প্রখ্যাত কথা সাহিত্যিক হাসান আজিজুল হক বলেছেন, আমরা মাতৃভাষা উর্দু করার প্রতিবাদে যেভাবে না বলেছি, তেমনি অন্ধবিশ্বাসকে, ঘুষ নেওয়াকে, সাম্প্রদায়িকতাসহ প্রভৃতি অশুভ কাজকে আমাদের ‘না বলা’ শিখতে হবে।
সোমবার রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছোট কাগজ ‘উত্তরণে’র বর্ষপূর্তি উপলক্ষ্যে শহীদুল্লাহ কলা ভবনের সামনে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
হাসান আজিজুল হক বলেন, বর্তমান প্রযুক্তি ব্যবস্থা আমাদের যান্ত্রিক করে তুলেছে। যার ফলে আমরা নিজেদের আধুনিক বলে দাবি করি। কিন্তু আধুনিকায়ন আমাদের কি সামনের দিকে নিয়ে যাচ্ছে নাকি পিছনের দিকে, এটাই আমরা আজ বুঝতে পারচ্ছি না। প্রযুক্তি যে আমাদের সমাজের মানবিক দিক থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলেছে তা আমরা বুঝতেই পারি না।
তিনি আরো বলেন, অবকাঠামো আমাদের উন্নয়নের কারণ না হয়ে অধঃপতনের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এখন আমাদের সংস্কৃতি, সাহিত্য কোথায়? আমরা এসব এখন হারিয়ে ফেলেছি। তাই এসব থেকে উত্তরণের জন্য যুব সমাজের এগিয়ে আসতে হবে। তাদের এই অবকাঠামো ভেঙে নতুন কিছু তৈরি করতে হবে। এজন্য পূর্বের ইতিহাস ধারণ করে সামনের দিকে নিয়ে যেতে হবে, সৃষ্টি করতে হবে নতুন বিশ্ব।
আলোচনা সভায় সদ্য নাট্য সাহিত্যে বাংলা একাডেমি পুরস্কারপ্রাপ্ত অধ্যাপক মলয় কুমার ভৌমিক বলেন, আমরা ছোট কাজগুলো ছোট মনে করে ফেলে রাখি। আসলে ছোট থেকে যে বৃহত্তের সৃষ্টি তা আমরা জেনেও না জানার ভান করি। ছোট কাজ করার মধ্যেই যে সৃজনশীলতা লুকিয়ে আছে এটা যারা করে তারাই জানেন। আবার শুধু কাজ করলেই হবে না এর সাথে নিজেদের সৎ, নীতিবান ও আদর্শ নিয়ে কাজ করলেই বড় কিছু করা সম্ভব। শুধুমাত্র চাকরি পাওয়াই পড়া-লেখার মূল উদ্দেশ্য না।
আলোচনা সভা শেষ হওয়ার পর উত্তরণের সদস্যদের স্বরচিত কবিতা পাঠ ও মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়। এসময় প্রায় শতাধিক শিক্ষক ও শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে সকাল সাড়ে ৯টায় রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. লায়লা আরজুমান বানু এক র্যালির মধ্যে দিয়ে অনুষ্ঠানের শুভ সূচনা করেন।