ক্রীড়াঙ্গনে গত রোববার সন্ধ্যায় ঐতিহাসিক ঘটনা ঘটে গেছে। দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো একসঙ্গে ৩৩৯ জন খেলোয়াড়কে পুরস্কৃত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। অথচ এই তালিকায় নাম নেই জাতীয় পুরুষ দলের কোনও ফুটবলারের! এই না থাকাকে বাফুফের কর্মকর্তারা স্বাভাবিকভাবেই দেখছেন। তবে সাবেক ফুটবলাররা হতাশা প্রকাশ করেছেন।
‘গত ছয়মাসে ফুটবলে আমাদের কোনও সাফল্য নেই। খুব স্বাভাবিকভাবেই পুরস্কারও পাওয়ার কথা নয়। তাই পাইনি।’ চ্যানেল আই অনলাইনকে বলছিলেন বাফুফের সহ-সভাপতি বাদল রায়।
প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে একসঙ্গে এত খেলোয়াড় পুরস্কার নিলেন অথচ ফুটবলাররা নেই। বাফুফে হতাশ কি-না। জানতে চাইলে বাদল রায় বলেন, ‘হতাশার কিছু নেই। আমাদের চেষ্টা থাকবে ভবিষ্যতে যেন ভালো কিছু হতে পারে।’
জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক আমিনুল ইসলাম অবশ্য এই ব্যর্থতার জন্য বাফুফেকে দায়ী করছেন, ‘তারা উদাসীন। তারা শুধু চেয়ার ধরে রাখতে চান। ফুটবলের কী হল না হল, তাতে কারও মাথা ব্যথা নেই।’
গত বছরের অক্টোবর থেকে চলতি বছরের এপ্রিল পর্যন্ত -এই ছয় মাসে যেসব আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশের ক্রীড়াবিদরা সাফল্য পেয়েছেন তাদের পুরস্কার দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। এই সময়ে বাংলাদেশের ফুটবল শুধু অন্ধকার সময়ই পার করেছে।
‘আমরা যখন খেলেছি তার চেয়ে ফুটবলের অবস্থা এখন অনেক খারাপ। সবার আগে কর্মকর্তাদের পদত্যাগ করা উচিত ছিল। সেটা তারা না করে চেয়ার ধরে রেখেছেন। কারও কোনও পরিকল্পনা নেই।’ ফোনের আরেক প্রান্তে বেশ ক্ষুব্ধই মনে হল দেশের সর্বকালের অন্যতম সেরা গোলরক্ষক আমিনুলকে।
আবু নাঈম সোহাগ। বাফুফের সাধারণ সম্পাদক। পুরুষ ফুটবলারদের পুরস্কার না পাওয়ার বিষয়ে বাদল রায়ের মতো তিনিও হতাশার কিছু দেখছেন না, ‘আমাদের মহিলা ফুটবল দল পুরস্কার পেয়েছে। বছর দেড়েক আগে পুরুষদল ভালো করার সুবাদে আমরা প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে পুরস্কার পেয়েছি। গত ছয়মাসে ছেলেরা ভালো করেনি, তাই পায়নি।’
সোহাগ আশাবাদী ভবিষ্যতে ছেলেরা প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে আরও বড় পুরস্কার গ্রহণ করবে, ‘দুয়ার তো বন্ধ হয়ে যায়নি। ভবিষ্যতে ফুটবলাররা ভালো খেলে এক্সক্লুসিভ পুরস্কার পাবে, আমরা সেই প্রত্যাশা রাখছি।’
স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের অধিনায়ক জাকারিয়া পিন্টু এই ঘটনাকে আবার একটু অন্যভাবে ব্যাখ্যা করলেন। তিনি মনে করেন, দলগত সাফল্য না থাকলেও ব্যক্তিগতভাবে কয়েকজন ফুটবলারকে পুরস্কার দেয়া উচিত ছিল। কিন্তু কেউই পুরস্কার না পাওয়ায় হতাশ হয়েছেন কিংবদন্তি এই ফুটবলার, ‘এখানে আসলে প্রধানমন্ত্রীর করার কিছু নেই। তাকে যাদের নাম দেয়া হয়েছে, তারাই পুরস্কার পেয়েছে। বাংলাদেশ ফুটবল দল ওই ছয় মাসে ভাল না খেললেও ব্যক্তিগতভাবে কয়েকজনকে দেয়া যেত। এবং সেটা উচিত ছিল।’