ছোট থেকেই বই পড়ার পোকা ছিলেন নায়ক সিয়াম। তার বাবা কম্পিউটার কিনে দিতে দ্বিধা করলেও কখনোই বই কিনে দিতে আপত্তি করতেন না। তখন অনেক বইয়ের মধ্যে মুহম্মদ জাফর ইকবালের
লেখা ‘আমি তপু’ পড়ে একা একা কেঁদেছিলেন তিনি। সেই সময় থেকে তার স্বপ্ন ছিল, বইটি যিনি লিখেছেন তাকে একবার ছুঁয়ে দেখবেন!
সিয়ামের শৈশবের সেই স্বপ্ন যেন এবার আরও বড় পরিসরে সত্যি হলো। কারণ, মুহম্মদ জাফর ইকবালের লেখা উপন্যাস ‘রাতুলের রাত রাতুলের দিন’ অবলম্বনে নির্মিত হতে যাওয়া চলচ্চিত্র ‘অ্যাডভেঞ্চার অব সুন্দরবন’-এর কেন্দ্রিয় রাতুল চরিত্রে অভিনয় করতে যাচ্ছেন। যেখানে বাড়তি চমক হিসেবে যোগ দিলেন হালের আলোচিত চিত্রনায়িকা পরীমনি।
তিনি নিজেও কাজটি নিয়ে উচ্ছ্বসিত হয়ে বললেন, সুন্দরবনে ঘুরতে যাওয়ার অনেকবার পরিকল্পনা করলেও নানা কারণে যাওয়া হয়নি। সেখানে গিয়ে অ্যাডভেঞ্চার করার ইচ্ছে ছিল। এবার শুটিংয়ের মাধ্যমে আমার প্রথমবার সুন্দরবন যাওয়া হবে, সেই সঙ্গে অ্যাডভেঞ্চারের স্বাদ পূরণ হবে।
সোমবার সন্ধ্যায় রাজধানীর বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে ‘অ্যাডভেঞ্চার অব সুন্দরবন’ চলচ্চিত্রের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয়া হয়। সেখানে সিয়াম-পরীমনি দুজনেই তাদের বক্তব্যে এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন মুহম্মদ জাফর ইকবাল, মুশফিকুর রহমান মনজু, কচি খন্দকারসহ একঝাঁক শিশুশিল্পী।
সিয়াম বলেন, স্কুলে পড়াকালীন মুহম্মদ জাফর ইকবালকে একবার বনভোজনে পেয়েছিলাম। তাকে একবার ছুঁতে চেয়েছিলাম। কিন্তু সেদিন পারিনি, আজ সেই ছুঁতে চাওয়ার স্বপ্ন আরও বড়কিছু দিয়ে সত্যি হতে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, স্বপ্ন সত্যি করা সম্ভব। কেউ কি বললো কিছু না ভেবে নিজের স্বপ্নকে সত্যি করার জন্য কাজ করলে সেই স্বপ্ন একদিন সত্যি হবেই। চলচ্চিত্রে আমি অল্পদিন। ছোটরাও অনেককিছু পারে। উদাহরণ হলো, সদ্য অনুর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপে বাংলাদেশর বিশ্বকাপ জয় লাভ।
সরকারী অনুদান এবং বঙ্গবিডির সহ-প্রযোজনায় জাফর ইকবালের শিশুতোষ উপন্যাস অবলম্বনে ‘অ্যাডভেঞ্চার অব সুন্দরবন’ নির্মাণ করতে যাচ্ছেন আবু রায়হান জুয়েল, চিত্রনাট্য করছেন জাকারিয়া সৌখিন।
অন্যান্য চরিত্রে আরও থাকছেন শহীদুল আলম সাচ্চু, আজাদ আবুল কালাম, মুনিরা মিঠু, কচি খন্দকার, আশিষ খন্দকারসহ ১৮ জন শিশুশিল্পী।
প্রযোজক মুশফিকুর রহমান মনজু জানান, ইতোমধ্যে শিশুশিল্পীদের অভিনয় নিয়ে কর্মশালার আয়োজন করা হয়েছে। জাফর ইকবাল স্যার চলচ্চিত্রের জন্য জীবনের প্রথম গানও লিখছেন। তিনি বলেন, মৌলিক গল্পের তীব্র সংকটের মধ্যে স্যারের মতো জনপ্রিয় একজন লেখকের গল্প নিয়ে চলচ্চিত্রে কাজ করতে পেরে আমরা আনন্দিত।
পরিচালক আবু রায়হান জুয়েল বলেন, ১৩ মার্চ থেকে ‘অ্যাডভেঞ্চার অব সুন্দরবন’ চলচ্চিত্রের শুটিং শুরু হবে। ঢাকা, মংলা, চাঁদপুর, বরিশালের বিভিন্ন নদীপথে শুটিং হবে।
ছবি: জাকির সবুজ