২৫ মার্চ ১৯৭১। মধ্যরাত থেকে শুরু হয় বাঙ্গালি নিধনে ভয়াল এক গণহত্যা। ১৯৪৮ সালে একরাতে ৩০ হাজার মানুষ হত্যা করে যেভাবে বেলুচিস্তানের স্বাধীনতা আন্দোলনকে দমন করেছিল পাকিস্তান সরকার। তারই ধারাবাহিকতায় অপারেশন সার্চ লাইট নামে চালানো হয় গণহত্যা। ওই রাতেই স্বাধীনতার ঘোষণা দেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
বঙ্গবন্ধুর এই ভাষণের পর থেকে হানাদাররা বুঝতে পারে বাঙালিকে দমানো যাবে না। নীল নকশার অংশ হিসেবে সেনাবাহিনী, পুলিশ ও ইপিআরের বাঙ্গালি কর্মকর্তাদের গুরুত্বপুর্ণ জায়গা থেকে বদলি ও নিরস্ত্র করতে শুরু করে। বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে আলোচনার নামে কালক্ষেপণের নাটক করে ইয়াহিয়া খান। আর এই ফাঁকে পশ্চিম পাকিস্তান থেকে আনে ৩০ হাজার সৈন্য।
১৯৭১ সালের ২২ মার্চ বাঙ্গালি নিধনে অপারেশন সার্চ লাইট ও বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতারে অপারেশন বিগবার্ডের পরিকল্পনা করে ২৫ মার্চ গোপনে পাকিস্তানে পালিয়ে যায় ইয়াহিয়া খান। মধ্যরাতেই ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ঘুমন্ত বাঙালীর ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে পাকিস্তানী হানাদারদাররা।
রাজারবাগ পুলিশ লাইন, পিলখানা ইপিআর সদর দপ্তর, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ গোটা নগরীতে চালায় মধ্যযুগীয় পৈশাচিক হত্যাযজ্ঞ, অগ্নিসংযোগ। মধ্যরাতে গ্রেফতার করা হয় বঙ্গবন্ধুকে। গ্রেফতারের আগেই ইপআিরএর ওয়্যারলেসের মাধ্যমে স্বাধীনতার ঘোষণা দেন হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালি, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে আটক করে ক্ষমতা ভাগাভাগিতে বাধ্য করা ও আন্দোলনরত মুক্তিকামী বাঙ্গালিদের ভয়ভীতি দেখিয়ে দমন করাই ছিলো হানাদার পাকিস্তানীদের মূল লক্ষ্য। দেশের অন্যান্য স্থানে নির্বিচারে গণহত্যা চালালেও যুদ্ধের জন্য মানসিকভাবে তৈরী থাকায় চট্টগ্রামে পাকিস্তানী সৈন্যরা ঘুমন্ত অবস্থায় পায়নি বাঙ্গালি সৈন্যদের।
উল্টো ইপিআর সদরে বাঙালি সৈন্যদের আক্রমনের মুখে পড়ে পাকিস্তানী সৈন্যরা। একাত্তরের কাল রাতের সেই নৃশংস, বর্বর হত্যাযজ্ঞ বাঙালি ও বিশ্ববাসীর কাছে হয়ে আছে মানবতার এক কলঙ্কজনক অধ্যায় হিসেবে।
বিস্তারিত দেখুন ভিডিও রিপোর্ট: