তৎকালীন বাংলাদেশ রাইফেলস-বিডিআরের সদর দপ্তর পিলখানায় কথিত বিদ্রোহের নামে অর্ধশতাধিক সেনা কর্মকর্তাকে হত্যা মামলায় হাইকোর্টের রায়ের পর্যবেক্ষণ পড়া শেষ হয়েছে। মূল রায় ঘোষণা শুরু হবে দুুপুর আড়াইটায়।
দ্বিতীয় দিনের রায় ঘোষণার কার্যক্রম শুরুর পর সোমবার সকাল ১০ টা ৫৩ মিনিটে বেঞ্চের কনিষ্ঠ বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার তার রায়ের পর্যবেক্ষণ পড়েন। এরপরই বিচারপতি মো. শওকত হোসেন মূল রায় ঘোষণার জন্য দুপুর আড়াইটায় সময় নির্ধারণ করেন।
আগেরদিন রোববার সকাল ১০ টা ৫৫ মিনিটে রায় বেঞ্চের নেতৃত্বদানকারী বিচারপতি মো. শওকত হোসেন প্রথমে রায়ের সূচনা বক্তব্য উপস্থাপন করেন।
এরপর বেঞ্চের অপর বিচারপতি মো. আবু জাফর সিদ্দিকী তার রায়ের পর্যবেক্ষণ অংশ পড়েন। রোববার বিকেল ৪ টায় কোর্ট শেষ হওয়ার আগে বিচারপতি মো. শওকত হোসেন বলেন, ‘আজকের মত শেষ। সোমবার সকালে বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার তার পর্যবেক্ষণ পড়বেন। পর্যবেক্ষণে আমাদের মতের ভিন্নতা থাকলেও চূড়ান্ত রায়ের ক্ষেত্রে আমরা একমত হয়েছি।’
২০১৫ সালের ১৮ জানুয়ারি হাইকোর্টে এই মামলার শুনানি শুরু হয় গত ১৩ এপ্রিল। তিনশ’ ৭০তম দিনের শুনানি শেষে মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ (সিএভি) রাখা হয়।
২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি তৎকালীন বিডিআর সদর দপ্তরে পিলখানা ট্র্যাজেডিতে ৫৭ সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জন প্রাণ হারান। ওই বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি লালবাগ থানায় হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দুটি মামলা হয়। পরে মামলা দুটি নিউমার্কেট থানায় স্থানান্তর করা হয় এবং মামলার বিচার চলে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের পাশের আলিয়া মাদ্রাসা মাঠ সংলগ্ন অস্থায়ী এজলাসে।
২০১৩ সালের ৫ নভেম্বর ঢাকা মহানগর তৃতীয় বিশেষ আদালতের বিচারক মো. আখতারুজ্জামান এই হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করেন। এটি ছিল দেশের ইতিহাসে আসামির সংখ্যার দিক থেকে সবচেয়ে বড় হত্যা মামলা।
রায়ে বিডিআরের সাবেক ডিএডি তৌহিদসহ ১৫২ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। বিএনপির সাবেক সাংসদ নাসিরউদ্দিন আহমেদ পিন্টু (প্রয়াত), স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা তোরাব আলীসহ ১৬০ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং ২৫৬ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়া হয়। অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় ২৭৭ জনকে খালাস দেন আদালত।
ওই রায়ের পর মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্তদের ‘ডেথ রেফারেন্স’ হাইকোর্টে আসে। সেই সঙ্গে আসামিরা দণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল ও জেল আপিল করেন। বিচারিক আদালতে খালাস পাওয়া ৬৯ জনের রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ।