দ্রুততম সময়ে সঠিক খবর, সংবাদের বস্তুনিষ্ঠ বিশ্লেষণ আর সব পক্ষের মত প্রকাশের অঙ্গীকারে দ্বিতীয় বছরে পদার্পণ করলো চ্যানেল আই অনলাইন (www.channelionline.com)। ঘরোয়া আয়োজনে প্রথম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপনে উৎসব আনন্দের সঙ্গে ছিলো আগের মতোই নির্ভুল সংবাদ ও সংবাদ বিশ্লেষণ পরিবেশনের অঙ্গীকার।
তেজগাঁওয়ে চ্যানেল আই ভবনে ছোট কিন্তু প্রাণের উচ্ছ্বাসের আয়োজন থেকে চ্যানেল আই’র দর্শক, অনলাইনের পাঠক-দর্শক-শ্রোতা, লেখক, পরামর্শক এবং বিভিন্নভাবে যারা সহযোগী তাদের সকলকে অভিনন্দন জানানো হয়। অনলাইন কর্মীদের প্রত্যাশা: গত এক বছরের মতো আগামী দিনগুলোতেও সবাই সহযোগিতা এবং পরামর্শ অব্যাহত রাখবে।
‘দেখতে দেখতে এক বছর পেরিয়ে গেলো চ্যানেল আই অনলাইন। এই সময়ের মধ্যেই বিপুল
সংখ্যক পাঠকের সঙ্গে আমাদের একটি যোগসূত্র স্থাপিত হয়েছে। আমাদের
কর্মীবন্ধু, লেখক, পাঠক ও সামাজিক মাধ্যমের মধ্যে একটি সেতুবন্ধনও রচিত
হয়েছে, যা অত্যন্ত আশাব্যঞ্জক,’ মন্তব্য করে চ্যানেল আই’র পরিচালক ও বার্তা প্রধান শাইখ সিরাজ বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে থাকা চ্যানেল আই অনলাইনের
সকল পাঠককে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান।
সংবাদপত্র এবং টেলিভিশনের পর অনলাইন মাধ্যমের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন: চলমান জীবন বাস্তবতায় এর প্রভাব অনেক বড়। কিন্তু গণমাধ্যম হিসেবে অনলাইন প্লাটফরমের বয়স বেশি নয়। বলতে গেলে, এখনও এটি আঁতুর ঘরেই রয়েছে। এর মধ্যেই চলছে নানামুখি ভাঙাগড়া ও সংযুক্তি। অনলাইন মাধ্যমকে যথেচ্ছ ব্যবহারও করা হচ্ছে। তথ্যকে ইচ্ছে মতো প্রয়োগ অপপ্রয়োগ করা হচ্ছে। নিয়ম কানুন, পরিমিতিও ঠিক থাকছে না অনেক স্থানে। সংবাদ মাধ্যম হলেও এর সঙ্গে যে দায়বদ্ধতা রয়েছে সেটি যেন মানতেই চাইছে না অনেকেই।
‘এক্ষেত্রে সরকারি সুষ্ঠু নীতিমালা প্রনয়ণ ও বাস্তবায়নের পাশাপাশি যারা অনলাইন মাধ্যমে আসছেন তাদের নিজেদেরকেই নিজেদের অবস্থান থেকে সম্পাদনা ও দায়বদ্ধতার বিষয়টি অনুসরণের প্রয়োজন রয়েছে,’ বলে মন্তব্য করেন তিনি।
চ্যানেল আই’র এডিটর (নিউজ অ্যান্ড কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স) সাইফুল আমিন চ্যানেল আই অনলাইনের বর্ষপূর্তিতে সবাইকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, মানুষের কাছে পৌঁছানোর জন্য অনলাইন দ্রুততম মাধ্যম হওয়ায় এর সম্ভাবনার সঙ্গে চ্যালেঞ্জও অনেক বেশি। অনলাইন কর্মীদের সেই ঝুঁকির বিষয়টি মাথায় রেখেই সবসময় সর্বোচ্চ সতর্কতার সঙ্গে কাজ করার পরামর্শ দেন তিনি।
‘একইসঙ্গে অনলাইনে গণমাধ্যম সংশ্লিষ্ট সব ধরনের প্রযুক্তির ব্যবহার হয় বলে এখানেও সম্ভাবনা এবং চ্যালেঞ্জ সমান্তরাল। আবার প্রযুক্তি এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সহজে পাঠকের কাছে পৌঁছানোর সুযোগ নিয়ে অনেকে এর অপব্যবহারও করছেন। তবে, শেষ পর্যন্ত সাংবাদিকতার নামে অপসাংবাদিকতা টেকে না,’ মন্তব্য করে সাইফুল আমিন বলেন, মাত্র এক বছরেই চ্যানেল আই অনলাইন সাংবাদিকতার এক ভালো দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।
এ বিষয়টিই আরেকটু বিস্তারিত তুলে ধরে চ্যানেল অাই অনলাইনের এডিটর জাহিদ নেওয়াজ খান বলেন: ঠিক এক বছর আগে আমাদের যাত্রা শুরুর সময় আমরা বলেছিলাম, আমাদের লক্ষ্য দ্রুততম সময়ে সংবাদ পৌঁছে দেওয়া, কিন্তু তথ্য হবে সঠিক। আমরা মানুষকে বিস্তারিত জানাবো, কিন্তু সেখানে কোনো বাহুল্য থাকবে না। আমরা সংবাদ বিশ্লেষণে যাবো, কিন্তু সেটা হবে তথ্যের ভিত্তিতে নিরপেক্ষ অবস্থান থেকে। আমরা ঘটনার গভীরে যাবো, কিন্তু সবার উপরে থাকবে সাংবাদিকতার নীতি-নৈতিকতা।
‘গত এক বছরে আমরা সেই সাংবাদিকতা করার চেষ্টা করেছি। আগামী দিনগুলোতেও আমরা সাংবাদিকতার এ বি সি (অ্যাকিউরেসি, ব্রেভিটি, ক্ল্যারিটি) বজায় রেখেই সেটা অব্যাহত রাখতে চাই। যতো চ্যালেঞ্জিংই হোক না কেনো সবসময় সাংবাদিকতার নীতি-নৈতিকতার প্রতি সর্বোচ্চ যত্নশীল থাকাই আমাদের অঙ্গীকার,’ বলে মন্তব্য করেন তিনি।
বর্ষপূর্তির ঘরোয়া আয়োজনে চ্যানেল আই’র বার্তা সম্পাদক প্রণব সাহা, মীর মাসরুর জামান ও আদিত্য শাহীন, অ্যাসাইনমেন্ট এডিটর আরেফিন ফয়সল, চ্যানেল আই অনলাইনের ডিজিটাল অ্যান্ড মাল্টিমিডিয়া এডিটর তৌফিক আহমেদ, নিউজ গ্যাদারিং এডিটর ফাহমিদা আখতার এবং আউটপুট এডিটর প্রদীপ চৌধুরী ও আব্দুল্লাহ আল সাফি উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে চ্যানেল আই অনলাইনকে অভিনন্দন জানান রেডিও ভূমি’র স্টেশন চিফ শামস সুমন।
চ্যানেল আই’র জেনারেল ম্যানেজার (অপারেশন্স) হেলাল খান এবং জেনারেল ম্যানেজার (হিসাব) জিয়াউল ইসলামও চ্যানেল আই অনলাইনকে শুভেচ্ছা জানান।
প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীতে শাইখ সিরাজ
সংবাদ মাধ্যমের বৈপ্লবিক বিকাশ ঘটেছে। প্রাচীণকালে মানুষের দ্বারে দ্বারে গিয়ে ঢোল বাজিয়ে শাহী এলান দেয়া হতো। একসময় এলো হাতে লিখে সংবাদপত্র প্রকাশের দিন। তারপর এলো মুদ্রিত অক্ষর। তারপর সময়ের পরিক্রমায় ইলেক্ট্রনিক মাধ্যম। একের পর তথ্যের প্রবাহের এই নতুন নতুন দ্বার উন্মোচনের বিষয়টি মানুষকে বিস্মিত করেছে। চোখের ওপর থেকে দিনে দিনে সরে গেছে অন্ধকারের পর্দা। মানুষের জানার আগ্রহ বেড়েছে। জানার পদ্ধতিও সহজ হয়েছে।
প্রতিটি নতুন নতুন আবিস্কারই পুরনো মাধ্যমকে সংকটে ফেলেছে। এনেছে বিলুপ্তির আশংকাও। কিন্তু মানুষের অভ্যস্থতার কারণে কোনো মাধ্যমই একেবারে হারিয়ে যায়নি। সংবাদপত্র থেকে যখন রেডিও, রেডিও থেকে টেলিভিশন এবং টেলিভিশন যখন ক্যাবলের মাধ্যমে ছড়িয়ে যেতে থাকলো ঘরে ঘরে তখন মনে হলো মুদ্রিত সংবাদপত্রের কি আবেদন থাকবে? কিন্তু ঠিকই টেলিভিশন মাধ্যমের ব্যাপক প্রসারের এই সময়েও সংবাদপত্র মুদ্রিত সংবাদপত্রের আবেদন ঠিকই রয়েছে। মানুষ খবরের কাগজ পড়তে চায়। এখনও নেশার মতো পড়ে।
টেলিভিশনের ব্যাপক বিকাশের পর পরই বাঁধভাঙা জোয়ারের মধ্যে ঢুকে পড়েছে অনলাইন। তাৎক্ষণিক সংবাদের মাধ্যম। যখন খবর, তখনই পরিবেশনা। অনলাইনের দুনিয়া অনেক বড়, গতি অনেক দ্রুত। সামাজিক মাধ্যমের সঙ্গে অনলাইন প্লাটফরম যুক্ত হয়ে এর শক্তি গিয়ে পৌঁছেছে বিশাল জায়গায়। চলমান জীবন বাস্তবতায় এর প্রভাব অনেক বড়। কিন্তু গণমাধ্যম হিসেবে অনলাইন প্লাটফরমের বয়স বেশি নয়। বলতে গেলে, এখনও এটি রয়েছে আঁতুর ঘরেই। এর মধ্যেই চলছে নানামুখি ভাঙাগড়া ও সংযুক্তি। প্রতিদিন আসছে নতুন নতুন সুযোগ সুবিধা। উন্মোচন হচ্ছে নতুন নতুন দিক।
কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, এর ব্যাপক বিস্ফোরণ ও অপরিণামদর্শী ব্যবহার নিয়ে। অনলাইন মাধ্যমকে যথেচ্ছ ব্যবহার করা হচ্ছে। তথ্যকে ইচ্ছে মতো প্রয়োগ অপপ্রয়োগ করা হচ্ছে। নিয়ম কানুন, পরিমিতিও ঠিক থাকছে না অনেক স্থানে। সংবাদ মাধ্যম হলেও এর সঙ্গে যে দায়বদ্ধতা রয়েছে সেটি যেন মানতেই চাইছে না অনেকেই।
এক্ষেত্রে সরকারি সুষ্ঠু নীতিমালা প্রনয়ণ ও বাস্তবায়নের পাশাপাশি যারা অনলাইন মাধ্যমে আসছেন তাদের নিজেদেরকেই নিজেদের অবস্থান থেকে সম্পাদনা ও দায়বদ্ধতার বিষয়টি অনুসরণের প্রয়োজন রয়েছে বলে আমি মনে করি।
দেখতে দেখতে এক বছর পেরিয়ে গেল চ্যানেল আই অনলাইন। এই সময়ের মধ্যেই বিপুল সংখ্যক পাঠকের সঙ্গে আমাদের একটি যোগসূত্র স্থাপিত হয়েছে। আমাদের কর্মীবন্ধু, লেখক, পাঠক ও সামাজিক মাধ্যমের মধ্যে একটি সেতুবন্ধনও রচিত হয়েছে। যা অত্যন্ত আশাব্যঞ্জক।
বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে থাকা চ্যানেল আই অনলাইনের সকল পাঠকের প্রতি আমাদের শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন।