হাইতির ১২ জন অপহৃত মিশনারি নিজেদের উদ্যোগে পালিয়ে আসতে সক্ষম হয়েছে বলে জানায় মার্কিন চার্চ। গত অক্টোবরে তাদের অপহরণ করা হয়েছিলো।
ক্রিশ্চিয়ান এইড মিনিস্ট্রি সূত্রে বিবিসি জানায়, গত সপ্তাহে তারা মুক্ত হয়েছে। এই অপহরণের পেছনে ‘৪০০ মাওউজো’ নামের অপরাধী চক্র জড়িত রয়েছে বলে জানায় হাইতি কর্মকর্তারা।
অপহরণকারীরা এই মিশনারিদের মুক্তির জন্য জনপ্রতি ১০ লাখ মার্কিন ডলার মুক্তিপণ দাবি করেছিল।
সর্বমোট ১৭ জন মিশনারি এবং তাদের পরিবারকে অপহরণ করা হয়েছিলো। একটি এতিমখানা থেকে ফেরার পথে অপহৃত হয় তারা। বাকি ৫ জনকেও মুক্ত করা হয়েছে। এই অপহৃত দলে একটি দম্পতি, ১০ মাসের শিশু, ১৪ এবং ১৫ বছরের শিশু, ৪ জন বয়স্ক নারী এবং পুরুষ ছিলেন।
অপহৃত মিশনারিরা কীভাবে পালিয়ে রক্ষা পেলো, সেবিষয়ে চার্চের মুখপাত্র ওয়েস্টন শোয়াল্টার বলেন, যখন তারা বুঝতে পেরেছিলো এটাই নিরাপদ সময়, তখন তারা তাদেরকে বন্ধ করে রাখা রুমের দরজা খুলে পালাতে সক্ষম হয়। সেখান থেকে বের হয়ে নক্ষত্রমণ্ডলকে লক্ষ্য করে পাহাড়ের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। অসংখ্যা রক্ষীদের এড়িয়ে, কাঁটা ঝোপঝাড়ের মধ্যে দিয়ে তারা পথ পাড়ি দিয়েছেন। এই পুরো সময়ে শিশুদের কাঁটা থেকে রক্ষা করতে কাপড়ে মুড়িয়ে নেওয়া, তাদের শান্ত রাখতে সকল চেষ্টা করেছে বয়স্করা।
দুই ঘণ্টা এই রুদ্ধশ্বাস যাত্রার পর ভোরের দিকে তারা একজন ব্যক্তিকে দেখতে পায়, যার কাছ থেকে ফোন নিয়ে তারা পুলিশ কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করে।
ক্রিশ্চিয়ান এইড মিনিস্ট্রিজ বলেন, মিশনারিদের পরে ইউএস কোস্ট গার্ডের ফ্লাইটে ফ্লোরিডায় পাঠানো হয়। তারা এখন তাদের পরিবারের সাথেই আছে।
পুলিশের মুখপাত্র গ্যারি ডেসরোজিয়াস এএফপি’র বরাতে জানায়, ‘৪০০ মাওউজো’ নামে পরিচিত এই গ্যাং এবং পুলিশের সাথে অনেকদিন যাবৎ আলোচনা চলছে।
পুরোবিশ্বে হাইতিতে অপহরণের হার সবচেয়ে বেশি, শক্তিশালী গ্যাং এর দাপটে সেখানে আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটছে। এ বছরে যা আরও চরম রূপ ধারণ করে, এ বছরের অক্টোবর অবধি ৮০০ টি অপহরণের ঘটনা ঘটে হাইতিতে। হাইতির এই দলবদ্ধ অপহরণের ঘটনা আন্তর্জাতিক দৃষ্টি আকর্ষণ করে আসছে বহুদিন ধরে।