‘যুক্তরাষ্ট্র নর্থ কোরিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে’ বলে নর্থ কোরিয়া যে অভিযোগ করেছে তা অস্বীকার করেছে ওয়াশিংটন। মার্কিন বোমারু বিমান ভূপাতিত করার অধিকার তাদের রয়েছে– নর্থের এ বক্তব্যের জবাবে হোয়াইট হাউজ নর্থ কোরিয়াকে এ ধরণের উস্কানিমূলক বক্তব্য বন্ধ করতে বলেছে।
নর্থ কোরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী রি ইয়োং হো জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের পর সাংবাদিকদের বলেন, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নর্থ কোরিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন। পাল্টা ব্যবস্থায় মার্কিন বোমারু ও যুদ্ধবিমান গুলি করে ভূপাতিত করার অধিকার নর্থ কোরিয়ার রয়েছে বলেও সতর্ক করেন তিনি।
এর প্রতিক্রিয়ায় নর্থ কোরিয়ার অভিযোগ প্রত্যাখান করে একে ‘অযৌক্তিক’ বলেছে যুক্তরাষ্ট্র। নর্থ কোরিয়া উস্কানিমূলক কার্যক্রম বন্ধ না করলে সামরিক অভিযান চালানোর কথাও জানিয়েছে পেন্টাগন।
অন্যদিকে দু’দেশের মধ্যে চলমান উত্তেজনা দিন দিন বেড়েই চলেছে বলে সতর্ক করেছেন জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্টনিও গুতেরেস। মহাসচিবের মুখপাত্র বলেন, এ ধরণের উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় থেকে মারাত্মক ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হতে পারে। একমাত্র রাজনৈতিক সমাধানের মাধ্যমেই চলমান সংকট উত্তরণ সম্ভব।
এর আগে শনিবার রি ইয়োং জাতিসংঘে দেয়া ভাষণে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা অনিবার্য হয়ে পড়ছে। আর এর জবাবে টুইটারে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেছিলেন, নর্থ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট কিম জং উন ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী রি ইয়োং হো’র অস্তিত্ব আর বেশিদিন নেই।
এমন পরিস্থিতিতে গত কয়েকদিনের পাল্টাপাল্টি বাদানুবাদে এবার নর্থ কোরিয়ার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধ ঘোষণার অভিযোগ করেন নর্থ কোরীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, পুরো বিশ্বই দেখেছে যুক্তরাষ্ট্রই প্রথম যুদ্ধ ঘোষণা করেছে।
পিয়ংইয়াংয়ের এমন অভিযোগকে অবান্তর বলে মন্তব্য করে মার্কিন প্রেস সচিব সারাহ্ হাকাবি স্যান্ডার্স বলেন, আন্তর্জাতিক জলসীমায় আরেকটি দেশের বিমান ভূপাতিত করার সিদ্ধান্ত গ্রহণযোগ্য নয়। মার্কিন প্রশাসন দ্রুতই কোরীয় উপদ্বীপে আরো শক্তি বাড়াতে যাচ্ছে বলে জানান তিনি।
নর্থ কোরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে চলমান উত্তেজনা ভয়াবহ দিকে যাচ্ছে উল্লেখ করে সংকটের সমাধানে উভয়কেই আলোচনার আহ্বান জানিয়েছে চীন ও সাউথ কোরিয়া।
নর্থ কোরিয়া আরও উত্তেজনার সৃষ্টি করতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করে সাউথ কোরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী কং কিউং ওয়া বলেছেন, কূটনৈতিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সংকট সমাধানে এখনও সুযোগ রয়েছে।
দু’পক্ষকেই ঠাণ্ডা মাথায় প্রতিক্রিয়া জানাতে হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, যেকোন দুর্ঘটনা বা অসতর্কতামূলক সংঘর্ষ দ্রুতই পুরো এলাকায় ছড়িয়ে পড়তে পারে এবং নিয়ন্ত্রণের বাইরেও চলে যেতে পারে।