চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ

ফাইনালে যে তিন লড়াইয়ে থাকবে চোখ

নিজেদের প্রথম বিশ্বকাপ শিরোপা জিততে ইংল্যান্ড-নিউজিল্যান্ড দুদলই মরিয়া। লর্ডসের ফাইনালে সর্বোচ্চটা দিয়েই লড়বেন দুই দলের ২২ ক্রিকেটার। এর মাঝে থাকবে কিছু ব্যক্তিগত দ্বৈরথ যা ফাইনালকে করবে আরও রোমাঞ্চকর। এমন তিন লড়াইয়ে চোখ রাখতে পারেন আপনিও-

মরগান বনাম উইলিয়ামসন
ইয়ন মরগান এবং কেন উইলিয়ামসন। দুই অধিনায়কের সামনে দেশের প্রথম বিশ্বকাপ শিরোপা জিতে জাতীয় হিরো হয়ে ওঠার সুবর্ণ সুযোগ। কে হাসবেন, কে থেকে যাবেন আড়ালে সেটা জানার জন্য আর মাত্র কয়েকঘণ্টার অপেক্ষা।

২০১৫ বিশ্বকাপে বাংলাদেশের কাছে হেরে প্রথম রাউন্ড থেকেই বাদ পড়ার পর নাটকীয় পুনরুজ্জীবন উপভোগ করছে ইংল্যান্ড। ভয়ডরহীন ক্রিকেটে বর্তমানে সাফল্যের সবচেয়ে বড় বিজ্ঞাপন বিশ্বকাপের স্বাগতিকরা।

গত চার বছরে যত সাফল্য তা এক ম্যাচের ফলাফলে মিলিয়ে যেতে পারে বাতাসে। সেমিতে অস্ট্রেলিয়াকে হারানোর পর ইংলিশ সতীর্থদের প্রতি তাই জোরদার আহ্বান অধিনায়কের, ‘আমি চাই না রোববার আমাদের জীবনে লজ্জার দিন হয়ে থাকুক। আমরা চাই দিনটি এখন থেকে আমাদের সামনে এগোনোর পাথেয় হয়ে থাকুক।’

এই ইংল্যান্ডের কাছে গ্রুপপর্বে বড় ব্যবধানে হেরেছিল নিউজিল্যান্ড। সেই ম্যাচের ফল মনে রেখে সতীর্থদের ঠাণ্ডা-মাথায় খেলতে বলছেন কিউই অধিনায়ক উইলিয়ামসন, ‘যেকেউ যেকাউকে হারাতে পারে। পা মাটিতে রাখা গুরুত্বপূর্ণ। আমরা চ্যালেঞ্জ জেতার জন্য উন্মুখ হয়ে আছি’

আট ম্যাচে সমান দুই সেঞ্চুরি আর ফিফটিতে নিউজিল্যান্ডের প্রধান ভরসা উইলিয়ামসনই। দুর্দান্ত ব্যাটিং আর ম্যাচের পরিস্থিতি দ্রুত পড়তে পারার সামর্থ্য উইলিয়ামসনকে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে ইংলিশদের প্রধান প্রতিপক্ষ হিসেবে। নিজের মস্তিষ্ক ব্যবহার করে সেই কাঁটা উপড়ে দিতে চাইবেন মরগান। প্রতিপক্ষ অধিনায়কের লক্ষ্যটাও যে সেটাই থাকবে তা বলার অপেক্ষা রেখে না। রোববার দিন শেষে যার হাতে উঠবে শিরোপা তাকেই যে কেবল মনে রাখবে ইতিহাস।

রয় বনাম গাপটিল
অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে জনি বেয়ারস্টোর সঙ্গে ১২৪ রানের মারমুখি জুটিতে দলকে জিতিয়ে ফাইনালে তোলার অন্যতম যোগ্য সারথী জেসন রয়। দুজনে মিলে বিশ্বকাপে যে চারটি শতক পেরোনো জুটি গড়েছেন, তার একটিতেও হারেনি ইংল্যান্ড।

আসরের মাঝখানে চোটের জন্য তিন ম্যাচ খেলেননি রয়। এই ম্যাচগুলোতে ইংল্যান্ড ছিল বেশ বিবর্ণ। এছাড়া এক পাকিস্তান ম্যাচ ছাড়া প্রতিটি ম্যাচে বিস্ফোরক ফর্মে ছিলেন ইংলিশ ওপেনার। আর রয় জ্বললে যে ম্যাচ জয় সহজ হয়ে যায় ইংলিশদের সেটা এই বিশ্বকাপে পরীক্ষিতই।

আর মার্টিন গাপটিল চলছেন উল্টো রথে। গত বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক ব্যাটসম্যান এই বিশ্বকাপে একদম অফফর্মে। ৯ ম্যাচে করেছেন মাত্র ১৬৭ রান। রয়ের সঙ্গে তার তুলনা চলেই না বললে ভুল হবে না!

তবে দিনশেষে অভিজ্ঞতার মূল্য আছে। গাপটিল জ্বলে উঠলে যেকোনো প্রতিপক্ষকেই খড়কুটোর মতো উড়িয়ে দিতে পারে নিউজিল্যান্ড। বিশ্বকাপের ইতিহাসে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ২৩৭ রানের ইনিংস খেলা ব্যাটসম্যানের কাছ থেকে একটা বড় ইনিংস পাওনা হয়ে আছে কিউইদের। সেটা ফাইনালে হলে কপালে দুঃখ আছে ইংলিশদের।

হেনরি বনাম ওকস
ভারতের বিশ্বকাপ স্বপ্ন ধ্বংস করে দেয়ার পেছনে বড় অবদান ম্যাট হেনরির। ৩৭ রানে ভারতের টপ অর্ডারের ২ ও শেষদিকে ১ উইকেট তুলে নিউজিল্যান্ডকে ফাইনালে এনেছেন ম্যাচসেরা কিউই পেসার।

আসরে ১৩ উইকেট নিয়েছেন হেনরি। তার সিনিয়র সতীর্থ পেসার ট্রেন্ট বোল্টের সঙ্গে তার বোলিং জুটি আতঙ্কই ছড়ায়। ফাইনালে যদি সেমির সৌরভ ছড়িয়ে দিতে পারেন তাহলে সর্বনাশ হওয়া ছাড়া আর কোনো পথ থাকবে না স্বাগতিকদের জন্য।

একই কথা খাটে ক্রিস ওকসের ক্ষেত্রেও। অস্ট্রেলিয়ার টপ অর্ডারকে বৃহস্পতিবার ধসিয়ে দিয়েছিলেন ইংলিশ পেসার। সেই ম্যাচে ২০ রানে ৩ উইকেট নিয়ে ম্যাচসেরা হন ওকস।

একদিকে জফরা আর্চার অন্যপ্রান্তে ওকস। একজন রান আটকাতে সিদ্ধহস্ত, আরেকজন নতুন বলে উইকেট নিতে ওস্তাদ। এই জুটি মিলে ১০ ম্যাচে ৩২ ব্যাটসম্যানকে সাজঘরে পাঠিয়েছেন। প্রথমবার শিরোপা ঘরে তুলতে দুজনের দিকে তাকিয়ে থাকবে ইংল্যান্ড।