এখনই বিশ্বব্যাপী প্রতিরোধ ব্যবস্থা না নেওয়া হলে ২০৫০ সালের মধ্যেই প্রতি তিন সেকেন্ডে একজনের জীবন কেড়ে নেবে ‘সুপারবাগ’। সম্প্রতি প্রকাশিত এক গবেষণায় বেরিয়ে এসেছে এই ভয়াবহ আশঙ্কার কথা।
এমন অনেক সংক্রমণ রয়েছে যেগুলোর চিকিৎসায় ওষুধের কার্যকারিতা নেই। এই সংক্রমণগুলোকে গবেষণায় ‘জঙ্গিবাদের মতোই বড় ঝুঁকি’ হিসেবে উল্লেখ করে বলা হয়েছে এগুলোর কাছে পৃথিবী দ্রুত হেরে যাচ্ছে। এ ধরণের জীবাণুগুলোকেই সুপারবাগ বলেছে গবেষণাটি।
বৈশ্বিক পরিস্থিতির ওপর পরিচালিত ওই গবেষণায় বলা হয়েছে, মানুষের চিকিৎসায় অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারে বৈপ্লবিক পরিবর্তন প্রয়োজন। সার্বিকভাবেও ওষুধশিল্পের আধুনিকায়ন করতে হবে।
এছাড়াও সাধারণ মানুষকে শিক্ষিত করার জন্য ব্যাপক প্রচারণার দরকার বলে জানানো হয় গবেষণাটিতে।
২০১৪ সালের মাঝামাঝি সময়ের দিকে জীবাণু থেকে সৃষ্ট রোগব্যাধির ওপর অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধের কতটুকু কাজ করে- তা নিয়ে কাজ শুরু হয়। তখন থেকে এ পর্যন্ত এ ধরণের সংক্রমণে ১০ লাখেরও বেশি মানুষ অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার সত্ত্বেও মারা গেছে।
ওই সময় চিকিৎসকরা কিছু ব্যাক্টেরিয়া আবিষ্কার করেন, যেগুলো কোলিস্টিন – সংক্রমণ চিকিৎসার সর্বশেষ উপায় হিসেবে যে অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহৃত হয়, সেই কোলিস্টিনের কার্যকারিতাও ঝেড়ে ফেলে দিতে পারে। এর মানে একটাই – চিকিৎসাবিশ্ব একটি নড়বড়ে ভবিষ্যতের ওপর দাঁড়িয়ে আছে, যখন অ্যান্টিবায়োটিকের মতো ওষুধ আর রোগের চিকিৎসায় কাজ করবে না।
২০৫০ সালের দিকে এই পরিস্থিতি আরও অনেক খারাপ হবে বলে আশঙ্কা করা হয় গবেষণাপত্রটিতে। বলা হয়েছে, ওই সময় বিশ্বজুড়ে প্রতি বছর ১ কোটিরও বেশি মানুষ মারা যাবে।
এর কারণ হিসেবে বলা হয়, আমরা আসলে যথেষ্ট পরিমাণে নতুন ধরণের অ্যান্টিবায়োটিক তৈরি করছি না। আবার যেগুলো আছে সেগুলোও নষ্ট করছি।
এই অ্যান্টিবায়োটিক-ব্যর্থতার কারণে এই শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়েই ওষুধশিল্পে ১ লাখ কোটি মার্কিন ডলারের লোকসান হবে বিশ্বজুড়ে। তাই এই পরিস্থিতি থেকে রক্ষা পেতে নতুন অ্যান্টিবায়োটিক আবিষ্কারের জন্য ওষুধ কোম্পানিগুলোকে উৎসাহ এবং প্রতিটি নতুন অ্যান্টিবায়োটিক আবিষ্কারের জন্য কোম্পানিগুলোকে ১শ’ কোটি ডলার প্রণোদনা দেয়ার পরামর্শ দিয়েছে গবেষণাটি।
গবেষণাটি বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে মিশ্র প্রতিক্রিয়া পেয়েছে। কারও কারও মতে গবেষণার ফলাফল বেশি দূর এগোনোর মতো তথ্য দিতে পারছে না।