ফিনল্যান্ডের পর এবার সুইডেনও ন্যাটোতে যোগদানের সিদ্ধান্ত নিশ্চিত করেছে। সামরিক জোটটিতে যোগদানের বিষয়ে উদ্বেগ জানিয়েছে তুরস্ক। ফিনিশ সীমান্তে সামরিক শক্তি বাড়ানোর কথা জানিয়েছে রুশ প্রতিরক্ষা বিভাগ। ইউক্রেনকে আরো সামরিক সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ন্যাটো।
অন্যদিকে ইউক্রেনের বিভিন্ন স্থানে হামলা জোরদার করেছে রুশ বাহিনী। ইউক্রেন প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলনস্কি বলেছেন, কৌশলগত পরাজয়ের পর রুশ সেনাদের শক্তি শেষ পর্যায়ে।
মাত্র একদিন আগেই ফিনল্যান্ড এবং সুইডেন দু’দেশকেই ন্যাটোতে যোগদানের বিরুদ্ধে নিজেদের অবস্থান জানায় রাশিয়া। এমন পদক্ষেপের জন্য দুই দেশকেই চরম পরিণতি ভোগ করতে হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তবে রোববার পুতিনের ওই হুমকিকে অগ্রাহ্য করেই ন্যাটোতে যোগদানের বিষয়ে নিশ্চিত করে ফিনল্যান্ড ও সুইডেন।
সুইডেনের ক্ষমতাসীন দল স্যোশাল ডেমোক্র্যাটস যোগদানের পক্ষ সমর্থন দেওয়ার পর সুইডিশ প্রধানমন্ত্রী বলেন, সুইডেন এবং সুইডিশ জনগণের নিরাপত্তার স্বার্থে পশ্চিমা সামরিক জোটটিতে যোগ দেবে সুইডেন।
সুইডেনের এই ঘোষণার আগে ফিনল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট নিনিস্তোও নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগের কারণে ন্যাটোতে যোগদানের বিষয়ে নিশ্চিত করেন।
তবে ন্যাটোতে ফিনল্যান্ড ও সুইডেনের সদস্য হওয়ার পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে তুরস্ক। বার্লিনে সুইডেন ও ফিনল্যান্ডের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পর তুর্কি পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তুরস্ক ন্যাটোর সম্প্রসারণের বিরুদ্ধে নয়, তবে যে দেশগুলো সন্ত্রাসকে সমর্থন করে তাদের ন্যাটোর সদস্য হওয়া উচিত নয় মনে করে আঙ্কারা।
পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকে ইউক্রেনকে আরও সামরিক ও মানবিক সহায়তা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ন্যাটো। তারা বলেছেন, ইউক্রেনের যতদিন প্রয়োজন হবে ততদিন পর্যন্ত সামরিক সহায়তা দেবে তাদের জোট। সদস্য দেশগুলো রাশিয়ার বিরুদ্ধে দেওয়া নিষেধাজ্ঞা কার্যকর রাখবে বলে জানিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন।
ন্যাটোর মহাসচিব জেন্স স্টোলটেনবার্গ বলেন, ইউক্রেনে রাশিয়া কৌশলগত লক্ষ্য অর্জন করতে পারেনি। যেকোন সময়ের চেয়ে ন্যাটো এখন শক্তিশালী।
ন্যাটো পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকের মধ্যেই খারকিবে একটি সহায়তা কেন্দ্রে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে রুশ বাহিনী। দোনেৎস্কে বোমা ও গোলাবর্ষণে ৩ জন নিহত ও ১৩ জন আহত হয়েছে। লুহানস্কে হাসপাতাল, স্কুল ও রাসায়নিক প্ল্যান্টে রুশ বাহিনীর আর্টিলারি হামলায় ৯ জন আহত হয়েছে। লাভিভেও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে রুশ সেনারা। তবে রাশিয়ার বিশেষ সামরিক অভিযান ব্যর্থ হয়েছে উল্লেখ করে ইউক্রেন সেনাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলনস্কি।
ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, যুদ্ধে এ পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ২৭ হাজার রুশ সেনা নিহত হয়েছে। আর ইউক্রেনে রাশিয়া যত সেনা পাঠিয়েছিল তাদের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ হতাহত হয়েছে বা ধরা পড়েছে বলে ধারণা করছে ব্রিটিশ সামরিক গোয়েন্দারা।