ক্ষমতাসীন দলের স্বার্থেই নির্বাচন একতরফা করতে পুলিশ প্রশাসন সর্বোচ্চ শক্তি নিয়ে মাঠে নেমেছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
তিনি বলেন: ঢাকা মহানগরসহ দেশব্যাপী আইন শৃঙ্খলা বাহিনী যেন মরণকামড় দিচ্ছে। ধানের শীষের প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকদের চালনী দিয়ে ছেঁকে তুলছে। সারাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে জাতীয় পর্যায় পর্যন্ত বিএনপি নেতাকর্মীদের বাড়িতে বাড়িতে হানা দেয়া হচ্ছে তাদেরকে ধরার জন্য। নেতাকর্মীদেরকে না পেয়ে মহিলা সদস্যসহ পরিবারের লোকজনদেরকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও হুমকি দেয়া হচ্ছে এবং কোথাও কোথাও বিএনপি নেতাকর্মীদের না পেয়ে স্ত্রী ও সন্তানদের ধরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
শনিবার নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী অভিযোগ করে বলেন: আমরা জানতে পেরেছি আজ থেকে বিএনপি, ২০ দলীয় জোট ও ঐক্যফ্রন্টের নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অপারেশনের মাত্রা বৃদ্ধি করা হবে। এক্ষেত্রে বিজিবি ও র্যাবকে বিএনপি নেতাকর্মীদের লিস্ট সরবরাহ করবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। সারাদেশের স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ওয়ার্ড থেকে বিএনপি নেতাকর্মীদের তালিকা স্থানীয় থানায় ইতোমধ্যে জমা দিয়েছে, সেই তালিকাগুলোই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এখন বিজিবি ও র্যাবের নিকট সরবরাহ করছে। সরবরাহকৃত তালিকা ধরে ধরে নেতাকর্মীদের আটক করা হবে।
পোলিং এজেন্ট সম্পর্কে তিনি বলেন: ধানের শীষের পোলিং এজেন্ট হিসেবে যাদেরকে মনোনীত করা হবে তাদের নির্বাচনের দু’একদিন আগেই গ্রেপ্তার করা হবে। আমরা বিভিন্ন সূত্রে আরও জানতে পেরেছি, থানার ওসিরা সিল মারার জন্য প্রাপ্ত তালিকাভুক্ত আওয়ামী কর্মীদের সাক্ষাৎকার নিচ্ছেন এবং নির্দেশনা দিচ্ছেন।
এ সময় ডিএমপি কর্তৃক থানার ওসিদের দেয়া নির্দেশনা তুলে ধরেন রিজভী। সেগুলো হল:
১। অপেক্ষাকৃত যুবক বয়সের কর্মীরা সিল মারার দায়িত্বে থাকবে।
২। ৫ জন করে কেন্দ্র ভিত্তিক সিল মারা গ্রুপ ঠিক করা হয়েছে।
৩। শুধুমাত্র দলনেতার কাছে মোবাইল থাকবে এবং ২৯ তারিখ রাতে নির্দিষ্ট নম্বর ব্যতীত অন্য কোনো কল রিসিভ করবে না।
৪। থানা থেকে দায়িত্বপ্রাপ্ত এস আই -এর নেতৃত্বে থাকবে এবং রাতে ৩০% ভোট সিল মারা হলে তারা কেন্দ্র থেকে চলে যাবে।
৫। রাত ও দিনের বেলা কেন্দ্রের বাহিরে পাহারা দেয়ার জন্য কর্মীদের দ্বারা পৃথক টিম গঠন করে দিয়েছে পুলিশ।
৬। সিল মারার সময় বাহিরে সর্তক অবস্থায় থাকবে বিভিন্ন বাহিনী।
৭। দিনের বেলায় আওয়ামী অন্য কর্মীরা লাইনে থাকবে, বার বার বিশৃঙ্খলা তৈরি করে আবার ঠিক করা হবে এবং ভোট প্রদানের গতি অনেক মন্থর করা হবে।
৮। পুলিশের মোবাইল টিম কর্তৃক বিরোধী দলের সমর্থিত এলাকার লোকদের আসার ক্ষেত্রে বাধার সৃষ্টি করবে।
৯। ডিএমপি’র উর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তা অধীনস্থ কর্মকর্তাদের এক বৈঠকে বলেন, যারা সরকারকে বিজয়ী করতে চান, তারা হাত তুলুন-এভাবে প্রতিশ্রুতি আদায় করা হচ্ছে অধ:স্তন কর্মকর্তাদের কাছ থেকে।
বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন: সজিব ওয়াজেদ জয় বলেছিল আওয়ামী লীগ ২২০ আসন নিয়ে সরকার গঠন করবে, সেটার বাস্তবায়নের জন্যেই মাস্টারপ্ল্যান করে বিএনপি’র প্রার্থিতা বাতিল ও স্বয়ং এমপি প্রার্থীদেরকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে এবং জামায়াতের নেতা বলে আরও ২২/২৩ টি আসনের প্রার্থিতা বাতিল করার পরিকল্পনা চলছে।
তিনি বলেন: ইসি কর্তৃক তালিকা চূড়ান্ত করার পর প্রার্থিতা বাতিল চরম প্রতারণামূলক। এর দায় ইসিকেই নিতে হবে। মোট কথা ২৭/২৮ তারিখের মধ্যে এ পদ্ধতিতে বেশ কিছু আসনের জয় তারা নিশ্চিত করতে চায়। বাংলাদেশে এ ধরণের ঘটনা কখনো ঘটেনি।