চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

প্রতিযোগিতা বাড়িয়ে রাখলেন সৌম্য

‘দলে জায়গা পাওয়া নিয়ে যদি প্রতিযোগিতা তৈরি হয়, খেলোয়াড়রা সবসময়ই তাদের সেরাটা পারফর্মের চেষ্টা করবে। এই প্রতিযোগিতাটা স্বাস্থ্যকর। আমরা দলে গভীরতা বাড়াতে চাই। এটিকে আমি ইতিবাচকভাবেই দেখছি। অন্যদের জন্য এটি সুযোগ। যারা দলে এসেছে, যদি সুযোগ কাজে লাগাতে পারে, সেটা আমাদের স্কোয়াডের গভীরতা বাড়াবে।’

সাকিব-তামিমের অনুপস্থিতিতে দলে সুযোগ পাওয়াদের জন্য বাংলাদেশের হেড কোচ স্টিভ রোডস এ কথা বলার পরদিনই প্রতিযোগিতা বাড়ানোর কাজটা করলেন এমন একজন, যার জায়গাই হয়নি জিম্বাবুয়ে সিরিজের ওয়ানডে স্কোয়াডে। তিনি সৌম্য সরকার। শুক্রবার বিকেএসপিতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষেই প্রস্তুতি ম্যাচে এ বাঁহাতি ব্যাটসম্যান করেছেন দারুণ এক সেঞ্চুরি।

সাকিব-তামিমের অনুপস্থিতি আর দুশ্চিন্তা নয়! দুই অপরিহার্য সদস্যকে ছাড়া খেলার মানসিক প্রস্তুতির সঙ্গে মাঠের ট্রায়ালও হয়ে গেছে গত এশিয়া কাপে। ঘরের মাঠে জিম্বাবুয়ে সিরিজেও তাদের পাওয়া যাচ্ছে না। রোডস বিষয়টিকে অন্যদের জন্য সুযোগ হিসেবেই দেখছেন। সঙ্গে বিকল্প পারফর্মার তৈরির মঞ্চও মনে করছেন টাইগার কোচ।

রোববার মিরপুরে সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে নামবে দুদল। শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে দুপুর ২টা ৩০মিনিটে শুরু ম্যাচ। শুক্রবার গা গরমের কাজটা করেছে জিম্বাবুয়ে। সেই প্রস্তুতি ম্যাচে বিসিবি একাদশের স্কোয়াডে ছিলেন ওয়ানডে দলে থাকা তিনজন। যার মধ্যে অলরাউন্ডার মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন ভালোই করেছেন বল হাতে, ব্যাটে নামার সুযোগ পাননি দল ৮ উইকেটে জেতায়।

স্টিভ রোডস

আর বয়স ৩০ বছর পেরিয়ে প্রথমবার ডাক পাওয়া ব্যাটসম্যান ফজলে রাব্বি প্রস্তুতির সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি। আরেক পেস-অলরাউন্ডার আরিফুল হক ব্যাটে নামলেও বেশিক্ষণ ব্যাট চালানোর সুযোগ পাননি দল জিতে যাওয়ায়। সেখানে বোলিংয়ে আলো কাড়েন এখনও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক না হওয়া পেসার ইবাদত হোসেন, নেন ৫ উইকেট। আর জাতীয় দলের বাইরে থাকা সৌম্য সরকার করেছেন ঝলমলে সেঞ্চুরি।

ম্যাচে নেতৃত্ব দেয়া সৌম্য খেলেছেন ১০২ রানের অপরাজিত ইনিংস। দলকে জয়ে নোঙর করিয়েই মাঠ ছাড়েন। দুর্দান্ত সেঞ্চুরিটি ১১৪ বলে সাজানো, যাতে ১৩ চারের সঙ্গে আছে একটি ছয়ের মার। সৌম্য ইনিংসটি যথাসময়েই খেলেছেন। কোচ রোডস, স্পিন কোচ যোশি এবং প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন নান্নু মাঠে বসেই দেখেছেন তার ইনিংস। তামিম-সাকিবের অনুপস্থিতিতে যখন প্রতিযোগিতা বাড়ানো আর রিজার্ভ বেঞ্চের শক্তির কথা বলছেন কোচ, তখন সৌম্যর এই কীর্তি গণনায় নেয়ার মতই। সৌম্যর ফেরার অপেক্ষা যে দীর্ঘ হবে না, ম্যাচ শেষে তেমন ইঙ্গিত দিয়ে রেখেছে প্রধান নির্বাচকও।

‘সৌম্য আমাদের চোখের আড়াল হয়নি। ও তো আমাদের ৩০ জনের পুলের মধ্যেই আছে। আমরা একটা প্রসেসের মধ্যে আছি। এই জিম্বাবুয়ে সিরিজের স্কোয়াডে আমাদের কিছু খেলোয়াড়কে দেখতে হচ্ছে। সৌম্য সরকারকে যদি দরকার হয়, সবসময় বলি দেশের জন্য কাউকে দরকার হলে তাকে সবসময় নেয়া হবে। এটা নিয়ে চিন্তিত হওয়ার কিছু নেই। এমন না যে, আমরা একটা প্লেয়ারকে বাদ দিয়ে দিয়েছি বলে ওকে আর ডাকা হবে না। ৩০ জন খেলোয়াড়ের পুলের মধ্যে আছে, যাকে যখন দরকার হবে, তখন তাকেই আমরা সুযোগ দিচ্ছি।’

সৌম্যর প্রতিভা নিয়ে কোনকালেই সন্দেহ ছিল না। জাতীয় দলে আবির্ভাবের সময়েই এমনকিছু ইনিংস খেলে দেন যে, প্রত্যাশাটা আকাশছোঁয়া হয়ে যায়। কিন্তু ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পারেননি এ বাঁহাতি। আর ইনিংস শুরু করেই উইকেট ছুঁড়ে আসার বাতিক বাড়তে থাকে! তাই স্কোয়াডে এই যাওয়া-আসার পরিস্থিতি।

গত এশিয়া কাপের মাঝপথে উড়ে যেয়ে ফাইনালে ৩৩ রানের ছোট কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস খেলেছিলেন সৌম্য। ফিরে জাতীয় লিগের প্রথম রাউন্ডে অপরাজিত সেঞ্চুরি। তৃতীয় রাউন্ডে তো নিজেকেই ছাড়িয়ে যান। দুই ইনিংসে ৭৬ ও ৭১ রানের মাঝে প্রতিপক্ষের পাঁচ উইকেটও তুলে নেন। সৌম্যকে চেনাছন্দে ফিরতে দেখা তাই স্বস্তিরই। পারফরম্যান্স স্বস্তি দিচ্ছে সৌম্যকেও।

‘ছন্দে আছি এমন না। রান করলে তো অবশ্যই ভালো লাগে। চেষ্টা করেছি বেশি সময় ক্রিজে থেকে ব্যাটিং করার। একটা সময় চিন্তা ছিল, বাইরে আছি, দলে ফিরতে ভালো করতে হবে। এখন চেষ্টা করি যে, তেমন কোনো চিন্তা না করেই নিজের খেলাটা খেলতে।’ সৌম্য নিজের খেলাটা খেলতে পারলে তো বাংলাদেশ দলেরই লাভ।