বাজারে নতুন পেঁয়াজের সরবরাহ বাড়ছে। ফলে দাম কমে যাওয়ার কথা। কারণ অন্যান্য বছর পেঁয়াজ মৌসুমের এই সময় দাম কম থাকে। কিন্তু এ বছর এখনও তা দেখা যাচ্ছে না। এমনকি গত সপ্তাহের তুলনায় কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা বেড়েছে। এতে পেঁয়াজ তার মৌসুমে ফিরবে কিনা এমন প্রশ্ন দেখা দিয়েছে ভোক্তা-সাধারণের মনে।
তবে মৌসুমের হিসেবে না কমলেও গত ২০/২৫ দিনের তুলনায় কিছুট কম দামে বিক্রি হচ্ছে পেঁয়াজ।
শুক্রবার রাজধানীর কারওয়ানবাজার, মগবাজার, হাতিরপুলসহ কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, আমদানি ও নতুন উভয় পেঁয়াজের দাম গত শুক্রবারের তুলনায় ১০ থেকে ২০ টাকা বেড়েছে।
বাজারে আমদানি করা ছোট পেঁয়াজের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৩০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ১০০ থেকে ১২০ টাকা। আমদানি করা পেঁয়াজের পাশাপাশি বাজারে আসা নতুন দেশি পেঁয়াজের দামও বেড়েছে। দেশি নতুন পেঁয়াজের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১২০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ৭০ থেকে ৮০ টাকা।
সরকারি বিপণন সংস্থা টিসিবির তথ্যমতেও গত শুক্রবার তুলনায় ১০ থেকে ২০ টাকা বেড়েছে পেঁয়াজের দাম। সংস্থাটির ওয়েবসাইটে দেয়া তথ্যে দেখা গেছে, শুক্রবার আমদানি করা পেঁয়াজের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা থেকে ১২০ টাকায় আর দেশি নতুন পেঁয়াজের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৯০ টাকা থেকে ১১০ টাকায়।
টিসিবির তথ্যমতে, গত বছরের ঠিক এই সময়ে আমদানি করা পেঁয়াজের কেজি বিক্রি হয়েছিল ২০ টাকা থেকে ২৫ টাকায় আর দেশি নতুন পেঁয়াজের কেজি বিক্রি হয়েছিল ২৫ টাকা থেকে ৩৫ টাকায়। সেই হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে আমদানি করা পেঁয়াজ ৩০০ শতাংশ ও নতুন পেঁয়াজ ২৩৩ শতাংশ বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে।
পেঁয়াজের মৌসুমে এই অস্বাভাবিক দামে হতাশ ভোক্তারা। মগবাজার থেকে কারওয়ান বাজারে সবজি কিনতে আসা আব্দুর রহমান বলন, এখন পেঁয়াজের মৌসুম চলছে। নতুন পেঁয়াজ উঠছে। তাই দাম ২০ থেকে ২৫ টাকার মধ্যে থাকার কথা। কিন্তু পেঁয়াজ কিনতে হয় ১২০ টাকায়। এটা খুবই অযৌক্তিক। এখনই যদি দাম ১২০ টাকা হয় তাহলে মৌসুমের পর দাম কত হবে সেটা বড় চিন্তার বিষয়।
কারওয়ান বাজারের ব্যবসায়ী ইদ্রিস আলী বলেন, ২ দিন ধরে পেঁয়াজের দাম আবার বেড়েছে। গত সপ্তাহে নতুন পেঁয়াজের কেজি ৭০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি করেছি। আজ বিক্রি করতে হচ্ছে ১০০ টাকায়। বাজারে পেঁয়াজ কম আসছে। তাই দাম বাড়তি।
তিনি বলেন, যদি কোনো প্রাকৃতিক দূর্যোগ না হয় তাহলে অল্পদিনের মধ্যে নতুন পেঁয়াজের সরবরাহ বাড়বে। তখন দাম কমবে।
তবে পেঁয়াজের সরবরাহ না বাড়লেও শীতের সবজির সরবরাহ বেড়েছে। কিন্তু সবজিতেও তেমন সুসংবাদ দেখা যায়নি। শীত মৌসুমে সবজির দাম কম থাকার কথা থাকলেও চড়া দামেই বিক্রি হচ্ছে।
গত সপ্তাহের দামেই বাজারে খুচরা পর্যায়ে শিমের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকায়। মানভেদে দেশি পাকা টমেটোর কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৮০ টাকা। নতুন গোলআলুর কেজি গত সপ্তাহের মতো ৩০ থেকে ৪০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। বরবটির কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৮০ টাকা। ফুলকপি ও বাঁধাকপি আগের সপ্তাহের মতো ৩০ থেকে ৪০ টাকা পিস বিক্রি হচ্ছে।