সিলেটের সবজি বিক্রেতা শিশু শেখ সামিউল আলম রাজন হত্যা মামলায় চার জনের মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে হাইকোর্টের দেয়া রায়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন রাজনের বাবা শেখ মো: আজিজুর রহমান।
রায় ঘোষণার পর এক প্রতিক্রিয়ায় তিনি চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, ‘এ রায়ে আমি সন্তুষ্ট। আমি ন্যায় বিচার পেয়েছি। তাই বিচারকদের ধন্যবাদ। এবার খুনিদের দ্রুত ফাঁসি কার্যকর হওয়া দেখতে চাই।’
শেখ সামিউল আলম রাজন হত্যা মামলায় বিচারিক আদালতের দেয়া চার জনকে মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে মঙ্গলবার রায় দেন হাইকোর্ট।
বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন ও বিচারপতি মো. জাহাঙ্গীর হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এই রায় ঘোষণা করেন।
রায়ে মৃত্যুদণ্ড বহাল থাকে কামরুল ইসলাম, ময়না চৌকিদার, তাজউদ্দিন আহমদ বাদল ও জাকির হোসেন পাভেলের।
বিচারিক রায়ে আদালতে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রাপ্ত নূর মিয়ার সাজা কমিয়ে ৬ মাসের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। এছাড়া মুহিত আলম, আলী হায়দার ও শামীম আহমদকে (পলাতক) বিচারিক আদালতের দেয়া সাত বছর করে কারাদণ্ড এবং দুলাল আহমদ ও আয়াজ আলীকে এক বছর করে দেয়া কারাদণ্ড বহাল রাখলেন হাইকোর্ট।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল জহিরুল হক জহির। আর আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী এস এম আবুল হোসেন, বেলায়েত হোসেন, শাহরিয়ায় ও শহিদ উদ্দিন চৌধুরী। পলাতক এক আসামির পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত হিসেবে ছিলেন আইনজীবী হাসনা বেগম।
গত ১২ মার্চ এই মামলায় ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যুদণ্ড অনুমোদন) ও আসামিদের করা আপিলের শুনানি শেষ হলে হাইকোর্ট ১১ এপ্রিল রায়ের জন্য দিন ধার্য করেন।
২০১৫ সালের ৮ জুলাই সিলেটের কুমারগাঁওয়ে চুরির অভিযোগ তুলে শিশু রাজনকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। পরে হত্যাকারীরাই সেই নির্যাতনের ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেয়। এঘটনায় দেশজুড়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়।
পরে ওই বছরের ১৬ আগস্ট ১৩ জনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। একই বছরের ৮ নভেম্বর বিচারিক আদালতের দেয়া রায়ে ১০ আসামিকে দণ্ডিত করা হয়। যাদের মধ্যে কামরুল ইসলাম, ময়না চৌকিদার, তাজউদ্দিন আহমদ বাদল ও জাকির হোসেন পাভেল আহমদের ফাঁসির আদেশ হয়।
কামরুলের সহযোগী নূর মিয়াকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং কামরুলের তিন ভাই মুহিত আলম, আলী হায়দার ও শামীম আহমদকে (পলাতক) সাত বছর করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এক বছর করে দণ্ড হয় দুলাল আহমদ ও আয়াজ আলীর।
বিচারিক আদালতের রায়ের পর পলাতক পাভেল আহমেদ ছাড়া মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত অপর তিন আসামি হাইকোর্টে আপিল ও জেল আপিল করেন। এ ছাড়া আপিল করেন যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত নূর মিয়া।