সাফ সুজুকি কাপে বৃহস্পতিবার পাকিস্তানের বিপক্ষে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে ১-০ গোলের জয় তুলে নিয়েছে বাংলাদেশ। কোনো অঘটন না ঘটলে গ্রুপ ‘এ’ থেকে জেমি ডের শিষ্যদের সেমিফাইনাল একপ্রকার নিশ্চিত।
টুর্নামেন্টে ‘এ’ গ্রুপে টানা দুই জয়ে ৬ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে আছে বাংলাদেশ। প্রথম ম্যাচে ভুটানকে ২-০ গোলে হারিয়েছে স্বাগতিকরা। গ্রুপপর্বের শেষ ম্যাচে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ নেপাল।
২০০৯ সালে শেষবার এই বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামেই সেমিফাইনালের টিকিট পেয়েছিল বাংলাদেশ। প্রায় দশ বছর পর আরও একবার একই মাঠে শেষ চারের টিকিট প্রায় নিশ্চিত করে ফেলল লাল-সবুজরা।
পাকিস্তান যে কঠিন পরীক্ষা নিতে পারে সে বিষয়ে আগেই সতর্ক করেছিলেন জেমি ডে। ম্যাচের ৯ মিনিটে স্বাগতিক কোচের সতর্কবার্তা প্রায় ফলেই যাচ্ছিল। পাকিস্তানি ফরোয়ার্ড মুহাম্মদ আলির হেড লাফিয়ে কর্নারের বিনিময়ে রক্ষা করেন লাল-সবুজ গোলরক্ষক শহিদুল আলম সোহেল।
দৈহিক লম্বা গড়নের পাকিস্তানিদের কাছে পিছিয়েই থেকেছে বাংলাদেশ। গোলরক্ষক শহিদুল আলম একাধিকবার ত্রাতা না হলে স্পটকিক থেকে অন্তত দুবার এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ তৈরি করেছিল পাকিস্তানিরা।
বাংলাদেশের চেষ্টা ছিল প্রতিপক্ষের বাঁ-প্রান্ত ব্যবহার করে আক্রমণে যাওয়ার। যখনই বল পেয়েছেন সাদ-সুফিলরা, আক্রমণে গিয়েছেন ঠিকই, তবে দলবেঁধে সেসব আক্রমণ প্রতিহত করে দিয়েছে পাকিস্তান।
বিরতি থেকে ফিরে অবশ্য গোছানো ফুটবল খেলার চেষ্টা করেছে বাংলাদেশ। কিন্তু ডিফেন্ডারদের ভুলে আরও একবার স্বাগতিকদের প্রায় কাঁপিয়ে দিচ্ছিল পাকিস্তানিরা। ৫৫ মিনিটে টুটুল হোসেন বাদশার ভুলে মুহাম্মদ আলির নেয়া জোরাল শট লাফিয়ে কর্নারের বিনিময়ে ফিরিয়েছেন লাল-সবুজ গোলরক্ষক সোহেল।
তিন মিনিট পরেই ম্যাচে গোলের প্রথম সুযোগ আসে বাংলাদেশের সামনে। ৫৮ মিনিটে ডি-বক্সের বাইরে থেকে বিপলু আহমেদের নেয়া শট অবশ্য পাকিস্তানি গোলরক্ষক ফিরিয়ে দিয়ে হতাশ করেন স্বাগতিকদের।
এরপর বাকিটা সময় যতটা না হয়েছে মাঠের খেলা, তার চেয়ে বেশি খেলা জমিয়েছে উত্তেজনা। দুদলই চেষ্টা করেছে একে অপরের প্রাধান্য বিস্তার করে আক্রমণ গড়ার। সঙ্গে উত্তেজনায় দুদলের খেলোয়াড়রা জড়িয়েছেন হাতাহাতিতেও।
এমন উত্তেজনার মধ্যে যখন গোলশূন্য ড্রই মনে হচ্ছিল খেলার ফল, তখনই ফেরে বাংলাদেশ। ৮৫ মিনিটে বিশ্বনাথ ঘোষের থ্রো পাকিস্তানের ডি-বক্সে পড়লে সৃষ্টি হয় জটলার। জটলার মধ্যে থেকে মাথা ছুঁয়ে লাল-সবুজদের জয়সূচক গোলটি এনে দেন ডিফেন্ডার তপু বর্মণ।
তপু গোলের পর করেছেন জার্সি খোলা উদযাপন। দেখেছেন হলুদ কার্ড। অবশ্য যে গোলে তিন আসর পর সেমির পথে বাংলাদেশ, সেই গোলের পর উদ্যাম উদযাপনে হলুদ কার্ড দেখলে কিইবা আসে যায়!