পাবলিক পরীক্ষাসহ বিভিন্ন পরীক্ষায় প্রশ্নফাঁস প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ডিজিটাল বাংলাদেশে এর সুফল আমরা যেমন ভোগ করছি, মাঝেমাঝে তার কিছু কুফলও আসছে।
র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ান- র্যাবের ১৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দেশের মানুষের জীবনমান উন্নয়নের জন্য আমরা যে পদক্ষেপ নিচ্ছি, মাঝেমাঝে সেখানে কিছু কিছু সমস্যা দেখা দেয়। যেমন – প্রশ্নপত্র ফাঁস। এটা ব্যাপক একটা প্রচারণায় এসে গেল।’
প্রশ্নপত্র ফাঁসের বিরুদ্ধে অভিযান চলছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, একদিকে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলো ও গোয়েন্দা সংস্থাসমূহ সক্রিয় রয়েছে। অন্যদিকে র্যাবও এ অভিযানে কাজ করছে। অভিযানে বেশ কিছু ঘটনা ধরাও পড়েছে।
এক্ষেত্রে র্যাবের উপস্থিতিই অপরাধীদেরকে সতর্ক বার্তা দেয় বলে মনে করেন তিনি।
‘তবে বলব, আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তুলব বলে ঘোষণা দিয়েছিলাম। আজকে বাংলাদেশ ডিজিটাল হয়েছে। ডিজিটালের সুফলও আমরা যেমন ভোগ করছি, মাঝেমাঝে এর কিছু কুফলও আসছে,’ বলেন শেখ হাসিনা।
‘যেমন – একটা প্রশ্ন এক জায়গা গেলে সেটা কিনে অন্য সব জায়গায় পৌঁছে দেয়া। আবার আসলেই প্রশ্ন ফাঁস হলো কিনা বা উত্তরটা সঠিক কিনা, সেটা দেখারও সময় নেই। সেটাই অন্য জায়গায় চলে যাচ্ছে।’
যে কাজটা মানুষকে সুন্দর জীবন দেয়ার জন্য, দেশকে গড়ার জন্য ব্যবহার হবে, সেটার অপব্যবহার যেন না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে বলে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী।
এজন্য র্যাবসহ সব বাহিনীকে এসব অপব্যবহার বন্ধে কাজ করার নির্দেশ দেন তিনি।
এজন্য প্রশ্নপত্র ফাঁস ও পরীক্ষায় নকল বন্ধ করা, ছেলেমেয়েদের পড়ালেখার সুন্দর পরিবেশ তৈরি করা এবং শিক্ষার্থীরা যেন নকল করে নয়, লেখাপড়া করে পরীক্ষা দিয়ে পাস করে, সেদিকে সরকারকে লক্ষ্য রাখতে হবে বলেও মন্তব্য করেন শেখ হাসিনা।
বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করে র্যাব জনগণের আস্থা ও শ্রদ্ধা অর্জন করেছে বলে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘জঙ্গিবাদ দমনে র্যাব যে কাজগুলো করেছে সেগুলো অব্যাহত রাখা দরকার। কারণ আমরা ইতোমধ্যে ঘোষণা করেছি, বাংলাদেশ হবে একটি শান্তিপূর্ণ দেশ। এ দেশে আমরা কোনোমতেই জঙ্গিবাদকে প্রশ্রয় দেবো না।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এজন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, সশস্ত্র বাহিনী, গোয়েন্দা সংস্থা, বর্ডার গার্ড, র্যাব, সবাই মিলে এ প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে। যেন বাংলাদেশকে কেউ কখনো জঙ্গির দেশ, অপরাধীর দেশ বলে অপবাদ দিতে না পারে।
যারা জঙ্গিবাদে বিশ্বাসী তাদের কোন ধর্ম, জাতি কিংবা দেশ নেই। তারা জঙ্গি, তারা সন্ত্রাসী। এ ভুল পথে যেন আমাদের দেশের ছেলেমেয়েরা না যায় সেজন্য সবাইকে সচেতন হতে বলেন শেখ হাসিনা।
জঙ্গিবাদ দমনের মতোই এবার মাদকের বিরুদ্ধে কঠোর অভিযান চালাতে র্যাবসহ আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। একই সঙ্গে শিশুকিশোরদের ব্যাপারে বাবা-মা, পরিবার ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকেও সতর্ক থাকতে বলেছেন তিনি।
এছাড়া র্যাবকে অত্যাধুনিক ত্রিমাত্রিক বাহিনী হিসেবে গড়ে তুলতে আলাদা বাজেটের ব্যবস্থা করা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।