চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

পুরান ঢাকা নতুনভাবে গড়ে উঠবে কি?

চকবাজার ট্র্যাজেডির পর যে কথা জোরালোভাবে উচ্চারিত হচ্ছে তা হলো পুরান ঢাকার অবকাঠামোগত পরিবর্তন। একইসঙ্গে কথা উঠছে, সেখান থেকে কেমিক্যাল ব্যবসা অন্য জায়গায় নিরাপদে স্থানান্তরের বিষয়েও।

চুড়িহাট্টায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার প্রায় শুরুর দিকেই ফায়ার সার্ভিসের বেশ কয়েকটি ইউনিট আগুন নেভানোর জন্য আসে। কিন্তু সেখানে বিপত্তি হয়ে দাঁড়ায় সরু গলি। এজন্য ফায়ার সার্ভিসের গাড়িগুলো ভেতরে ঢুকতে পারেনি বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। তারপরেও রাত তিনটার দিকে তারা আগুন নিয়ন্ত্রণে এনেছেন।

এছাড়া অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার শুরু থেকেই পুরান ঢাকায় কেমিক্যাল ব্যবসার প্রসঙ্গ উঠে এসেছে। ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের মহাপরিচালক (ডিজি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আলী আহমেদ খান বলেছেন: ‘চকবাজারের ওই ভবনগুলোতে থাকা একাধিক কারখানার ভেতরে দাহ্য পদার্থ মজুদ ছিলো।’

তার কথার সত্যতাও মিলেছে পুড়ে যাওয়া ওয়াহেদ ম্যানশনের বেজমেন্টে। সেখানে কোটি কোটি টাকার কেমিক্যাল পাওয়া গেছে। সৌভাগ্যবশত: সেখানে আগুন পৌছানোর আগেই তা নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়েছেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। তা না হলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হতে পারতো।

এর পরিপ্রেক্ষিতে শনিবার ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিটে অগ্নিদগ্ধদের দেখতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন: পুরান ঢাকায় আর কোনো কেমিক্যাল ব্যবসা যেন না থাকে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। এছাড়া পুরাতন ঢাকার অলিগলি রাস্তা পরিকল্পনা করে নতুন করে গড়ে তোলার ব্যবস্থা করতে হবে।

প্রধানমন্ত্রীর সময়োপযোগী এ নির্দেশনাকে আমরা স্বাগত জানাই। কারণ, মানুষ বসবাসের কোনো স্থান কখনোই এমন অপরিকল্পিত হতে পারে না। তাই প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অক্ষরে অক্ষরে পালন করে পুরান ঢাকাসহ সমগ্র ঢাকা শহরকে বসবাসের উপযোগী হিসেবে গড়ে তুলতে হবে।

প্রধানমন্ত্রীর আরেকটি বক্তব্য আমাদের ভাবিয়ে তুলছে। তিনি বলেছেন: ‘মালিকরা রাজি না হওয়ায় সেখান থেকে কেমিক্যাল এর গোডাউন বা কেমিক্যাল ব্যবসা সরানো যায়নি। এটা দুঃখজনক।’ এমন ভয়াবহ ট্র্যাজেডির পর সরকার এ বিষয়ে আরও কঠোর হবে বলে আমরা আশা করি। মালিকদের রাজি করে প্রয়োজনে বলপ্রয়োগ করে হলেও পুরান ঢাকা থেকে কেমিক্যালের গোডাউন সরাতে হবে। কারণ, মানুষের জীবনের নিরাপত্তার লক্ষ্যে এছাড়া বিকল্প কোনো পথ খোলা নেই।