ঘটনাটা ছোট মনে হলে বিষয়টা খুবই অবিশ্বাস্য। চুরি ডাকাতি সন্ত্রাসী কার্যক্রম কোনটা বলা যায় তাও চিন্তনীয়। চট্টগ্রামের আকবর শাহ এলাকায় একটি পুরাতন বাড়ির সরঞ্জামাদি বিক্রির কথা চলছিল। অনেক ক্রেতা দেখে যাচ্ছে। এর মাঝে বাড়ির মালিকদের অজান্তে দিন দুপুরে এক দল ব্যক্তি সে বাড়ির দরজা জানালা টিনের চালসহ ঘরের ভিতরে রাখা সব নিয়ে চলে যায়। শুধু বাকি থাকে চারদিকের ওয়াল। আশেপাশের লোকজনকে তাদের সাথে কেনাবেচা হয়েছে বলে মিথ্যা তথ্য দিয়ে এ চুরি করে দিনের বেলাতে। এখন মনে হতে পারে এটা কি এমন ঘটনা। দেশে এর চেয়েও খারাপ ঘটনা ঘটে।
কিন্তু এ ঘটনাকে পুলিশ প্রশাসন ছোট কিছু হয়েছে বলে ধরেনি। একটা দেশে একজনের ঘরের ভিটার মাটি আর দেয়াল রেখে সব নিয়ে যাবার মত অরাজকতা চলতে পারে না। বাড়ির মালিকরা অনেকটাই হতাশ ছিল বিষয়টা নিয়ে। থানা মামলা করে কি হবে এমন চিন্তা আবার সন্ত্রাসীরা যদি কিছু করে মামলা করলে এ ভেবে শঙ্কিত হয়।
আইনি সহায়তা পাওয়া নাগরিকের অধিকার। আর পুলিশ জনসেবা দিয়ে জনগণকে নিশ্চিত জীবন দিতে পারে এ ঘটনাতে তার প্রমাণ দিলো চট্টগ্রামের মাননীয় পুলিশ কমিশনার মো. মাহবুবুর রহমান ও আকবার শাহ থানার পুলিশ বাহিনী। থানাতে মামলা হবার পর সন্দেহ ভাজন আসামিরা বাড়ির মালিকদের নানা ভাবে ফোন দিতে থাকে মামলা তুলে নিতে। কিন্তু পুলিশের আস্থাতে অনড় থাকে বাড়ির মালিক।
বিষয়টিকে পুলিশ কমিশনারের নজরে আনার পর তিনি দ্রুতগতিতে ব্যবস্থা নেন বলে বেরিয়ে আসে কতটা কায়দা করে একটা অপরাধী চক্র মানুষের সাধারণ জীবন যাপনে এমন সংকটময় পরিস্থিতির সৃষ্টি করে।
এ ঘটনাতে পুলিশ বাহিনীর যে প্রচেষ্টা ছিল তা দেখে মনে হলো, পুলিশ চাইলে সব পারে। অপরাধীর হাত যতই লম্বা হোক অন্যায়কে দমন করা সম্ভব।
প্রচলিত একটা প্রবাদ আছে, চোরের বুদ্ধি বেশি না রাজার বুদ্ধি বেশি? এ প্রবাদের রেশ ধরে বলতে হয় আমাদের দেশের পুলিশের বুদ্ধি বেশি। যদি পুলিশ তার ন্যায়, সততা আর পোশাকের ব্রতকে সামনে রেখে কাজ করে তাহলে থানায় গিয়ে মানুষকে হয়রানি হতে হবে না।
বেশির ভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায় থানা বা পুলিশের কাছে যাও মানে টাকা খরচ। কিন্তু বর্তমান সরকার পুলিশ বাহিনীকে গতিশীল করতে তাদের সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি করছে। রয়েছে নানা পরিকল্পনা। এ অবস্থায় পুলিশ সদস্যদের অসাধু উপায়ে টাকা নিয়ে নাগরিকদের হয়রানি করা অন্যায়। কারণ একজন মানুষকে আইনি সহায়তা পেতে হলেই প্রথমে দ্বারস্থ হতে হয় পুলিশের কাছে। সেখানে যদি জিডি থেকে শুরু করে সব বিষয়ে টাকা দিয়ে সেবা পেতে হয় তবে পুলিশের প্রতি মানুষের প্রত্যাশা হয় হতাশাজনক।
পুলিশের প্রতি মানুষের বিরূপ মনোভাবের জায়গাতে পুলিশ কমিশনার মো মাহবুবুর রহমানের মত আরও পুলিশ সদস্যদের এগিয়ে আসতে হবে। পুলিশকে জনগণের বন্ধু হয়ে জনসেবা দেবার মনোরথ নিয়ে কাজ করতে হবে।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জনগণকে সর্বাঙ্গীনভাবে একটা সুস্থ নিরাপদ জীবন দিতে চায়। যা হবে সন্ত্রাস, মাদক, দুর্নীতি মুক্ত সমাজ। আর এ কাজে পুলিশ বাহিনীর ভূমিকা অগ্রগণ্য।
তাই একজন সাধারণ নাগরিক হিসাবে আমাদের প্রত্যাশা শুধু চট্টগ্রামের পুলিশ কমিশনার মো. মাহবুবুর রহমান আর তার বাহিনী নয় বরং সারা দেশের পুলিশ বাহিনী নিয়ে বলতে পারি, ‘ পুলিশ চাইলেই সব পারে, পুলিশ আছে জনগণের পাশে বন্ধু হয়ে।’
(এ বিভাগে প্রকাশিত মতামত লেখকের নিজস্ব। চ্যানেল আই অনলাইন এবং চ্যানেল আই-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে প্রকাশিত মতামত সামঞ্জস্যপূর্ণ নাও হতে পারে।)