ধরাবাঁধা পরিকল্পনার বাইরে ভাবলেন না বাংলাদেশ অধিনায়ক মাশরাফি। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে দিয়ে একটি ওভারও বল করালেন না তিনি, দুই ওভারের পর সাব্বিরের উপরও আর ভরসা রাখলেন না।
অথচ আহমেদ শেহজাদ খুনোখুনি পুরোটা যেনো শেষ করতে না পারেন সে ব্যবস্থা সাব্বিরই করে দিয়েছেন শেহজাদকে রিয়াদের ক্যাচ বানিয়ে। সেই রিয়াদ শহিদ আফ্রিদির ক্যাচও তালুবন্দী করেছেন। কিন্তু, বল ঘুরিয়েও যে তিনি উইকেট দখল করতে পারতেন; আর উইকেট না পেলেও অন্ততঃ রানের চাকা যে আটকে রাখতে পারতেন ভুলেও মাশরাফির তা মনে হয়নি।
রিয়াদের মতো সাব্বির অতোটা বাইরে থাকেননি মাশরাফির বোলিং পরিকল্পনা থেকে। দুই ওভার বল করে মাত্র ১১ রান দিয়েছেন। অথচ, তার বাকি দুটি না হলেও অন্ততঃ আর একটি ওভার করিয়ে মাশরাফি তাকে কমপক্ষে তিন ওভার বল করার সুযোগ দিতেই পারতেন।
মাশরাফি নিজে অবশ্য নিজের কোটা পূরণ করেননি। তিন ওভারেই থেমে গেছেন অধিনায়ক। তাতেই অবশ্য ৪১ রান দিয়েছেন, থেকেছেন উইকেটশূন্যও।
মাশরাফির চেয়েও বেশি রান দিয়েছেন সদ্য সমাপ্ত এশিয়া কাপে সবচেয়ে বেশি উইকেট নেওয়া আল আমিন হোসেন। তিন ওভার বল করে ৪৩ রান দিয়ে তিনিও উইকেটশূন্য।
তুলনায় অনেক ভালো করেছেন মাত্রই ধর্মশালা থেকে চেন্নাই উড়ে গিয়ে বোলিং অ্যাকশনের পরীক্ষা দিয়ে কলকাতায় ছুটে আসা তাসকিন আহমেদ। চার ওভারে তার খরচ ৩২ রান, তাও ২০ এসেছে শেষের দুই ওভারে। আফ্রিদিকে ৪৯ রানে থামিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি উমর আকমলকে শূন্য রানে ফিরিয়ে দুই উইকেট নিয়েছেন তাসকিন।
তার মতোই দুই উইকেট নিয়েছেন বোলিং অ্যাকশনের পরীক্ষা দিয়ে আসা আরেক বোলার আরাফাত সানী। তাসকিনের চেয়ে দুই রান বেশি দিয়েছেন, অর্থাৎ ৩৪ রান দিয়ে সারজিল খান এবং মোহাম্মদ হাফিজের উইকেট দখলে নিয়েছেন তিনি।
তবে যার উপর সবচেয়ে বেশি ভরসা ছিলো, কলকাতা নাইটরাইডার্সের হোমগ্রাউন্ড ইডেনে তিনিই হতাশ করেছেন সবচেয়ে বেশি। আগের ম্যাচেই ওমানের সঙ্গে চার উইকেট নেওয়া সাকিব আল হাসান চার ওভার বল করে উইকেটশূন্য থেকেছেন। ৩৯ রানও দিয়েছেন সাকিব।
শুধু সাকিব নন, সাব্বির ছাড়া সকল বোলারই এদিন খরুচে ছিলেন প্রচণ্ড। কারণও অজানা নয়। হাফভলি, শর্ট, অন দ্যা লেগ বল করে গেছেন বাংলাাদেশের বোলাররা। যে আফ্রিদি লেগ সাইডের ব্যাটসম্যান তাকে রাউন্ড দ্যা উইকেট বলও করা হয়েছে।
শেষ পর্যন্ত আফ্রিদিকে ৪৯ রানে তাসকিন ফিরিয়ে দেওয়ায় মাশরাফি এ ভেবে স্বস্তি পেতে পারেন যে ২০১২ সালের পর যে আফ্রিদি আর ফিফটি পাননি, সে আফ্রিদি বাংলাদেশের সঙ্গে অর্ধশতকশূন্যই থেকেছেন। এ ভেবেও মাশরাফি স্বস্তি পেতে পারেন যে পাকিস্তানের পক্ষে দ্রুততম ফিফটির রেকর্ডটিও আফ্রিদি করতে পারেননি।
তবে শুরু থেকে শেষ পর্য়ন্ত ফিল্ডাররা চার-ছয় হতে দেখে হয়তো শুধু ভেবেছেন তাদের কাজটা আসলে কী!