মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে আনুষ্ঠানিকভাবে রিপাবলিকান দলের মনোনয়ন গ্রহণ করে ডোনাল্ড ট্রাম্প নিরাপত্তা ও সমৃদ্ধির ক্ষেত্রে আমেরিকায় নতুন যুগের অঙ্গীকার করেছেন। ক্লিভল্যান্ডে আইন-শৃঙ্খলা বিষয়ক বক্তৃতায় প্রেসিডেন্ট নমিনেশন গ্রহণ করেন ট্রাম্প।
যুক্তরাষ্ট্রকে আবারও সমৃদ্ধি ও নিরাপত্তার পথে নেতৃত্ব দেওয়ার অঙ্গিকার করে এই ৭০ বছর বয়সী নেতা বলেন, যে অপরাধ ও সহিংসতা আজ আমাদের জাতিকে আক্রান্ত করছে শীঘ্রই তার অবসান হবে।
ট্রাম্পের বড় মেয়ে ইভানকা আজ তাকে পরিচিত করিয়ে দেন। বাবা সম্পর্কে উজ্জ্বল চিত্র তুলে ধরে তিনি বলেন, মায়েদের জন্য অনুকূল নীতি বাস্তবায়ন করবেন তিনি। কর্মক্ষেত্রে নারীদের তাৎপর্যপূর্ণ অংশ না থাকার সময়কার শ্রম আইন পরিবর্তনের কথাও বলেন তিনি।
‘বর্ণবাদবিরোধী এবং লিঙ্গসমতায় বিশ্বাসী’ বলে বাবাকে পরিচিত করিয়ে প্রেসিডেন্ট হিসেবে বাবাকেই শ্রেষ্ঠ ব্যক্তি বলে মন্তব্য করেন ইভানকা ট্রাম্প।
নভেম্বরের আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্রেট প্রার্থী হিলারি ক্লিনটনকে তিনি পরাজিত করতে পারেন, সমবেত জনতার এই আকাঙ্খার ‘লক হার আপ’ ধ্বনীতে (তাকে আটকাও) অনেকবারই থেমে যেতে হয় ট্রাম্পকে।
ট্রাম্প বলেন, সরকারের সবচেয়ে মৌলিক দায়িত্ব হলো তাদের নাগরিকদের জীবন রক্ষা করা। যে সরকার তা করতে ব্যর্থ তারা নেতৃত্ব দেওয়ার যোগ্য নয়। আমাদের জাতির অবস্থার অকপট মূল্যায়ণের সময় এখন।
“আমি এখন বাস্তবতা স্পষ্টভাবে এবং সৎভাবে উপস্থাপন করবো। আমরা এখন আর রাজনৈতিকভাবে একদম সঠিক থাকতে পারবো না। তোমাদের সকলের জন্য আমার একটি বার্তা আছে। অপরাধ এবং সহিংসতা যা আমাদের জাতিকে আজ আক্রান্ত করছে, তা শীঘ্রই এবং আমি বলতে চাই অতি শীঘ্রই তার অবসান হবে। ২০১৭ সালের ২০ জানুয়ারির শুরু থেকেই (প্রেসিডেন্ট দায়িত্ব গ্রহণের সময়) নিরাপত্তা সংহত করা হবে।”
ট্রাম্পের এই বক্তব্যের জবাবে হিলারির পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণার চ্যায়ারম্যান জন ডেভিড পোডেস্টা “ডোনাল্ড ট্রাম্পের চেয়ে আমেরিকা ভালো” বলে এক বিবৃতি দিয়েছেন। সেখানে বলা হয়, আজ ডোনাল্ড ট্রাম্প আমেরিকার অবক্ষয়ের এক কালো চিত্র এঁকেছেন। এবং এর প্রতিক্রিয়ায় আরও ভীতকর, আরও বিভক্তি, আরও ক্ষোভ, আরও ঘৃণাভরা তার উত্তর আবারও মনে করিয়ে দেয় সে মানসিকভাবে অনুপযুক্ত এবং যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে একেবারেই অযোগ্য।
“কর্মজীবী পরিবারদের এগিয়ে চলার সাহায্যার্থে বা আমেরিকাকে নিরাপদ রাখার জন্য তিনি কোন আসল সমাধান না দিয়ে বরং দিয়েছেন আরও কুসংস্কার ও বিকৃতি। আমেরিকা এর চেয়েও ভালো। আমেরিকা ডোনাল্ড ট্রাম্পের চেয়ে ভালো।”
দলের মনোয়ন গ্রহণের সময়ে দেওয়া বক্তৃতার দৈর্ঘ্যেও ১৯৭২ সাল থেকে এই পর্যন্ত অন্যান্য সকলকে ছাড়িয়ে গেছেন ট্রাম্প। ৭৫ মিনিটের বক্তৃতায় এই পর্বে দলীয় কনভেনশনে ১৯৯৬ সালে সাবেক প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটনের ৬৪.৪৪ মিনিটের সময়কেও পেছনে ফেললেন ট্রাম্প।