চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

পরজনমেও অসামাজিক জীব হয়ে শান্তিতে থাকতে চাই

এক
এই শহরে আমি যে একটা ভীষণ রকমের অসামাজিক জীব-এরকম সার্টিফিকেট আমার সম্পর্কে আমার ঘোর শত্রুরাও নির্দ্বিধায় দিয়ে দেবে এতে কোনো সন্দেহ নেই। তাতে আমার কোনো খেদও নেই।
আমি শুধু আমার এ জীবনে না পরবর্তী জীবনেও কায়মনোবাক্যে অসামাজিক জীব হয়ে সুখে শান্তিতে থাকতে পছন্দ করি। এভাবে থাকতে পারার মধ্যে সুবিধা অনেক। আমি বিশ্বাস করি যত কম মানুষের সাথে মিশতে পারা যায় ততই আনন্দ, ততই মঙ্গল। বেশি মানুষের সাথে মেশা মানে বেশি বেশি কথা বলা।
মুখে ফেনা তুলে অযথা আজাইরা প্যাঁচাল পারা।
কখনো কখনো এই বেশি কথা বলার ভেতর দিয়ে মিথ্যে কথার ফুলঝুরি তুলতে হয়।
ওসব টালি-বালি আমার না পছন্দ।
আমি সেসবের মধ্যে নেই।
আমি নির্বিকারভাবে কম মানুষের সঙ্গে মেলামেশা করি কিন্তু সারাদিন কত কত মানুষের মুখ যে আমি পড়ি!
পড়ি!
হ্যাঁ,পড়িই তো!
খুব অল্প বয়সে বাবা-মা মারা যাবার পর আমার ছোটবেলাটা কেটেছে নিদারুণ এক পরিবেশে যেখানে সবার মুখেই ছিল বাহারি রকমের মুখোশ।
সেই তখন থেকে আমার যে সীমাহীন মানুষের মুখ পড়া শুরু হয়েছিল তা আজ অবধি শেষ হয়নি। হয়ত এ জীবনে আর শেষও হবে না। তারপরও আমি মানুষের মুখ পড়ি। মানুষের এই মুখ পড়তে পারার মধ্যে আমি এক ধরনের অনির্বচনীয় আনন্দ উপভোগ করি।

দুই
বছর বিশেক আগে একদিন আমি আমার এই ‘মুখ পড়া’র বিষয়টা মহাত্মা ধ্রুব এষকে (আমি তাঁকে এই নামেই ডাকি) বলেছিলাম। তিনি আমার মুখে মুখ পড়া’র কথা শুনে আমার দিকে অপলক তাকিয়ে থাক্লেন কিছুক্ষণ। সেদিন আর কোনো কথা বলেন নি তিনি।
তারপর তিনি আমার লেখক পরিচিতি লিখতে গিয়ে সেখানে একথার উল্লেখ করেছিলেন,’ লেখক হিসেবে বই পড়ার চেয়ে মানুষের মুখ পড়াকে গুরুত্ব দেন বেশি…’