চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

পরীমনির রিমান্ড: দুই বিচারকের ব্যাখ্যা চেয়েছেন হাইকোর্ট

মামলার তদন্ত কর্মকর্তাকে তলব

কোন তথ্য-উপাত্তের ওপর ভিত্তি করে চিত্রনায়িকা পরীমনির দ্বিতীয় ও তৃতীয় দফার রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়েছে সে বিষয়ে নিম্ন আদালতের দুই বিচারকের কাছে ব্যাখ্যা চেয়েছেন হাইকোর্ট।

আগামী ১০ দিনের মধ্যে তাদের এই ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে। ব্যাখ্যা সন্তোষজনক না হলে তলব করা হতে পারে বলে উল্লেখ করেছেন হাইকোর্ট। এছাড়া মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডি পুলিশের পরিদর্শক কাজী গোলাম মোস্তফাকে আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর মামলার নথিসহ (কেস ডকেট)  আদালতে হাজির হতে বলা হয়েছে। পরীমনির তিন দফা রিমান্ডে নেওয়ার বিষয়ে তার অবস্থান সেদিন হাইকোর্টকে জানাতে হবে।

পরীমনিকে বারবার রিমান্ডে নেয়ার বৈধতা প্রশ্নে স্বতঃপ্রণোদিত রুল জারির আবেদনের শুনানিতে বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি কে এম জাহিদ সারওয়ার কাজলের ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ বৃহস্পতিবার এই আদেশ দেন।

আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী জেড আই খান পান্না ও সৈয়দা নাসরিন। আর রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আবু ইয়াহিয়া দুলাল ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মো: মিজানুর রহমান।

গত ৩১ আগস্ট পরীমনিকে জামিন দেন বিচারিক আদালত। এর আগে বনানীতে পরীমনির বাসায় অভিযান চালিয়ে ৪ আগস্ট তাকে আটক করা হয়। পরে বনানী থানায় পরীমনির নামে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করে র‍্যাব। এরপর তিন দফায় পরীমনিকে মোট সাত দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। ১৯ আগস্ট পরীমনির জামিন আবেদন নাকচ করেন ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালত। এই আদেশের বিরুদ্ধে ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতে জামিন আবেদন করলে আদালত ১৩ সেপ্টেম্বর শুনানির জন্য রাখেন।

তবে পরদিন জামিন আবেদন দ্রুত বা নির্ধারিত সময়ের আগে শুনানি চেয়ে আবেদন করেন পরীমনির আইনজীবী। এতে সাড়া না পেয়ে গত ২২ আগস্টের ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতের আদেশের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে এবং অন্তর্বর্তীকালীন জামিন চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেন পরীমনি। সেই আবেদনের শুনানি নিয়ে বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি কে এম জাহিদ সারওয়ারের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রুল জারি করেন। এই রুলে পরীমনির জামিন আবেদনটি কেন দুই দিনের মধ্যে নিস্পত্তি  করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়। এছাড়া রুলে পরীমনির জামিন শুনানি ১৩ সেপ্টেম্বর নির্ধারণ করে গত ২২ আগস্টে বিচারিক আদালতের দেয়া আদেশ কেন বাতিল করা হবে না তাও জানতে চান। এবং এই রুল শুনানির জন্য ১ সেপ্টেম্বর দিন ধার্য করেন হাইকোর্ট।

অন্যদিকে পরীমনিকে লাগাতারভাবে রিমান্ডে নেওয়ার বৈধতা প্রশ্নে স্বপ্রণোদিত রুল চেয়ে গত রোববার হাইকোর্টে আবেদন করে মানবাধিকার ও আইনি সহায়তাকারী সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)। পরীমনিকে আদালতে হাজির করা ও রিমান্ডে নেওয়ার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ আদালতের আদেশ অনুসরণ করা হয়নি উল্লেখ করে আইনজীবী জেড আই খান পান্না আদালতকে স্বতঃপ্রণোদিত আদেশ দেওয়ার কথা বলেন।

গতকাল বুধবার এসংক্রান্ত শুনানিতে হাইকোর্ট বলেন, ‘রিমান্ডের উপাদান ছাড়া তদন্ত কর্মকর্তা প্রার্থনা দিল, আপনি (ম্যাজিস্ট্রেট) মঞ্জুর করে দিলেন। এগুলো কোনো সভ্য সমাজে হতে পারে না। রিমান্ড অতি ব্যতিক্রমী বিষয়।’