নেপালে ভূমিকম্পে এখন পর্যন্ত ২৫শ’র বেশি মানুষের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। আহত হয়েছে আরও সাড়ে চার হাজারেরও বেশি মানুষ।এই ঘটনার পর দেশটিতে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে সাহায্য চাওয়া হয়েছে।
শনিবার সকাল থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত কমপক্ষে ১৪ বার ভূমিকম্প অনুভূত হয়। এরমধ্যে সবচেয়ে তীব্র ছিলো দুপুরের দিকে ৭.৯ মাত্রায়। মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ প্রতিষ্ঠান (ইউএসজিএস) জানিয়েছে, ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল নেপালের পোখারা থেকে ৮০ কিলোমিটার পূর্বে লামজুমে।
দক্ষিণ এশিয়াজুড়ে ভূমিকম্পে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে ‘হিমালয়কন্যা’ নেপাল। দেশটিতে ৮১ বছরের মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী মাত্রার ভূমিকম্পে নিখোঁজ রয়েছে আরো অনেক মানুষ। এভারেস্টের বেসক্যাম্পে বরফ ধসে ১০ পর্বতারোহীর মৃত্যু হয়েছে।
নিহতদের অধিকাংশই কাঠমান্ডুর বাসিন্দা বলে জানিয়েছেন দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র লক্ষীধাকাল। স্মরণকালেরভয়াবহ এই দুর্যোগের সময় আন্তর্জাতিক গোষ্ঠীগুলোর কাছে জরুরি সহায়তা চেয়েছে নেপালেরতথ্যমন্ত্রী মিনেন্দ্র রিজাল।
এক বার্তায় তিনি বলেন, আমাদের এখন আন্তর্জাতিক সব সম্প্রদায়ের কাছ থেকে সাহায্য প্রয়োজন। আমরা যে দুর্যোগের মুখে পড়েছি, তা মোকাবেলায় যাদের বেশি জ্ঞান ও সরঞ্জাম আছে, তাদের সাহায্য এখন আমাদের জন্য জরুরি।
নেপালসহ বিভিন্ন দেশে ভূমিকম্পে বিপুল সংখ্যক মানুষের প্রাণহানির ঘটনায় শোক প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিরোধী দলীয় নেতা বেগম রওশন এরশাদ।
ভূমিকম্পের কারণে নেপালে সব ধরনের ফ্লাইট বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে রাজধানী কাঠমান্ডুর দশরথ স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠেয় এএফসি অনুর্ধ ১৪ মহিলা ফুটবলের ফাইনাল। খেলায় বাংলাদেশের মেয়েদের নেপালের মুখোমুখি হওয়ার কথা ছিলো।
নেপালের বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে ঘরবাড়ি এবং রাস্তাঘাটসহ যোগাযোগ ব্যবস্থার ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে। বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে মোবাইল নেটওয়ার্ক। রাজধানীতে অনেক প্রাচীণ একটি মন্দিরসহ অনেকগলো ভবন ধসে পড়েছে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন।
অনেকেই ধসে পড়া ভবনের মধ্যে আটকা পড়েছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। জরুরি উদ্ধার অভিযানে নেমেছে হেলিকপ্টার।
আহত অনেককে কাঠমান্ডুর সেন্ট্রাল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। রাজধানীর ধারাহারা টাওয়ার ভেঙ্গে পড়ায় সেখানে ২শ’ মানুষ আটকা পড়েছেন।
দেশটির গণমাধ্যমগুলোতে জনগণকে ভবনের বাইরে থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
নেপালের পাশ্ববর্তীদেশ ভারত, পাকিস্তান, চীন, মিয়ানমার এবং বাংলাদেশেও আঘাত হেনেছে ভূমিকম্প। স্থানীয় সময় দুপুরে নেপালসহ পার্শবর্তী দেশগুলোতে এই ভূমিকম্প আঘাত হানে।
১৯৩৪ সালে ৮.৩ মাত্রার ভূমিকম্পে নেপালে সাড়ে আট হাজার মানুষের মৃত্যু হয়।