বিশ্বব্যাপী পালিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক নারী দিবস। ‘করোনাকালে নারী নেতৃত্ব, গড়বে নতুন সমতার বিশ্ব’- এমন প্রতিপাদ্যে বাংলাদেশেও পালিত হচ্ছে দিবসটি।
এদিন চ্যানেল আইয়ে দিনভর থাকছে বিশেষ আয়োজন। তারই ধারাবাহিকতায় সোমবার দুপুরে নিয়মিত আয়োজন ফ্রেম প্রিমিয়াম টি ‘তারকা কথন’ অনুষ্ঠানে এসেছিলেন ছোটপর্দার তারকা অভিনেত্রী মেহজাবীন চৌধুরী। সঙ্গে ছিলেন নাট্য নির্মাতা সঞ্জয় সমদ্দার।
অনুষ্ঠানের বেশীর ভাগ জুড়েই নারীর অধিকার বিষয়ে নিজের পর্যবেক্ষণের কথা বলেন মেহজাবীন। এই সময়ে এসেও অধিকার চাওয়ার বিষয়টিকে তিনি ‘দুঃখজনক’ বলেও মন্তব্য করেন।
মেহজাবীন বলেন, ‘‘আমার সবচেয়ে বড় দুঃখ হচ্ছে, নারী দিবস নিয়ে এখনও আমাদের আলাদা করে ভাবতে হচ্ছে। আলাদা একটা দিন দরকার পড়ছে পুরুষ বা সমাজকে বোঝাতে যে, নারীদের সমাজে কী ভূমিকা! ২০২১ সালে এসেও নাটক, ফিল্ম বানিয়ে আমাদের এটা প্রমাণ করতে হচ্ছে যে- নারীর সক্ষমতা কী সেটা বোঝাতে! আমার মনে হয়, এটা খুব দুঃখজনক।’’
সমাজের প্রত্যেক সেক্টরের নারীদের সংগ্রামের কথা উল্লেখ করে মেহজাবীন বলেন, নারীকে নিজের জায়গা তৈরী করতে এক্সট্রা স্ট্রাগল করতে হয়। শুধু মিডিয়া নয়, আমি প্রত্যেকটা সেক্টরের নারীদের কথা বলছি- যারা কাজ করতে ঘরের বাইরে বের হন কিংবা সংসারই করছেন হয়তো- প্রত্যোকটা নারীকে এখনও নিজেদের অধিকার চেয়ে নিতে হচ্ছে, এরচেয়ে দুঃখজনক আর কিছু নাই। তবে দিন বদলাচ্ছে, একটু সময় লাগছে।
নাটকের ইন্ডাস্ট্রির উদাহরণ টেনে দাপুটে এই অভিনেত্রী আরো বলেন, নাটকের ইন্ডাস্ট্রি নিয়ে যদি বলি, তাহলে বলতে হয়- এই মুহূর্তে নারী কেন্দ্রীক গল্পের বহু নাটক হচ্ছে। নাট্যকার, নির্মাতারা ভাবছেন। সারা বছরে অন্তত পক্ষে বিশ শতাংশ নারী কেন্দ্রীক কাজ হয় নাটকে। একটা সময় আসবে, যখন এটা ফিফটি ফিফটি হয়ে যাবে। আমার দাবী এটা নয় যে, সমান হতে হবে। কিন্তু আমার কথা হচ্ছে, কেন বার বার আমাকে আমার অধিকার চেয়ে নিতে হবে?
লাক্স সুপারস্টার খ্যাত এই অভিনেত্রী মনে করেন, পরিবার থেকে শুরু করে আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থার সর্বস্তরে লার্নিং প্রসেস এমন থাকা উচিত যেন একটা ছেলে নিজেকে ডমিনেন্ট ফিল করবে না। আমাদের প্রথম যেখানে ভুল হয়, সেটা পরিবার। এখনও আমাদের চারপাশে অনেক পরিবার আছে, যেখানে সন্তান ছেলে হলে তার গুরুত্ব একটু বেশি থাকে। কিংবা অনেকেই এখনও চান যে, তার সন্তান যেন ছেলে হয়! এই যে ভাবনার জায়গাটা, এটার পরিবর্তন লাগবে। তা না হলে কিছুই সম্ভব নয়।
নিজের উদাহরণ টেনে মেহাজীবন চৌধুরী আরো বলেন, আমি একজন মেয়ে। বাসার বড় মেয়ে। আমি কাজ করছি। আমার পরিবার আমাকে নিয়ে গর্ব করেন। আমার বাবা মা আমাকে নিয়ে যেভাবে গর্ব করেন, আমি চাই প্রতিটি মেয়েকে নিয়ে তাদের বাবা মাও গর্ব করুক।