রাজধানীর যমুনা ব্লকবাস্টার এবং বসুন্ধরা সিটির স্টার সিনেপ্লেক্সে চলছে ঈদের ছবি ‘কমলা রকেট’। এছাড়াও রাজধানীর কাকরাইলের রাজিয়া সিনেমা হলেও চলছে ছবিটি। তবে এই সিনেমা হলের পরিবেশ ভালো না হওয়ায় ঈদের দিন থেকেই বেশীর ভাগ দর্শক যাচ্ছেন যমু ব্লকবাস্টার ও বসুন্ধরা সিনেপ্লেক্সে।
দুটি সিনেপ্লেক্সেই খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঈদের দিন সকালে যমুনা কিংবা স্টার সিনেপ্লেক্সে ‘কমলা রকেট’ দেখতে আসা দর্শকের সংখ্যা বেশ সন্তুষজনক। এদিকে ‘পোড়ামন ২’ কিংবা ‘সুপার হিরো’ নিয়ে সোশাল মিডিয়ায় দর্শকের যে উন্মাদনা ‘কমলা রকেট’ নিয়ে তেমনটি চোখে পড়ছে না। তবুও বেশকিছু দর্শক রিভিউ চোখে পড়ার মতো।
যারা ‘কমলা রকেট’ ছবিটি হলে গিয়ে দেখেছেন, তাদের বেশীর ভাগই ছবিটি নিয়ে তৃপ্ত। বলছেন, এটা বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে নতুন ধরনের সিনেমা। রিতু পাখি নামের একজন ছবিটি দেখার পর ফেসবুকে নিজের মতামত জানিয়ে লিখেন,
‘‘কোনো ফিল্ম একবার দেখে সাথে সাথে প্রতিক্রিয়া দেয়া ঠিক না। ঘোরের মধ্যে থাকলে অনেকসময় সত্যিকার ত্রুটি-বিচ্যুতি-ভাল-মন্দ চোখে পড়ে না। এই যে বললাম ঘোর, এই ঘোরের মধ্যেই পড়া হয় না অনেক সিনেমা দেখে। তাই ভাবলাম ঘোরের মধ্যেই লিখে ফেলি।
“কমলা রকেট” পরিচালনা করেছেন অপরিচিত একজন পরিচালক। এই যা নাম টা ভুলে গেলাম। গুগোল সার্চ দেয়ার আগে, অর্থাৎ ভদ্রতা দেখানোর আগে লিখে ফেলি প্রতিক্রিয়া।
যারা ট্রেইলার দেখেছেন জানেন যে এটা রকেট নামের একটা লঞ্চের যাত্রীদের নিয়ে ঘটনা। ওহ, ঘটনা আসলে কিছুই না। ঘটনা আসলে ঘটবে মনের ভেতর। উল্লেখযোগ্য কোনো ঘটনা, রুপান্তর, চরিত্র নির্মান এখানে নেই। রয়েছে নীরেট অস্বস্তি। অস্বস্তি এমন একটা বিষয় যাকে টেনে অনেক দূর নেয়া খুব কঠিন। বিশেষ করে সিনেমায়। এই কঠিন কাজটা এখানে সম্পন্ন হতে দেখলাম।
আপনার রাগ, ক্ষোভ কিছুই হবে না মূল চরিত্রের ওপর। কারন মূল চরিত্র নিজেই অস্বস্তি আবিস্কার করতে থাকবেন একটা একটা করে। এতে অনেকের মনে হতে পারে একজন গার্মেন্টস ব্যাবসায়ীর বিবেকের দংশন দেখিয়ে মূল ঘটনাকে কম গুরুত্বপূর্ণ বানিয়ে ফেলা হচ্ছে। আমার মনে হয়েছে ঠিক উলটো। এর মধ্যে দিয়ে একজন অদূরদর্শী, মুনাফালোভী ব্যাবসায়ীর কিসে অস্বস্তি হতে পারে, কিংবা না হলেও তাকে অস্বস্তিতে ফেলা যেতে পারে তার একটা দৃশ্যায়ন এই ফিল্মে আছে।
ফিল্ম অনেক ভাবে বানানো যায়। “কমলা রকেট” একটা ধরন। সব ধরন এক হতে হবে এমন কোনো কথা নাই। রুপান্তর দেখানো, চরিত্র নির্মান, এসবে পরিচালক মন না দিয়ে ভালই করেছেন। তাতে সবচেয়ে শক্তিশালী চরিত্রটা বের হয়ে এসেছে সব ভেদ করে। ক্ষণস্থায়ী হলেও পচা গন্ধের একটা ভয়াবহ শক্তি আছে।
পরিচালককে অভিনন্দন’’
এমন রিভিউয়ের পর শাহরুখ পিকলু নামের একজন মন্তব্য করেন, ছবিটা দেখার জন্য আগেই মার্ক করে রেখেছিলাম, ঢাকায় যেয়ে দেখবো। উৎসাহের মূল কারণ অবশ্য ঐ ‘রকেট’ নামের জাহাজটি। ঢাকা-বরিশাল-খুলনা লাইনের স্টিমার সার্ভিসের নাম রকেট। এই রকেটের সাথে আমার শৈশব-বাল্য-যৌবনের স্মৃতি জড়িয়ে আছে। আমি শেষ রকেট স্টিমারে চড়েছি ১৯৯৩ সালে। ‘রকেট’ স্টিমারগুলোর নাম ছিলো – কিউই, অস্ট্রিচ, গাজী, মাসুদ, টার্ন ইত্যাদি। আমার খুব পছন্দের এই স্টিমারগুলো।
কথাসাহিত্যিক শাহাদুজ্জামানের ‘মৌলিক’ ও ‘সাইপ্রাস’ নামের দুটি গল্প অবলম্বনে ‘কমলা রকেট’-এর চিত্রনাট্য করেছেন শাহাদুজ্জামান ও নির্মাতা নূর ইমরান মিঠু। ছবির গল্পে ‘কমলা রকেট’ মূলত একটি স্টিমারের নাম। ছবিতে অভিনয় করেছেন তৌকীর আহমেদ, মোশাররফ করিম, জয়রাজ, সামিয়া সাঈদ, সেওতি, ডমিনিক গোমেজ, বাপ্পা শান্তনু, সুজাত শিমুল, শহীদুল্লাহ সবুজ,আবু রায়হান রাসেল।