চলতি মৌসুমের শুরুতে যখন চাইনিজ লিগ থেকে বার্সেলোনাতে নাম লেখান, তখন পাউলিনহোকে নিয়ে বয়ে যায় হাসি-ঠাট্টার জোয়ার। তবে ৪০ মিলিয়ন ইউরোর এ ব্রাজিলিয়ান মিডফিল্ডারকে নিয়ে কথা বলতে এখন বারকয়েক ভাবতে হয় সমালোচকদের। একসময় টটেনহ্যাম থেকে ছুঁড়ে ফেলা পাউলিনহো নিজেকে প্রমাণ করে চলেছেন বার্সার গুরুত্বপূর্ণদের একজন হিসেবেই।
মৌসুমের শুরুতে পিএসজি থেকে মার্কো ভেরাত্তিকে না আনতে পেরে পাউলিনহোকে ন্যু ক্যাম্পে নিয়ে আসেন বার্সা কর্তারা। চাইনিজ লিগ থেকে ২৯ বছর বয়সী একজনকে ৪০ মিলিয়ন ইউরোয় কেনা, কারোরই পছন্দ হয়নি শুরুতে।
স্প্যানিশ সুপার কাপে রিয়াল মাদ্রিদের কাছে ৫-১ গোলে হারার পর পাউলিনহোর পা পড়ে ন্যু ক্যাম্পে। নেইমারকে হারিয়ে তখন শোকে কাতর কাতালানরা! এমন সময়েই পাউলিনহোর আগমন, বিক্রি হয়নি তার নামে খচিত একটি জার্সিও। প্রথমবার তাকে স্বাগত জানাতে ন্যু ক্যাম্পে হাজির হয়েছিলেন সর্বসাকুল্যে ২ হাজার সমর্থক।
সেই পাউলিনহোই এখন বার্সা আক্রমণের অন্যতম প্রাণশক্তি। মিডফিল্ডার হয়েও খেলতে পারেন ফরোয়ার্ড পজিশনে। কোচ আর্নেস্টো ভালভার্দের ছকে মূলত ছায়া ফরোয়ার্ড হিসেবেই খেলানো হয় তাকে। আস্থার প্রতিদানও দিয়ে চলেছেন। মেসি-সুয়ারেজদের পর ৮ গোল করে গোলদাতার তালিকায় তিনে অবস্থান পাউলিনহোর।
এই পাউলিনহোকেই ২০১৫ সালে একপ্রকার বের করে দিয়েছিল টটেনহ্যাম হটস্পার। প্রিমিয়ার লিগের শক্তিনির্ভর ফুটবলে খাপ খাইয়ে নিতে না পারায় চলে যান চীনে। গুয়াংজু এভারগ্র্যান্ডের হয়ে খেলেছেন পরের সময়টা।
ইউরোপিয়ান ফুটবলে জায়গা না হলেও পাউলিনহোকে ঠিকই জাতীয় দলে খেলান ব্রাজিল কোচ টিটে। তার প্রতিদানও দিয়েছেন। বিশ্বকাপ বাছাইয়ে টানা পাঁচ ম্যাচে করেছেন গোল। তাতে খুলেছে বার্সার দরজা।
ফিরে বার্সার জীবনকে তুলনা করেছিলেন নিজের দ্বিতীয় জীবন হিসেবেই। নতুন জীবনে ভালভাবেই খাপ খাইয়ে নিয়েছেন। মঙ্গলবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ ষোলোর প্রথম লেগে চেলসির মুখোমুখি হওয়ার আগে ভালভার্দের অন্যতম ভরসার নামে থাকছেন পাউলিনহো। ইনিয়েস্তা, রাকিটিচ, বুস্কেটসদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে খেলছেন বলেই এমন প্রাপ্তি।
প্রিমিয়ার লিগে আগে খেলার অভিজ্ঞতা থাকায় চেলসির বিপক্ষে ভালভার্দের তুরুপের তাসের একজনও তাই পাউলিনহো, ‘ও(পাউলিনহো) একটু অন্যরকম। ভিন্নভাবে দৌড়ায়। ও দারুণ কার্যকর। কারণ নিজের উপর ভীষণ বিশ্বাস। মেসি ও সুয়ারেজের সঙ্গে সে ভালভাবে খাপ খেয়ে যায়।’
সেটাই আবার ভাবনার কারণ ব্লুজদের। অভিজ্ঞতার কারণেই পাউলিনহোকে নিয়ে ভীষণ সতর্ক চেলসি। পাউলিনহো নিজেও প্রস্তুত। যে প্রিমিয়ার লিগ তাকে ছুঁড়ে ফেলেছিল, সেই লিগের বর্তমান চ্যাম্পিয়নদের বিপক্ষে নিজেকে প্রমাণ করার তাগিদ তার। যাতে ইংল্যান্ডের কেউ আগামীতে আর তাকে নিয়ে হাসি ঠাট্টায় মাততে না পারে।