পাহাড় ধসে প্রাণহানি ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ অন্যান্য বারের চেয়ে এবছর অনেক বেশি এবং বিভিন্ন এলাকা এখনও হুমকির মুখে বলে মনে করছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা। এর কারণ হিসেবে অতিবৃষ্টি সেই সঙ্গে জনগণের অসচেতনতা, পাহাড়ের নিচে-উপরে অবৈধ স্থাপনাকেই দুষছেন তারা। বিষয়টি নিয়ে সরকারি পর্যায়ে থেকে সতর্ক করা হলেও টনক নড়েনি সেখানে বসবাসরতদের।
এবছর পাহাড়ধসে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে রাঙামাটি জেলা। সেখানে গত দুদিনে মৃত্যুবরণ করেছে ৯৮ জন। এর মধ্যে রয়েছেন উদ্ধারকর্মী সেনাসদস্যরাও। বন্ধ হয়ে গেছে রাঙামাটি, বান্দরবন ও চট্টগ্রামের মধ্যে সড়ক যোগাযোগ। বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন, বিশুদ্ধ পানির অভাবে মানবেতর জীবনযাপন করছেন সেখানে বসবাসরতরা।
রাঙামাটি জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ব্রিচারকেতু চাকমা চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, অতিবৃষ্টির কারণে মাটি নরম হয়ে যাওয়ায় ঘটেছে পাহাড় ধসের ঘটনা। প্রাকৃতিক এ দুর্যেোগে ক্ষয়ক্ষতি এবার অনেক বেশি।
পার্বত্য জেলা রাঙামাটিতে নেই কোন সমতল ভূমি। কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার পর সেখানে বাইরের লোকজন এসে পাহাড়ে গড়ে তুলেছেন বসতি। যার কারণে পাহাড় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এসব বিষয় উল্লেখ করে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান জানান, সরকারি যেসব জমি রয়েছে বা স্থানীয়রা যেখানে বসবাস করছেন সেসবও রয়েছে হুমকির মুখে। সরকারি সার্কিট হাউজের পেছনের বিল্ডিংয়ের মাটি সরতে সরতে এমন অবস্থা হয়েছে, যেকোন মুহূর্তে তা ভেঙ্গে পড়বে। ডিসি, এসপি’র বাংলো যে পাহাড়ে সেই পাহাড়েরও অংশবিশেষও ভেঙ্গে পড়েছে।
তবে এবারের পাহাড় ধসে এত বেশি প্রাণহানির কারণ হিসেবে এই জনপ্রতিনিধি বলেন, এর আগে পাহাড় ধসে নিচে যারা বসবাস করে তারা ক্ষতিগ্রস্ত হতো সবচেয়ে বেশি। কিন্তু এবারে সমানভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পাহাড়ের ওপরে থাকা মানুষও। ভারি বর্ষণে মাটি দুর্বল হয়ে বাড়ি ঘর সহ ধসে পড়েছে পাহাড়। আর তার উপর পড়েছে মাটিচাপা। এ কারণেই প্রাণহানির ঘটনা এত বেশি বলে জানান তিনি।
আর এই পাহাড় ধস রোধে সরকারি পদক্ষেপের পাশাপাশি জনগণের সচেতনতাও অনেক বেশি প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি।