অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে ফিফার আফ্রিকান দেশগুলোর অভ্যন্তরীণ দুর্নীতির কথা বিশ্বকে জানিয়েছিলেন ঘানার সাংবাদিক আহমেদ হুসেইন-সুয়ালে। সেই অনুসন্ধানী সাংবাদিকতাই কাল হল আহমেদ হুসেইনের জীবনে। নিজ বাড়ির সামনে সন্ত্রাসীদের গুলিতে প্রাণ হারিয়েছেন এ সাহসী সাংবাদিক।
বুধবার মধ্যরাতে কর্মস্থল থেকে রাজধানী আক্রার বাড়িতে ফেরার প্রবেশপথ সম্মুখে আহমেদ হুসেইনকে গুলি করে মোটরকারে পালিয়ে যায় সন্ত্রাসীরা। ঘটনাস্থলেই আহমেদ নিহত হন বলে নিশ্চিত আক্রার পুলিশ। তার বুকে দুটি ও ঘাড়ে একটি গুলি লেগেছে।
টাইগার আই পাই নামে একটি অনুসন্ধানী সংবাদ মাধ্যমে চাকরি করতেন আহমেদ। প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে এটি পেশাদার খুনির কাজ।
আরেক অনুসন্ধানী প্রতিবেদক আনাস আরমেউয়ে আনাসের সঙ্গে গোপনে অনুসন্ধান করে বিশ্বকে ঘানা ও আফ্রিকার ফিফা কর্মকর্তাদের দুর্নীতির কথা ফাঁস করে দেন আহমেদ। বৈঠকের নামে বোর্ড মিটিংয়ে রেফারি, কোচ ও গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তাদের যে ঘুষ ও উপঢৌকন দেয়া হত, সেটিই উঠে এসেছিল আনাস-আহমেদের প্রতিবেদনে।
ফিফার গভর্নিং বডির সদস্য ও আফ্রিকান দ্বিতীয় ক্ষমতাধর কর্তা কুয়েসি নিয়ানতাকির দুর্নীতি ফাঁস করাই ছিল এই দলটির সবচেয়ে বড় সাফল্য।
আনাস-আহমেদের প্রতিবেদনে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয় ফিফায়। প্রায় দুই ডজন রেফারিকে বহিস্কার কিংবা সাময়িক নিষিদ্ধ করা হয়। ফিফা থেকে আজীবন নিষিদ্ধ হন নিয়ানতাকি।
আহমেদের মৃত্যুর সংবাদে শোক প্রকাশ করেছেন ঘানার প্রেসিডেন্ট। নিহত সাংবাদিকের গুরু আনাস নিজেও একজন বিশ্ববিখ্যাত অনুসন্ধানী সাংবাদিক। মানব পাচার, ঘানার বিচারকদের দুনীতির প্রতিবেদন ফাঁস করে মার্কিন সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার প্রশংসা পেয়েছিলেন তিনি। সেই আনাস বলছেন, আহমেদের মৃত্যুতেও সত্য প্রকাশ থামবে না, ‘খুবই কষ্টের সংবাদ। কিন্তু আমরা নীরব থাকবো না। শান্তিতে ঘুমাও।’