চট্টগ্রাম থেকে: নাঈম হাসানের অভিষেক হওয়ার উজ্জ্বল সম্ভাবনা ছিল বছরের শুরুতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজেই। অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ খেলতে থাকা এ অফস্পিনারকে নিউজিল্যান্ড থেকে জরুরী তলবে নিয়ে আসা হয় চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে। রাখা হয় মূল স্কোয়াডের সঙ্গে।
তারও আগে ২০১৭ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজের আগে জাতীয় দলের অনুশীলনে নাঈমকে রেখেছিলেন তখনকার হেড কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে। তখন থেকেই সম্ভাবনাময় স্পিনার হিসেবে উচ্চারিত হচ্ছিল ‘নাঈম’ নামটি।
অপেক্ষায় থাকা নাঈম শেষঅবধি টেস্ট ক্যাপ পরার সুযোগ পেলেন ঘরের মাঠেই, তবে বছরের শেষভাগে এসে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে অভিষেক টেস্টে দলের বিপদের সময় খেলেছেন ৭৪ বলে ২৬ রানের প্রত্যয়ী ইনিংস। ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠা ক্যারিবীয় পেসার গ্যাব্রিয়েলকে সামলেছেন সাবলীলভাবে। পরে বল হাতে ছড়িয়েছেন দ্যুতি। অভিষেকে সবচেয়ে কম বয়সে ৫ উইকেট নিয়ে বিশ্বরেকর্ড গড়েছেন বন্দরনগরীর এ তরুণ।
ব্যাটসম্যান না হয়েও ২২ গজে যেভাবে ধৈর্য দেখিয়েছেন তা প্রশংসিত হচ্ছে সর্বত্র। বল হাতে মুগ্ধতা ছড়ানোর পর তো প্রশংসার ঝাঁপি খুলেছে। মূল কাজ তার বোলিংটাই। তবে দুটি ভূমিকাকে আলাদা করে দেখেন না নাঈম। ব্যাট হাতে নিলে ব্যাটসম্যান, বল হাতে নিলে বোলার। অলরাউন্ড নৈপুণ্য দেখানোর মনোভাবই বলে দেয় কতটা ইতিবাচক তিনি। ক্রিকেট মাঠে দায়িত্ব পালনে যে নিবিষ্ট পরীক্ষার্থী তিনি, সেটা উচ্চারিত হল নাঈমের কণ্ঠেই।
‘যখন ব্যাট হাতে নিয়ে নামবো তখন তো দায়িত্ব আমার। ব্যাটিং করতেও ভালো লাগছে। আবার যখন বল হাতে নিয়েছি, তখন বোলিংয়ের দায়িত্বও আমার। দুইটাই উপভোগ করেছি।’
১৭ বছর ৩৫৫ দিন বয়সে অভিষিক্ত নাঈম ৫ উইকেট শিকার করে নাম লিখিয়েছেন রেকর্ডের পাতায়। দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষে ড্রেসিংরুম থেকে সংবাদ সম্মেলন কক্ষে আসার পথে জেনেছেন নিজের রেকর্ড সম্পর্কে, ‘আসার পথে শুনেছি। আমি তো আমার নরমাল ক্রিকেট খেলেছি। আমার কোনো লক্ষ্য ছিল না ৫ উইকেট, ১০ উইকেট নিতে হবে। চেষ্টা করেছি প্রসেসটা অনুসরণ করতে।’
‘আর সাকিব ভাইয়ের সঙ্গে খেলতে ভালো লেগেছে। উনি অনেক সহযোগিতা করেছেন। আমাকে যেভাবে বোলিং করতে বলেছেন, সেভাবেই বোলিং করেছি।’ সাফল্য ছুঁয়ে এভাবেই অধিনায়ককেও ধন্যবাদ জানালেন নাঈম।