জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে সংলাপে নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে কোনো কথা হয়নি বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
‘‘সংলাপে নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে কোনো কথা হয়নি। তবে, তারা নির্বাচনের আগে সংসদ ভেঙে দেওয়ার দাবি বৈঠকে উত্থাপন করেছেন।’’
সংলাপ শেষে বৃহস্পতিবার রাতে গণভবন থেকে বের হওয়ার সময় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনা তাদের বলেছেন, পৃথিবীর কোনো গণতান্ত্রিক দেশে সংসদ ভেঙে দিয়ে নির্বাচন হয় না। প্রতিবেশী দেশ ভারতের উদাহরণও দেয়া হয়েছে। ইলেকশনের সিডিউল ডিক্লিয়ারের পর থেকে সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের।
‘‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাদেরকে আশ্বস্ত করেছেন, একটি সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের জন্য যা যা প্রয়োজন, সরকারের পক্ষ থেকে সব সহযোগিতা করা হবে। নির্বাচন কমিশন স্বাধীন ভূমিকা পালন করবে। সরকার তাতে কোনো রকম হস্তক্ষেপ করবে না। শুধুমাত্র যেসব বিষয়ে সহযোগিতা চাইবে, সেসব বিষয়ে সহযোগিতা করা হবে।’’
নির্বাচনে সবার জন্য সমান সুযোগ প্রসঙ্গে ঐক্যফ্রন্ট নেতাদের দাবির বিষয়ে সংলাপে কি আলোচনা হলো – জানতে চাইলে তিনি বলেন, তাদের পক্ষ থেকে কিছু কিছু অভিযোগ করা হয়েছে। একটি সুন্দর পরিবেশে আলোচনা হয়েছে। কিছু কিছু বিষয়ে আমরা একমত হয়েছি।
‘‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সভা সমাবেশ করতে পারবেন। তবে রাস্তায় না করে মাঠে সমাবেশ করবেন। প্রয়োজনে আমরা একটি কর্নার করে দিবো।’’
বিদেশি পর্যবেক্ষণ রাখার ব্যাপারে আওয়ামী লীগের কোনো সমস্যা নেই উল্লেখ করে কাদের বলেন, ‘এ ব্যপারে আমাদের সাপোর্ট থাকবে। এভিএম এবারের নির্বাচনে সীমিত পরিসরে ব্যবহার করার বিষয়ে আওয়ামী লীগের সায় রয়েছে বলে ঐক্যফ্রন্ট নেতাদের জানানো হয় সংলাপ থেকে।’
খালেদার জিয়ার মুক্তি প্রশ্নে তিনি বলেন, আইন আদালতের বিষয় সংলাপের মধ্যে আসতে পারে না। দুটি মামলায় সাজা হলো সেটা তত্ত্ববধায়ক সরকারের করা মামলা। এটা আমারা করিনি, এ কথা তাদের বারবার স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন।
সেনাবাহিনীর বিষয়টি নিয়ে ড. কামাল হোসেনকে বলা হয়েছে, ২০০১ ছাড়া কোনো নির্বাচনে সেনাবাহিনীর ম্যাজিস্ট্রেসি ছিলো না। তাহলে এখন আপনারা কেন চাচ্ছেন?
৮ নভেম্বরের আগে ঐক্যফ্রন্ট চাইলে আবারও বসার সুযোগ রয়েছে বলেও সংবাদিকদের জানান আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক।
প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতির নেতৃত্বে ১৪ দলের সঙ্গে এ সংলাপ শুরু হয় সন্ধ্যা ৭টার দিকে। যদিও সংলাপের জন্য দুই ঘণ্টা নির্ধারিত ছিল। কিন্তু ৯টার পর নৈশভোজের জন্য সংলাপে বিরতি দেওয়া হয়।
নৈশভোজের পর তা আবারো শুরু হয়। পরে তা প্রায় পৌনে চার ঘণ্টা ধরে চলে। এ সংলাপে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং ড. কামাল হোসেন দুইপক্ষে নেতৃত্ব দেন।
এরআগে বৃহস্পতিবার সংলাপের জন্য নির্ধারিত সময় ৭টার কিছু আগ থেকেই ঐক্যফ্রন্ট নেতারা গণভবনে আসতে শুরু করেন।
সন্ধ্যা ৭টার কিছুপর সংলাপ শুরু হলে, সূচনা বক্তব্য দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সেসময় তিনি বলেন, তার সরকারের প্রায় দশ বছর মেয়াদে দেশের সার্বিক উন্নয়নকে মূল্যায়ন করার ভার ঐক্যফ্রন্টের নেতাদের ওপর ছেড়ে দিয়ে বলেছেন, দেশের মানুষ ভালো আছে। তাদের ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটছে।