বিএনপি এখন দেশের নির্বাচনী ব্যবস্থার ‘অস্তিত্ব’ নিয়েই শঙ্কা প্রকাশ করছে। দলটির নেতাদের মধ্যে সে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। দলটির শীর্ষ স্থানীয় নেতাদের বক্তব্যে সে আশঙ্কা প্রকাশ পাচ্ছে।
বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী এই শঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে কারাগারে রেখে নির্বাচনী আইন করে দেশের নির্বাচনী স্পেস সংকোচিত করার ষড়যন্ত্র করছে আওয়ামী লীগ সরকার।
শুক্রবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী কেন্দ্রীয় দল আয়োজিত বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে আলোচনা সভায় তিনি এমন শঙ্কা প্রকাশ করেন।
আমির খসরু বলেন, সরকার এমনভাবে সবকিছু গুছিয়ে আনছে যেন নির্বাচন বলে কিছু না থাকে দেশে। সরকার সে পথে হাঁটছে যেন নাগরিকের নির্বাচনী কোনও ক্ষমতা না থাকে। কিন্তু নির্বাচন না করার যে পরিকল্পনা নিয়ে সরকার কাজ করছে তাতে লাভ হবে না। জনগণের যে জায়গা দখল করার চেষ্টা করছে, জনগণ সেটি দখল করে নেবে।
তিনি আরও বলেন, বিএনপি মানুষের প্রত্যাশা তুলে ধরছে। বিএনপি নামটি ভালো না লাগলে ফেলে দেন। কিন্তু মানুষের হৃদয়ে বিএনপি আছে।
তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনার ব্যাপারেরে সরকার যে আলোচনা করছে বলে সংবাদ হয়েছে তাকে ধোঁকাবাজি বলে উড়িয়ে দেন আমির খসরু।
তিনি বলেন, তারেক রহমান যে দেশে আছে (যুক্তরাজ্য) সেটি একটি সভ্য দেশ। যে দেশ আইনের শাসন, গণতন্ত্র, গণমাধ্যমে বিশ্বাস করে এবং যেখানে জীবনের নিরাপত্তা আছে। স্বৈরতান্ত্রিক দেশগুলোতে যখন কোন রাজনৈতিক নেতা নিপীড়নের শিকার হয় হয় তখন তারা আশ্রয় দেয়। তারেক রহমান তেমন একটি দেশ আছেন। সুতরাং তাকে ফিরিয়ে আনার যে আলোচনার কথা বলছে তা ধোঁকাবাজি। যুক্তরাজ্য ভালো করে জানে যে বাংলাদেশে স্বৈরতান্ত্রিক সরকার শাসন করছে। যেখানে কোনও আইনের শাসন নেই।
দেশের নির্বাচন নিয়েয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির অন্যতম সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন।
শুক্রবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনা সভায় তিনি বলেন, এ সরকার ভোট এবং জনগণকে বাদ দিয়ে আবার ক্ষমতায় থাকার পরিকল্পনা করছে। সে পরিকল্পনার অংশ হিসেবেই খালেদা জিয়া আজ কারাগারে।
২০১৪ এর মতো ভোট ছাড়া গায়ের জোরে পাতানো খেলা আর হতে দেয়া হবে না মন্তব্য করে মোশাররফ বলেন, বারবার জনগণকে বোকা বানানো যাবে না। ধোঁকা দেয়া যাবে না।
“নির্দলীয় নিরপেক্ষ নির্বাচনকালীন সরকার দিতে হবে। সংসদ ভেঙে দিতে হবে। সেনাবাহিনী মোতায়েন করতে হবে”- দাবি করেন তিনি।
খন্দকার মোশাররফ বলেন, এটি আওয়ামী লীগ চাইবে না। আমরা আশাও করি না যে কোনও স্বৈরাচার সে সুযোগ দিবে। কিন্তু আমাদেরকে সে সুযোগ তৈরি করে নিতে হবে।
তিনি বলেন, বিএনপির অংশগ্রহণ না থাকলে নির্বাচন অংশহণমূলক হবে না। নির্বাচন কমিশন নাকি চিন্তা করছে, সংসদ সদস্য এবং মন্ত্রীদের খুলনা-গাজীপুর নির্বাচনে প্রচারণার সুযোগ দেয়া যায় কিনা তানিয়ে আলোচনা করছে। এটি স্পষ্ট সংবিধানের লঙ্ঘন। মন্ত্রী এমপিরা নৌকায় ভোট চাইতে পারে না।
খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং কুমিল্লা উত্তর জেলা বিএনপির সভাপতি মোঃ খোরশেদ আলম স্মরণে দোয়া ও আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন মোশাররফ।