যেখানে-সেখানে রাস্তা নির্মাণ বন্ধে সারাদেশে পরিকল্পিত উপায়ে রাস্তা নির্মাণে মাস্টারপ্ল্যান করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
বুধবার অনলাইনে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির ২৩তম সভা শেষে তিনি এই কথা বলেন।
অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘দেখা গেলো তিন কিলোমিটার জায়গা বাঁচাতে গিয়ে পুরো রাস্তা ফসলি জমি দিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। এজন্য সারা দেশে একটি মাস্টারপ্ল্যান তৈরি করা হবে।’
‘‘বর্তমানে দেশে কী পরিমাণ রাস্তা আছে, আর আগামী ১০, ২০ বা ৫০ বছরে কত রাস্তা করতে হবে এ মাস্টারপ্ল্যানে সেগুলো থাকবে। এ মাস্টারপ্ল্যান করার জন্য আজ কমিটির বৈঠক থেকে ঘোষণা দেয়া হয়েছে।’’
তিনি জানান, আজকের সভায় ক্রয় অনুমোদনের জন্য মোট ৪টি প্রস্তাব এবং বাতিলের জন্য ১টি প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়েছে। ৪টি প্রস্তাবের অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
এতে মোট অর্থ লাগবে ৩৩৪ কোটি ৪০ লাখ ৬১ হাজার ৩৮৩ টাকা। মোট অর্থায়নের মধ্যে জিওবি হতে ব্যয় হবে ২২৯ কোটি ২৩ লাখ ১৯ হাজার ৮০৪ টাকা এবং ঋণের পরিমাণ বিশ্বব্যাংক এবং দেশীয় ব্যাংক হতে ১০৫ কোটি ১৭ লাখ ৪১ হাজার ৫৭৯ টাকা।
গতকাল মঙ্গলবার একনেক সভায় সারাদেশে রাস্তা নির্মাণে সতর্ক থাকার নির্দেশনা দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই নির্দশনাকে আরো জোরদার করতেই মাস্টারপ্লান করা হচ্ছে বলে জানান অর্থমন্ত্রী।
মুস্তফা কামাল বলেন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন ‘ঢাকা সিটি নেইবারহুড আপগ্রেডিং প্রোজেক্ট (ডিসিএনইউপি)’ প্রকল্পের জন্য ৫টি পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়োগ দিয়েছে সরকার।
পরামর্শ প্রতিষ্ঠানগুলো হলো- দোহা ইঞ্জিনিয়ারিং কো. লিমিটেড, জাংগলিম আর্কিটেক্ট কো. লিমিটেড কোরিয়া, দেব কনসালটস লিমিটেড বাংলাদেশ, ডিজাইন প্ল্যানিং অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট প্ল্যানিং লিমিটেড এবং তানিয়া করিম এন আর খান অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটসের ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়। এতে ব্যয় হবে ৪৩ কোটি ৯৫ লাখ ৭০ হাজার ৬৪২ টাকা।
সভায় সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের দুটি প্রস্তাব ছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, দুটি প্রস্তাবই অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে ঝিনাইদহ-কুষ্টিয়া-পাকশী-দাশুরিয়া জাতীয় মহাসড়কের কুষ্টিয়া শহরাংশ ৪ লেনে উন্নীতকরণসহ অবশিষ্টাংশ যথাযথ মানে উন্নীতকরণ প্রকল্পের পূর্ত কাজ সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠান জহিরুল লিমিডেটকে দেয়া হয়েছে। এতে ব্যয় হবে ১৪১ কোটি ২৫ লাখ ৭৭ হাজার ৬০৪ টাকা।
এছাড়া সভায় সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের অপর প্রস্তাবে ‘শরীয়তপুর (মনোহর বাজার)-ইব্রাহিমপুর ফেরীঘাট পর্যন্ত সড়ক উন্নয়ন’প্রকল্পের পূর্ত কাজ সম্পাদনে ১টি মাত্র দরপত্র জমা পড়ায় ক্রয় প্রস্তাবটি বাতিলের জন্য উত্থাপন করা হলে বাতিল করে দেয়া হয়েছে। আর নতুনভাবে ক্রয়কার্য পুনঃপ্রক্রিয়া করে নতুন প্রস্তাব পাঠানোর জন্য বলা হয়েছে। প্রস্তাবটির ব্যয় ধরা হয়েছিল ১০৫ কোটি ৮৩ লাখ ৮২ হাজার ১০৭ টাকা।
সভায় অনুমোদিত প্রস্তাব
শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশনের অধীন ডিএপি ফার্টিলাইজার কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএপিএফসিএল) জন্য ৩০ হাজার টন ফসফরিক এসিড আমদানির অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এতে ব্যয় হবে ৮৭ কোটি ৯৭ লাখ ৪২ হাজার ২০০ টাকা।
এছাড়া শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশন (বিসিআইসি) কর্তৃক মুনতাজাত, কাতার হতে ২৫ হাজার টন (১০%+) ব্যাগড গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার ৬১ কোটি ২১ লাখ ৭০ হাজার ৯৩৭ টাকায় ক্রয়ের অনুমোদন দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী।