উদ্যোগটা আগেও নিয়েছিল পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড। কয়েকদফা চেষ্টার পর ছেলেদের পারেনি, তবে বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দলকে খেলতে দেশটিতে নিয়ে যেতে বিসিবিকে রাজি করিয়েছিল পিসিবি। এবারও একই চেষ্টা করছে। মাশরাফি-মুশফিকদের পাকিস্তানে গিয়ে খেলতে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে তারা। যদিও আলোচনা এখন পর্যন্ত প্রাথমিক পর্যায়ে আছে বলেই দেশটির জিও টিভিতে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে।
পিসিবির বরাতে জিও জানিয়েছে, বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সঙ্গে প্রাথমিক পর্যায়ের কথা চলছে। ভারতের সঙ্গে একটা দ্বিপাক্ষিক সিরিজের কথা রয়েছে, তবে ভারত সিরিজটি পাকিস্তানে গিয়ে খেলবে কিনা তা এখনো নিশ্চিত নয়। যদিও বাংলাদেশের ব্যাপারে আশাবাদী পিসিবি কর্তারা।
পিসিবি কর্তারা আরো জানিয়েছে, বাংলাদেশকে সম্মানের সঙ্গে সিরিজে অংশ নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। কারণ এরইমধ্যে পাকিস্তান বাংলাদেশে গিয়ে দু’বার খেলে এসেছে। এবার বাংলাদেশের পালা।
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের কর্মকর্তাদের সিরিজের কথা জানানো পরের প্রতিক্রিয়ায় পিসিবি বলছে, পাকিস্তান সুপার লিগের (পিএসএল) ফাইনাল হবে মার্চের ৫ তারিখে। সেখানে বিসিবি’র একজন কর্তাব্যক্তি উপস্থিত থেকে লাহোরের ফাইনাল উপভোগ করাসহ পাকিস্তানের নিরাপত্তা ব্যবস্থা পর্যবেক্ষণ করবেন।
পিএসএলের ফাইনালে দেশটির নিরাপত্তা ব্যবস্থা পর্যবেক্ষণের জন্য ফেডারেল অব ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেটার্স অ্যাসোসিয়েশন (ফিকা) ও ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের (আইসিসি) নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞদেরও আমন্ত্রণ জানিয়েছে পিসিবি।
পাকিস্তানের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা অবশ্য কাগজের দেয়ালের মতোই ঠুনকো। আত্মঘাতী বোমা হামলায় তাদের দেশের নাগরিকদের নিহতের ঘটনা ঘটে হরহামেশাই। দেশটির নিরাপত্তায় নিয়োজিত থাকে যে সেনাবাহিনী, সেই সেনা দপ্তরেও জঙ্গি হামলায় ১০ জন নিহত হয়েছিল।
২০০৮ সালের ১১ মার্চ লাহোরে বোমা হামলায় মারা যায় ১৫ জন সাধারণ জনতা। এরপর নিরাপত্তাহীনতার কারণে অস্ট্রেলিয়া তাদের নির্ধারিত পাকিস্তান সফর বাতিল করে। একে একে পাকিস্তান খেলতে অস্বীকৃতি জানাতে থাকে বাকি সব ক্রিকেট খেলুড়ে দেশ। পাকিস্তান হয়ে পড়ে একঘরে।
এরমধ্যেই বছর খানেক পর ২০০৯ সালের ৩ মার্চ পাকিস্তানে খেলার সাহসী সিদ্ধান্ত নেয় শ্রীলঙ্কা। ক্রিকেট ইতিহাসের সবচাইতে কলঙ্কজনক ঘটনাটিও ঘটে ওই সময়েই। লাহোরে প্রায় ২০জন বন্দুকধারী উদ্দাম গুলি খেলায় মেতে ওঠে শ্রীলঙ্কান খেলোয়াড়দের বহনকারী বাসকে ঘিরে। নিহত যায় ৫জন পুলিশ সদস্য, আহত হয় বেশ কয়েকজন লঙ্কান খেলোয়াড়সহ দলটির সহকারী কোচ।
এতোকিছু যাচাই-বাছাই করে বিসিবি পাকিস্তান সফরে যাবে কি না সেটাই এখন বড় প্রশ্ন।