রোনালদো খেললেন। একদম সাদামাটা নয়। কিছুটা তেজ নিয়ে। কখনো কখনো হারিয়ে গেলেন। একটা গোল করালেন। তবু দলকে জেতাতে পারলেন না। কনফেডারেশন্স কাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে মেক্সিকোর বিপক্ষে ২-২ গোলে ড্র করেছেন তারা।
পর্তুগাল এদিন ৪-৩-৩ ফর্মেশন নিয়ে খেলতে নামে। মেক্সিকোও তাই। রোনালদোকে মাঝে রেখে ডান পাশে ন্যানি। বাঁ-দিকে ছিলেন কুয়ারেসমা। পর্তুগালের পরের ম্যাচ রাশিয়ার বিপক্ষে, ২১ জুন।
রোনালদোরা বলার মতো আক্রমণে যায় ১৯ মিনিটের দিকে। ডি-বক্সের বাইরে কুয়ারেসমাকে ফেলে দেন মেক্সিকান ফরওয়ার্ড কুয়াদ্রাদো। রেফারি ফাউলের বাঁশি বাজালে শট নিতে আসেন রোনালদো। তার দুর্বল শট মেক্সিকোর মানবদেয়ালে লেগে ফিরে আসলে বল পান ন্যানি। মাটি কামড়ানো শটে জাল খুঁজে নেন। উল্লাসে মাতে পর্তুগাল। কিন্তু মাঠের রেফারি ভিডিও রেফারির সঙ্গে আলাপের পর জানিয়ে দেন পেপে অফসাইড ছিলেন।
ম্যাচের ২৫ মিনিট পর্যন্ত মেক্সিকোর মিডফিল্ডাররা পর্তুগালের অর্ধে দারুণ নিয়ন্ত্রণ রেখে পাস দিতে থাকেন। কিন্তু বড় আক্রমণে যেতে ব্যর্থ হন।
পরে ৩৪তম মিনিটে গা ঘেঁষে থাকা ডিফেন্ডার সালসেদোকে বোকা বানিয়ে এরিয়াল বল টোকা দিয়ে সামনে নেন রোনালদো। সালসেদো ডজ খাওয়ায় রোনালদো অনেকটা ফাঁকায় চলে আসেন। চকিতে দৌড় শুরু করে তিনজনকে কাটিয়ে বল নিয়ে বক্সে ঢুকে পড়েন। ততক্ষণে রক্ষণ জমাট বেঁধে যায়। বাঁ-দিক থেকে উঠে আসেন কুয়ারেসমা। রোনালদো তাকে চোখে রেখেছিলেন। বল ছেড়েও দেন। অরক্ষিত কুয়ারেসমা প্রথম টাচে শট না নিয়ে গোলরক্ষককে ডজ দেন। তারপর দ্বিতীয়বারের আলতো টোকায় জালে পাঠান।
আট মিনিট বাদে খেলায় ফিরে আসে মেক্সিকো। বাঁ-উইং থেকে লাউন চিপ পাঠান ভিলার সামনে। বক্সের ভেতর ওই জায়গায় পর্তুগিজ ডিফেন্ডার রাফায়েল ছিলেন। বলের দিকে পা উঁচু করেও গতি পরিবর্তন করতে পারেননি। নিচ দিয়ে চলে যায় ভিলার সামনে। ভিলা বলের নিচে টোকা দিয়ে তুলে দেন হার্নান্দেজের সামনে। বল কিছুটা দূরে ভাসতে থাকায় হার্নান্দেজ পাখির মতো উড়ে হেড দেন। তাতেই সমতা!
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে মাঝমাঠে শক্তি বাড়াতে যেয়ে কিছুটা এলোমেলো হয়ে পড়ে পর্তুগাল। অন্যদিকে লম্বা পাসে মন দিয়ে আক্রমণ শানাতে থাকে মেক্সিকো।
এরপর সময় যত বাড়তে থাকে, তত অগোছালো ফুটবল খেলতে থাকে দুই দল।
ম্যাচের ৭৫ মিনিটের পর থেকে পর্তুগাল কিছুটা পাসিংয়ে মন দেয়। ৮৪তম মিনিটে পর্তুগালের বদলি খেলোয়াড় সিলভা দারুণ একটি হেড করেও গোলের দেখা পেতে ব্যর্থ হন।
পরের মিনিটে ডিফেন্ডার সেডরিক বক্সের জটলা থেকে গোল করে পর্তুগালকে এগিয়ে দেন। মাঝ মাঠ থেকে আসা বল মেক্সিকোর সান্তোস পা দিয়ে দখল নিতে যেয়ে সেডরিকের কাছে তুলে দেন। সেডরিকের নির্ভুল পা বল জালে জড়াতে এতটুকু দেরি করেনি।
দুই মিনিট বাদে আবার ম্যাচে ফেরে মেক্সিকো। মরেনো হেরেরা জীবন বাজি রাখা এক হেডে দলকে উল্লাসে ভাসান। কর্নার থেকে উড়ে আসা বলে চোখ রেখে লাফিয়ে ওঠেন, তাকে মার্কে রাখেন জস ফন্টে। এক হাত দিয়ে জার্সি ধরে ছিলেন। হেরেরা নিজের ভারসাম্য ঠিক রেখে মাথার পাশ দিয়ে বল জালে পাঠান। ভেঙে যায় পর্তুগালের পূর্ণ পয়েন্টের আশা!