ভোজ্য তেল হিসেবে পাম ওয়েলের চাহিদা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। ধারণা করা হচ্ছে আগামী এক দশকের মধ্যে পাম ওয়েলের চাহিদা আরও ৫০ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে। তবে বিশ্বের মোট উৎপাদিত পাম ওয়েলের ৮০ শতাংশই উৎপাদিত হয় মালয়েশিয়া এবং ইন্দোনেশিয়ায়।
পাম গাছের চাষে করে ওই অঞ্চলের কৃষকদের ভাগ্যেও এসেছে পরিবর্তন। আগে সেখানে দরিদ্র লোকের সংখ্যা বেশি ছিলো। এখন ওই সব দেশের যে সকল অঞ্চলে পামের চাষ হচ্ছে সেখান কার কৃষকদের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়েছে।
তবে ভাগ্যের পরিবর্তন যতোই হোক পাম চাষ নিয়ে বিতর্ক বাড়ছেই। এক গবেষণায় দেখা গেছে, পাম গাছের চাষ পরিবেশ বান্ধব নয়। এ চাষের ফলে বিপন্ন হতে পারে বন্য প্রাণী।
পাম চাষ ওই অঞ্চলে এতটাই জনপ্রিয় হয়েছে যে পামকে সোনালী ফসল বলা হচ্ছে। এই পাম হতদরিদ্র কৃষকদের তুলে নিয়ে এসেছে মধ্যবিত্তের কাতারে।
এ প্রসঙ্গে পাম ওয়েল জায়ান্ট সিম ডার্বির সিনিয়র ম্যানেজার খাইরুদ্দিন হাসিম বলেন, অবশ্যই পাম আমাদের জন্য সোনালী ফসল। এই ফসল আমাদের অর্থনীতিতে গতি এনেছে।
আগের দিনে এই সকল স্থানে বন্য প্রাণীদের প্রাচুর্য দেখা গেলেও এখন তা বেশ কমে এসেছে। এ জন্য স্থানীয়রা দায়ী করছে পাম বাগানকে। তাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, আগের দিনে বনের এই অঞ্চলে উল্লুকসহ প্রচুর বন্য প্রাণী থাকলেও এখন তা কমে এসেছে।
পরিবেশবাদী সংগঠন গ্রেট অ্যাপস সার্ভিয়াল পার্টনারশিপের সমন্বয়ক ডাগ ক্রিস এ প্রসঙ্গে বলেন, পাম চাষের ফলে এই অঞ্চলে উল্লুকের পরিমাণ আগের তুলনায় অনেক কমে গেছে। বিশেষ করে উল্লুকসহ অন্যান্য বন্য প্রাণীর বাসস্থান নষ্ট হয়েছে।
পাম চাষের জন্য উজাড় করা হচ্ছে মাইলের পর মাইল প্রাকৃতিক বন। ওই গবেষণায় দেখা গেছে, গত চার দশকে শুধুমাত্র পাম বাগান করার জন্য দেশগুলোর ত্রিশ শতাংশ বন আগুন লাগিয়ে ধ্বংস করা হয়েছে।
তবে পাম গাছ যতোই পরিবেশ বান্ধব না হোক; ইউরোপে দিন দিন পাম তেলর চাহিদা বৃদ্ধি পাচ্ছে। আর পামের বহুমুখী ব্যবহারও এর জনপ্রিয়তার অন্যতম কারণ।
তেলের পাশাপাশি পামের ফল থেকে প্রস্তুত করা হচ্ছে, সাবান-লিপিস্টিক-পাউরুটি এবং কুকুরের খাবার।