পৌরসভা নির্বাচনে জায়গায় জায়গায় সংঘর্ষের ঘটনায় একজন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছেন সাংবাদিক-পুলিশ ছাড়াও প্রার্থীদের শতাধিক সমর্থক।
রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়েছে চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায়। সেখানে দুই কাউন্সিলর প্রার্থীর মধ্যে সংঘর্ষে নুরুল আমীন নামে একজন গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়েছেন। তার বাড়ি সাতকানিয়ার গোয়াজারপাড়ায়। নিহত নুরুল আমীনকে বিএনপি নিজেদের সমর্থক বলে দাবি করেছে। তবে সংবাদ সম্মেলন করে নুরুল আমীনকে সাধারণ ভোটার দাবি করেছে আওয়ামী লীগ।
ভিন্ন প্রেক্ষাপটে বরগুনায়ও ঘটেছে সংঘর্ষের ঘটনা। পুলিশের সঙ্গে আওয়ামী লীগ সমর্থকদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ায় রণক্ষেত্রে পরিণত হয় বরগুনা শহর। সদর পৌরসভায় আওয়ামী লীগ প্রার্থী কামরুল আহসান মহারাজ নেতা-কর্মীদের নিয়ে বরগুনা সরকারি কলেজ কেন্দ্রের দিকে যেতে চাইলে পুলিশ বাধা দেয়। সেসময় মহারাজের সমর্থকদের সাথে পুলিশের সংঘর্ষ বাধে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে গুলি ছোঁড়ে পুলিশ। আওয়ামী লীগের দাবি, সংঘর্ষে তাদের অর্ধশতাধিক সমর্থক আহত হয়েছেন।
এর আগে গগণ মেমোরিয়াল মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে আওয়ামী লীগ ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকদের সংঘর্ষে আহত হন বরগুনা সদর থানার ওসি ও কেন্দ্রের সহকারি প্রিজাইডিং অফিসার।
মুন্সিগঞ্জের হাটলক্ষ্মীগঞ্জ, ইদ্রাকপুর ও পিটিআই ভোটকেন্দ্রে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী ও এক কাউন্সিলর প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে মেয়র প্রার্থীসহ আহত হয়েছেন ১৫ জন। ওই কাউন্সিলর প্রার্থীও আওয়ামী লীগের স্থানীয় পর্যায়ের নেতা।
সরকারি দলের সমর্থকদের নিজেদের মধ্যে ছাড়াও বেশ কিছু জায়গায় আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। পটুয়াখালির কুয়াকাটায় সংঘর্ষে আহত অর্ধশত। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেখানেও গুলি ছোঁড়ে পুলিশ।
লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জেও আওয়ামী লীগ-বিএনপি সংঘর্ষ হয়েছে। আহত হয়েছে ৩ জন। চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ, মতলব ও হাজীগঞ্জের কয়েকটি কেন্দ্রে আওয়ামী লীগ বিএনপি ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ গুলি ছুঁড়লে ১জন গুলিবিদ্ধসহ আহত হন ৩০জন। জেলার মতলব পৌরসভার ১টি কেন্দ্রে সহিংসতার কারণে ভোটগ্রহণ স্থগিত করা হয়। টাঙ্গাইলের মধুপুরেও ঘটেছে সংঘর্ষের ঘটনা।
তবে পাবনার সুজানগরে সংঘর্ষ হয়েছে আওয়ামী লীগ ও বিদ্রোহী প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে। সেসময় বেশ কয়েকটি বোমা বিস্ফোরণ এবং গুলি বর্ষনের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে আহত হন কমপক্ষে ১০ জন।
একইভাবে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে মানিকগঞ্জে। গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে দুই কাউন্সিলর সমর্থদের সংঘর্ষে ৫ জন আহত হয়েছেন।
মৌলভীবাজারের ৪টি কেন্দ্রে ব্যালট ছিনতাই, সাংবাদিকদের উপর হামলা ও ক্যামেরা ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। সুনামগঞ্জে আওয়ামী লীগ সমর্থকদের হামলায় আহত হয়েছেন প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদকসহ তিন সাংবাদিক।
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকদের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ায় কয়েকজন আহত হয়েছেন। এর বাইরে হবিগঞ্জে জেলা পরিষদ কেন্দ্রে ৪টি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটে। নোয়াখালীর হাতিয়ায় দুই কাউন্সিলর প্রার্থীর সমর্থকদের সংঘর্ষে আহত হন ৮ জন।