চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

নতুন সেনাপ্রধান আজিজ আহমেদ

নতুন সেনাবাহিনী প্রধান হচ্ছেন বিএ-২৪২৪ লেফটেন্যান্ট জেনারেল আজিজ আহমেদ বিজিবিএম, পিবিজিএম, বিজিবিএমএস পিএসসি, জি।

তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্ব গ্রহণ করবেন ২৬ জুন ২০১৮ তারিখে এবং বর্তমান সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আবু বেলাল মোহাম্মদ শফিউল হকের স্থলাভিষিক্ত হবেন।

২৫ জুন ২০১৮ তারিখে বর্তমান সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল বেলাল অবসরে যাবেন।

২৫ জুন ২০১৮ তারিখ বিকেলে থেকে জেনারেল পদে পদোন্নতি দিয়ে লেফটেন্যান্ট জেনারেল আজিজ আহমেদ বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রধান হিসেবে নিয়োগ প্রদান করেছে সরকার।

সোমবার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের গণভবন কমপ্লেক্স থেকে রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে যুগ্ম সচিব মো. আবু বকর সিদ্দিক স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

আজিজ আহমেদ দায়িত্বভার গ্রহণের পর পরবর্তী তিন বছরের জন্য সেনা বাহিনী প্রধানের দায়িত্ব পালন করবেন।

 

লেফটেন্যান্ট জেনারেল আজিজ আহমেদ, ১৯৬১ সালে চাঁদপুর জেলার মতলবের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা-মরহুম আব্দুল ওয়াদুদ এবং মাতা-রেনুজা বেগম। তার বাবা ওয়াদুদ আহমেদ বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর সাবেক কর্মকর্তা ছিলেন।

বর্তমানে লেফটেন্যান্ট জেনারেল আজিজ আহমেদ বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কোয়ার্টার মাস্টার জেনারেল (কিউএমজি) হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

২০১৮ সালের ৯ জানুয়ারি তারিখে কোয়ার্টার মাস্টার জেনারেল (কিউএমজি) হিসেবে নিয়োগ পান তিনি।

তৎপূর্বে ২০১৬ সালের নভেম্বর মাসে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বি জি বি) এর তৎকালীন মহাপরিচালক থেকে পদোন্নতি পেয়ে লেফটেন্যান্ট জেনারেল হিশেবে আর্মি ট্রেনিং অ্যান্ড ডকট্রিন কমান্ড (ARTDOC) এর জেনারেল অফিসার কমান্ডিং (জিওসি) হিসেবে নিয়োজিত হয়েছিলেন।

২০১২ সালের ৭ মে তারিখে তিনি মেজর জেনারেল পদে পদোন্নতি লাভ করেন এবং একই বছর ৫ ডিসেম্বর তারিখে বিজিবি’র মহাপরিচালক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন।

লেফটেন্যান্ট জেনারেল আজিজ ৮ম বিএমএ দীর্ঘমেয়াদী কোর্সের সাথে ১৯৮৩ সালের ১০ জুন তারিখে বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমি হতে পাসিং আউটের পর সেনাবাহিনীর আর্টিলারি কোরে কমিশনপ্রাপ্ত হন।

বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একজন চৌকষ অফিসার যিনি আর্টিলারি অফিসার্স বেসিক কোর্স সহ সেনাবাহিনীর বিভিন্ন কোর্সে প্রথম ও দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেন। তিনি পার্বত্য চট্টগ্রামে আর্টিলারি ব্রিগেডের জিএসও-৩ (অপারেশন), একটি পদাতিক ব্রিগেডের ব্রিগেড মেজর (বিএম), সেনাসদর প্রশিক্ষণ পরিদফতরের গ্রেড-২ স্টাফ এবং সেনাসদর, বেতন ও ভাতা পরিদফতরের গ্রেড-১ স্টাফ অফিসারের দায়িত্ব পালন করেছেন।

এছাড়াও তিনি আর্টিলারি সেন্টার এন্ড স্কুলে এবং স্কুল অফ মিলিটারি ইন্টেলিজেন্সতে (এসএমআই) প্রশিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।

লেফটেন্যান্ট জেনারেল আজিজ তার সুদীর্ঘ কর্ম জীবনে একটি আর্টিলারি ইউনিটের অধিনায়ক, একটি বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক, একটি বিজিবি সেক্টরের সেক্টর কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়াও তিনি স্বতন্ত্র এয়ার ডিফেন্স আর্টিলারি ব্রিগেডসহ মোট দুটি আর্টিলারি ব্রিগেডের কমান্ডার এবং একটি পদাতিক ডিভিশনের কমান্ডার হিসেবে দক্ষতার সঙ্গে কমান্ড সম্পন্ন করেছেন। তিনি মহাপরিচালক বিজিবি ছাড়াও জেনারেল অফিসার কমান্ডিং আর্টডক (ARTDOC) হিসেবে সফল দায়িত্ব পালন করেছেন।

আজিজ আহমেদ মোহাম্মদপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় হতে ১৯৭৫ সালে এসএসসি এবং ১৯৭৭ সালে এইচএসসি পাস করেন নটরডেম কলেজ থেকে। তিনি ১৯৮৩ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় হতে বিএ (পাস), ১৯৯৪ সালে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় হতে মাস্টর অব ডিফেন্স স্টাডিজ (এম ডি এস), ২০০৮ সালে এমএসসি (টেকনিক্যাল) এবং ২০০৮ সালে আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি ইন বাংলাদেশ (AIUB) থেকে মাস্টার্স ইন বিজনেস এডমিনিস্ট্রেশন (এমবিএ) সম্পন্ন করেন।

লেফটেন্যান্ট জেনারেল আজিজ ‎১৯৮৯-১৯৯০ সালে আর্টিলারি সেন্টার ও স্কুল, হালিশহর, চট্টগ্রাম হতে অফিসার্স গানারী স্টাফ কোর্স এবং ‎১৯৯২-১৯৯৩ সালে ভারতের স্কুল অফ আর্টিলারি, দেওলালী হতে লং গানারী স্টাফ কোর্স (ফিল্ড) সম্পন্ন করেন। এরপর তিনি মিরপুর ডিফেন্স সার্ভিস কমান্ড এন্ড স্টাফ কলেজ থেকে ‎১৯৯৪-১৯৯৫ সালে সাফল্যের সঙ্গে আর্মি ষ্টাফ কোর্স-১৯ সম্পন্ন করেন। তিনি জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের অধীনে ‎১৯৯৫-১৯৯৬ সালে ইরাক-কুয়েত এ সামরিক পর্যবেক্ষক এবং ‎২০০৫-২০০৬ সালে সুদানে জাতিসংঘ মিশনে ফোর্স কমান্ডার এর সামরিক উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।

তার স্ত্রী বেগম দিলশাদ নাহার আজিজ একজন গৃহিনী। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি তিন পুত্র সন্তানের জনক। খেলাধূলা প্রিয় জেনারেল আজিজ গলফে বিশেষ উৎসাহী। অবসরে তিনি বই পড়েন।