অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদকে গুলি করার ঘটনা দেড় মিনিটের মধ্যেই ঘটে। এই সংক্ষিপ্ত সময়ের মধ্যে কী এমন ঘটেছিল, কেন গুলি করা হলো-সে প্রশ্নের উত্তর খুঁজছে র্যাব।
শুক্রবার দুপুরে দিকে টেকনাফ উপজেলার বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর পুলিশ তদন্তকেন্দ্র পরিদর্শন করে সাংবাদিকদের এসব জানান র্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক কর্ণেল তোফায়েল মোস্তাফা সরওয়ার।
তিনি বলেন, আমরা সেই প্রশ্নগুলোর উত্তর খুঁজছি, কেন এই ফায়ারিংটা সংগঠিত হয়েছিল? এই সংক্ষিপ্ত সময়ের মধ্যে কী এমন ঘটেছিল, সিনহা গুলিবিদ্ধ হয়েছিল? কিংবা লিয়াকত যেটা বলছে, পিস্তল তাক করে ফেলেছিল-এই মিনিট ৩০ সেকেন্ডের মধ্যে কী এমন হয়েছিল, পিস্তল তাক করার মত পরিস্থিতি আসলেই হয়েছিল কিনা, আর সেই বা কেন ফায়ার করল? আমাদের অনেক তথ্য উপাত্ত সংগৃহীত হয়েছে। সেটার আলোকেই তদন্তকারী কর্মকর্তা সব যাচাই বাছাই করছেন, যাতে কোনভাবেই কোন নির্দোষ ব্যক্তি সাজা না পায় এবং কোন দোষী ব্যক্তি যেন কোনভাবেই ছাড় না পায়।
তোফায়েল মোস্তফা বলেন, রিমান্ডে থাকা আসামি, সাক্ষী ও বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত পর্যালোচনা করে তদন্ত অনেক এগিয়েছে। এটি তদন্তের স্বার্থে এখন বলা মামলার কাজে ব্যাঘাত সৃষ্টি হতে পারে।
এরআগে দুপুরে ওসি প্রদীপ সহ ঘটনার তিন মূল আসামিদের নিয়ে পৃথকভাবে ঘটনাস্থল বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর পুলিশ তদন্তকেন্দ্র পরিদর্শন করেন র্যাবের তদন্তদল।
এ সময় ঘটনাস্থল তল্লাশি চৌকির সামনে দাঁড়িয়ে অভিযুক্ত তিন পুলিশ কর্মকর্তা নিজেদের মত করে হত্যার ঘটনার বিবরণ দিয়েছেন তদন্তকারী কর্মকর্তার কাছে।
গত ৩১ জুলাই রাত ১০টার দিকে টেকনাফের বাহারছড়া শামলাপুর পুলিশ তদন্তকেন্দ্রে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো: রাশেদ।
এ ঘটনায় অভিযুক্ত ও রিমান্ডে থাকা ওসি প্রদীপ, পরিদর্শক লিয়াকত আলী ও এসআই নন্দ দুলাল রক্ষিতকে পৃথকভাবে ঘটনাস্থলে গিয়ে ঘটনার বিবরণ শোনেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা।
দুপুর ১টার দিকে র্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) কর্নেল তোফায়েল মোস্তফা সারওয়ারের নেতৃত্বে একটি টিম অভিযুক্ত আসামিদের নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছায়।
এ সময় তদন্তকারী কর্মকর্তা ঘটনাস্থলের কাছে দাঁড়িয়ে অভিযুক্তদের কাছে ঘটনার আদ্যোপান্ত জানতে চান। এর পরিপ্রেক্ষিতে অভিযুক্তরা নিজেদের মত করে ঘটনার বিবরণ তুলে ধরেন। এসময় অতিরিক্ত মহাপরিচালক কর্নেল তোফায়েল মোস্তাফা সরওয়ার ছাড়াও র্যাবের আইন ও মিডিয়া উইং প্রধান লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিক বিল্লাহ এবং সিনহা হত্যা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিনিয়র পুলিশ সুপার মোহাম্মদ খায়রুল ইসলামসহ র্যাবের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
গত ৩১ জুলাই রাতে টেকনাফের মারিশবুনিয়া পাহাড়ে ভিডিওচিত্র ধারণ করে মেরিন ড্রাইভ দিয়ে কক্সবাজারের হিমছড়ি এলাকার নীলিমা রিসোর্টে ফেরার পথে শামলাপুরের এই তল্লশি চৌকিতে গুলিতে নিহত হন অসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান।