চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

প্রধানমন্ত্রী সমাধান দেয়ার পরও কেন নতুন উস্কানি?

সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থার সংস্কারের দাবিতে কয়েক মাস ধরে চলা আন্দোলন গত ১১ এপ্রিল থেকে স্থগিত রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতীয় সংসদে দেয়া বক্তব্যে প্রতিবন্ধী ও ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সুবিধা বজায় রেখে কোটা ব্যবস্থা তুলে নেবার ঘোষণা দিলে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন থামায়।

প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার আগে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীরা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে সচিবালয়ে বৈঠক করেছিল, সেখানে তাদের সরকারের পক্ষ থেকে সুনির্দিষ্ট কিছু আশ্বাস দেয়া হলেও তারা তা মেনে নেয়নি। পরে স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে বিষয়টি বিষয়টির সুরাহা হয়। আন্দোলনের প্রভাবে সারাদেশ জুড়ে শিক্ষাঙ্গনসহ জনজীবনে অচলাবস্থা দেখা দিয়েছিল, এছাড়া নানা সহিংস ও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটতে দেখেছে জাতি। এই অবস্থায় প্রধানমন্ত্রীর ওই ঘোষণা ছিল সময়োচিত।

তবে শঙ্কার সঙ্গে লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে, প্রধানমন্ত্রীর সুষ্পষ্ট নির্দেশনার পরও কয়েকজন রাজনীতিক ও কিছু মহল নানা বক্তব্য ও পদক্ষেপ নিচ্ছে, যা কোটা আন্দোলনকারীদের মনে নানা সন্দেহ আর উত্তেজনা তৈরি করছে। সোমবার (১৬ এপ্রিল) দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করে ফেরার পথে কোটা সংস্কার আন্দোলনের কয়েকজন শিক্ষার্থীকে চোখ বেঁধে তুলে নেবার অভিযোগে উত্তাল হয় সামাজিক মাধ্যম। পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বরাতে জানা যায়, কয়েকটি সুনির্দিষ্ট মামলায় তথ্য যাচাইয়ের জন্য তাদের নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।

তবে, প্রশ্ন হচ্ছে এভাবে রাস্তা থেকে নিয়ে যাওয়া কেন?

আইন-শৃঙ্খলাজনিত নানা ঘটনা সামাল দিতে দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর যথেষ্ট সুনাম রয়েছে। তারা জানে, কোন পরিস্থিতিতে কোন বিষয় কীভাবে সামাল দিতে হয়। কিন্তু কোটা আন্দোলনকারীদের কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য এভাবে নিয়ে যাবার মতো ঘটনা অনেকটা দৃষ্টিকটু বলেই আমাদের কাছে মনে হয়েছে। তারা কেউ পালিয়ে বা লুকিয়ে নেই, ইচ্ছে করলে ডিবি পুলিশ তাদের ডেকে নিয়ে যেতে পারতো, কিংবা নিজেরা এসে কথা বলতে পারতো।

এছাড়া বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ বিভিন্ন অনুষ্ঠান ও কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে প্রাসঙ্গিক ও অপ্রাসঙ্গিকভাবে কোটা ও কোটা সংস্কার বিষয়ে নানা বক্তব্য দিচ্ছেন। এগুলোর বেশিরভাগই প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা ও বক্তব্যের সঙ্গে মিল থাকলেও অনেকের অনেক কথা কোটা আন্দোলন করা শিক্ষার্থীদের মনে সন্দেহ ও ক্ষোভের তৈরি করছে। আবার আন্দোলনকারীদের কেউ কেউ সামাজিক মাধ্যমে অসংযত বক্তব্য দিচ্ছে যা অন্যদের উস্কে দেয়। আমরা আশা করবো, একটি মীমাংসিত বিষয় নিয়ে কোন পক্ষ থেকেই বাড়াবাড়ি করা হবে না।

যেহেতু প্রধানমন্ত্রী একটি সুনির্দিষ্ট ঘোষণার মাধ্যমে কোটা বিষয়ে কথা বলেছেন এবং সেভাবে কাজ হচ্ছে বলে জানা যাচ্ছে, সেহেতু সব মহলকে সচেতনভাবে এই বিষয়ে তাদের কর্মকাণ্ড ও চিন্তার প্রকাশ করা উচিত বলে আমরা মনে করি। আমাদের আশাবাদ, সকলের সুবিবেচনাপ্রসুত আচরণ ও সিদ্ধান্তের মাধ্যমে কোটা সংস্কার বা বাতিল বিষয়ে স্থিতি আসবে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী বিষয়টির স্থায়ী সমাধান হবে বলেই আমরা আশা করছি।