নারায়ণগঞ্জের সদর থানার দুই নম্বর বাবুরাইল এলাকায় একটি ফ্ল্যাটে ২ শিশুসহ একই পরিবারের পাঁচজনকে গলা কেটে হত্যার ঘটনায় অজ্ঞাত ৬ জনের নামে মামলা করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় পাশ্ববর্তী একটি হোসিয়ারি কারখানা থেকে চারজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়। এর আগে শাহজাদা ও মাহফুজ নামে দু’জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে পুলিশ। তদন্তের স্বার্থে আটক বাকি ৪ জনের পরিচয় প্রকাশ করেনি তারা।
পুলিশের ধারণা, পারিবারিক শত্রুতা ও আর্থিক লেনদেনের জের ধরে হত্যাকাণ্ডটি হয়েছে।
নিহতরা হলেন তাসলিমা বেগম, তার ১০ বছরের ছেলে শান্ত, ৫ বছরের মেয়ে সুমাইয়া, তাসলিমার ভাই মোরশেদুল এবং তার জা লামিয়া বেগম। শনিবার দিবাগত রাত সাড়ে ৩ টার দিকে মৃতদেহগুলো ওই বাড়িতে সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়।
র্যাবের মহাপরিচালক বেনজির আহমেদ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে দ্রুত সময়ের মধ্যে এ হত্যাকাণ্ডের রহস্য উৎঘাটন হবে বলে আশ্বস্ত করেন।
সিআইডি নারায়ণগঞ্জ অফিসের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) এহসান উদ্দিন চৌধুরী জানিয়েছেন, ধারালো অস্ত্র দিয়ে মাথায় আঘাতের পর তাদেরকে গলায় কাপড় পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে।
এহসান উদ্দিন চৌধুরী বলেন, হত্যাকাণ্ডের বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে। দেনা-পাওনা সর্ম্পকে কোনো ঘটনা থাকতে পারে বা অন্য কোনো কারণে এই হত্যাকাণ্ডটি ঘটে থাকতে পারে। অথবা তাদেরকে অচেতন করেও হত্যা করা হয়ে থাকতে পারে। আঘাতের ধরণ একই রকম বলে জানান তিনি।
হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে কারা জড়িত সে ব্যপারে এখনও নিশ্চিত হওয়া না গেলেও ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে পুলিশের ধারণা খুনিরা নিহতদের পূর্বপরিচিত হতে পারে। বাড়িটিতে আগেও তাদের যাতায়াত ছিলো। বাইরে থেকে তালা আটকানো অবস্থায় নিহতদের লাশ উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ জানিয়েছে, খানকার মোড়ে অবস্থিত ৬ তলা ভবনের মালিক আমেরিকা প্রবাসী ইসমাইল হোসেন। তারই বাড়ের ভাড়াটের ঘরের দরজা অনেকক্ষণ তালাবদ্ধ দেখে এলাকাবাসীর সন্দেহ হয়। তারা জানালা দিয়ে দেখতে পায় ঘরের ভেতরে ৫ জনের মৃতদেহ পড়ে আছে। পরে পুলিশ দরজা ভেঙ্গে ঘরে ঢোকে।
ওই ঘটনা এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হলে শত শত মানুষ বাড়িটিকে ঘিরে ভীড় জমায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বাসাটি পুলিশ ঘিরে রেখেছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ কাউকে ঢুকতে দিচ্ছে না।
যথাযথ তদন্ত করে দোষীদের আইনের আওতায় আনার আশ্বাস দিয়েছে পুলিশ।