সময়ের জনপ্রিয় চিত্রনায়িকা নুসরাত ফারিয়া। নামিদামি ব্র্যান্ডের প্রতি তার ঝোঁকের কথা কারো অজানা নয়। বিশেষত পোশাক! শুধু তাই নয়, শুটিংয়ের জন্য নিজেই পছন্দ করে পোশাক কেনেন এই নায়িকা। যেগুলো অনেকসময় ব্যবহৃত হয় না। আর সেই অব্যবহৃত পোশাকগুলো যাচ্ছে বস্তির সুবিধাবঞ্চিত মানুষের কাছে!
‘আশিকী’ ছবির এই নায়িকার অব্যবহৃত দুই শতাধিক পোশাক ইতিমধ্যে সংগ্রহ করেছে বস্তির সুবিধা বঞ্চিতদের নিয়ে কাজ করা সংগঠন সুইচ-বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন।
সংগঠনটির পক্ষে জানানো হয়, দীর্ঘদিন ধরেই সুবিধাবঞ্চিত মানুষদের জন্য কাপড় সংগ্রহ করছেন তারা। বিষয়টি নায়িকা নুসরাত ফারিয়া জানতে পেরে তিনি অব্যবহৃত দুই শতাধিক কাপড় এই সংগঠনে দিয়েছেন।
সংগঠনটির প্রধান সমন্বয়ক মোস্তাফিজুর রহমান চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, যখন কোনো তারকা মুখ সুবিধা বঞ্চিতদের পাশে দাঁড়ায়, তখন সামর্থবান সাধারণ মানুষেরা আরও বেশী উৎসাহিত হয়। এ কারণে আমরা নায়িকাকে বিষয়টি জানালে তিনি আমাদের আহ্বানে সাড়া দেন। সংগঠনটির পক্ষে দেশের এই জনপ্রিয় নায়িকাকে সাধুবাদ জানাই। আমাদের বিশ্বাস, তার দেখাদেখি আরো বেশী মানুষ সুবিধাবঞ্চিতদের পাশে এসে দাঁড়াবে।
এরআগে ছোটপর্দার জনপ্রিয় অভিনেত্রী শবনম ফারিয়া এই সংগঠনে তিন বস্তা কাপড় দিয়েছেন। এই অভিনেত্রী বাবাকে হারানোর পর, বাবা ও তার নিজের অব্যবহৃত কাপড় দান করেন। মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, জনপ্রিয় অভিনেত্রী জয়া আহসানও এই সংগঠনে এরআগে অব্যবহৃত কাপড় দিয়েছেন।
সুবিধাবঞ্চিত মানুষদের পোশাক দেয়ার পরিকল্পনার কথা জানিয়ে মোস্তাফিজুর বলেন, বস্তির সুবিধাবঞ্চিত মানুষদের নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে আমরা কাজ করছি। গত বছর করোনাকালে আমরা ১২ হাজার পরিবারকে খাবার বিতরণ করি। আর সেই সময়েই আমরা লক্ষ্য করি, এইসব সুবিধাবঞ্চিত মানুষদের খাবারের পাশাপাশি তাদের নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসেরও মারাত্মক সংকট। বিশেষত তাদের পোশাকের অভাবের বিষয়টি আমাদের ভাবায়।
এই সংগঠক বলেন, আমরা ভেবে দেখলাম সমাজে বহু সামর্থবান মানুষ আছেন, যাদের আছে অবব্যহৃত প্রচুর কাপড়। যা আমরা চাইলেই পেতে পারি। সেই পরিকল্পনা মতো আমরা ঢাকা শহরের বিভিন্ন এলাকায় যেতে থাকলাম। বিভিন্ন বিল্ডিং, অ্যাপার্টমেন্টের সামনে গিয়ে সুবিধাবঞ্চিত মানুষদের জন্য কাপড় সংগ্রহ করি। এ কাজে বেশ সাড়াও পাই।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, সুবিধাবঞ্চিত মানুষদের কাপড় বিতরণ করার প্রকল্পটির নাম দেই ‘দশ টাকায় কাপড়’। বিভিন্ন বস্তিতে আমরা মেলার আয়োজন করি। সেখানে মানুষের কাছ থেকে আনা প্রতিটি কাপড় ১০ টাকায় বিক্রি করি।
প্রতি কাপড়ে ১০ টাকা নেয়ার কারণ জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা সেচ্ছাসেবী সংগঠন। বিভিন্ন এলাকায় পিকাপ, ভ্যান নিয়ে যেতে হয়। ট্রান্সপোর্ট খরচ হিসেবে ১০ টাকা নিই। তার উপর কাপড়ও ওয়াশ করতে হয়। তারচেয়ে বড় ব্যাপার, যারা কাপড় নিচ্ছেন তারা যে ফ্রি নিচ্ছে না; এই বিষয়টিও তাদের মধ্যে জারি থাকে। তারা নিজেরা নিজেদের পছন্দ মতো জিনিসটি কিনে নেন।