চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

পরামর্শক কমিটির পরামর্শও মানতে হবে

করোনাভাইরাস সংক্রমণে দেশে দেড় বছরের বেশি সময় ধরে বন্ধ থাকার পর আগামী ১২ সেপ্টেম্বর থেকে প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো খুলে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে সরকার। বেশির ভাগ মানুষই সরকারের এই সিদ্ধান্তে আনন্দিত। তবে এই খুশির মধ্যেও চিন্তার ভাঁজ পড়েছে তাদের কপালে। কারণ সংক্রমণ কমলেও তা পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসেনি।

এমন পরিস্থিতির মধ্যে বেশ পরামর্শ দিয়েছে করোনাভাইরাস সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি। সোমবার তাদের এক সভায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার আগে অন্তত ৮০ শতাংশ শিক্ষক ও কর্মচারীকে ভ্যাকসিন দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এর বাইরে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে স্বাস্থ্যবিধির বেশ কিছু বিষয় তুলে ধরে তা বিবেচনার করতে সরকারকে অনুরোধ জানিয়েছে।

বিশেষ করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর ক্যাফেটারিয়া, ডাইনিং, স্পোর্টস রুমসহ যেসব স্থানে শিক্ষার্থী সমাবেশ বেশি হয়- সেগুলো বন্ধ রাখা। এছাড়াও সবাইকে মাস্ক পরা নিশ্চিত করার পাশাপাশি হাত ধোয়া, জীবাণুমুক্তকরণ স্টেশন স্থাপন-সহ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরামর্শ মেনে চলার ক্ষেত্রে একটি ‘স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর (এসওপি)’ তৈরি করতে বলা হয়েছে।

যদিও দেশের মানুষ এরই মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ক্ষেত্রে একরকম অভ্যস্ততা অর্জন করেছে। এমনকি সামাজিক দূরত্ব মেনে চলতেও মানুষ এখন অনেক সচেতন। তারপরও ছোট ছোট শিক্ষার্থী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এসে তা কতটা মেনে চলবে, সেটা নিয়ে সংশয় থেকেই যায়। সেক্ষেত্রে কারিগরি কমিটি সঠিক পরামর্শই দিয়েছে বলেই আমরা মনে করি।

আমরা জানি, শিক্ষার্থীরা খুব ঘনিষ্ঠভাবে তাদের সহপাঠীদের সঙ্গে মেলামেশা করে। সেক্ষেত্রে তাদের কেউ একজন আক্রান্ত থাকলে পুরো শ্রেণিকক্ষে, এমন কি পুরো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেই করোনা ছড়িয়ে পড়তে পারে। তাই মাস্ক পরে থাকার ক্ষেত্রে গুরুত্ব দিয়েছে কমিটি। কারণ করোনার বিরুদ্ধে এমন পদক্ষেপের কোনো বিকল্প নেই।

সব কথার বড় কথা, শিক্ষার্থী, অভিভাবক এবং শিক্ষক-কর্মচারীরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার আনন্দে আত্মহারা হয়ে যেন এসব বিধিনিষেধ ভুলে না যান। এরই মধ্যে ইউরোপের একাধিক দেশে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার পর সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় আবার তা বন্ধ করে দিতে হয়েছে। তাই ‘স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর’ বা এসওপি মেনে চলার ক্ষেত্রে খুব সচেতন থাকতেই হবে। প্রয়োজনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে বিষয়টিতে তদারকির দায়িত্বে রাখা যেতে পারে।

আমরা মনে করি, করিগরি কমিটির এসব পরামর্শ সময়োপযোগী এবং বাস্তবভিত্তিক। আমাদের সবাইকে তা মেনে চলতেই হবে। এতে করোনাভাইরাস থেকে রক্ষার পাশাপাশি শিক্ষাজীবনও স্বাভাবিক অবস্থায় ফেরাতে বড় ভূমিকা রাখবে।