দুর্নীতিবাজ ও অর্থ পাচারকারীদের বিরুদ্ধে অবস্থান কঠোর উল্লেখ করে হাইকোর্ট বলেছেন, ‘আমরা আদেশ দিলে পৃথিবীর কোন দেশে গিয়েও অর্থপাচারকারীরা শান্তি পাবে না।’
আলোচিত পি কে হালদারের বিষয়ে জারি করা রুল শুনানির দিন নির্ধারণের আগে মঙ্গলবার বিচারপতি নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী মো: ইজারুল হক আকন্দের হাইকোর্ট বেঞ্চ এই মন্তব্য করেন।
এসময় আদালত বলেন, আমাদের আদেশের কারণেই আজ পি কে হালদার সারাবিশ্বের মানুষের কাছে অর্থ পাচারের অভিযোগে ভিন্নভাবে আলোচিত। এটা ভাবার সুযোগ নেই যে, অন্য দেশে গেলে আমরা তার বিরুদ্ধে আদেশ দিতে পারবো না। আমাদের শুধু অর্থপাচারকারীর অবস্থানটা চিহ্নিত করে দিলেই আমরা তার বিরুদ্ধে আদেশ দিতে পারি। দেশের অর্থপাচারকারী বিষয়ে কোন ছাড় নেই।
এরপর আদালত পি কে হালদারের বিষয়ে জারি করা রুল আগামি ১২ জুন শুনানির জন্য নির্ধারণ করেন। সেই সাথে এই সময়ে মধ্যে পি কে হালদারের মামলাগুলোর অগ্রগতি সম্পর্কে আদালতকে জানাতে দুদকের প্রতি নির্দেশ দেয়া হয়। আজ আদালতে দুদকের পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী খুরশিদ আলম খান। আর রাষ্ট্র পক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক।
গত ১৩ মে এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক ও রিলায়েন্স ফাইন্যান্স লিমিটেডের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রশান্ত কুমার (পিকে) হালদার ও তার কয়েক সহযোগীকে গ্রেপ্তার করে ভারতের ডিরেক্টরেট অব এনফোর্সমেন্ট (ইডি)। পর দিন আদালতের মাধ্যমে তাদেরকে তিনদিনের রিমান্ডে নেয়া হয়।
গ্রেপ্তারের পর ইডি সাংবাদিকদের জানায়, বাংলাদেশ থেকে পশ্চিমবঙ্গে পালিয়ে যাবার পর শিবশঙ্কর হালদার নামে ভারতীয় নাগরিকের সনদ যোগাড় করেন পি কে হালদার। পশ্চিমবঙ্গের নকল রেশন কার্ড, ভোটার আইডি কার্ড, আধার কার্ডও তৈরি করান পি কে।
সংস্থাটি আরো জানায়, পি কে হালদার এবং তার সহযোগীরা পশ্চিমবঙ্গে ব্যাবসা প্রতিষ্ঠানও পরিচালনা করছেন। প্রচুর অর্থ ব্যয় করে কলকাতা মেট্রোপলিটন এলাকায় নকল নাগরিক সনদ দেখিয়ে জমি কিনেছেন।
পিকে হালদার জালিয়াতির মাধ্যমে দেশের কয়েকটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে নামে-বেনামে কয়েক হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ উঠে। এতে ওই প্রতিষ্ঠানগুলো দেউলিয়া হতে বসে এবং গ্রাহকের আমানতের টাকা ফেরত দিতে অপারগতা প্রকাশ করে।
গোপনে দেশ ছাড়ার পর পি কে হালদারের বিষয়ে স্বপ্রণোদিত হয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। পিকে হালদারকে দেশে ফিরিয়ে আনা ও তার গ্রেপ্তারে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে তা জানতে চান উচ্চ আদালত। গত বছরের ৮ জানুয়ারি পি কে হালদারকে গ্রেপ্তারে রেড অ্যালার্ট জারি করে ইন্টারপোল।