাছে আইএস পরাজিত হলেও বিভিন্ন পুরাকীর্তি বিক্রির প্রস্তাব এখনো বিদ্যমান।